সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মাঠ যেমন মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত

জসিম উদ্দিন, হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠে মাঠে হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষা ফুল। দূর থেকে সরিষার ক্ষেতগুলো দেখে মনে হয়, কে যেন হলুদ চাদর বিছিয়ে রেখেছে। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত যেমন মাঠ, তেমনি বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।

এদিকে, ফসলের মাঠে ফোটা ফলগুলো রোদ ঝলমল আলোয় প্রকৃতির মাঝে অপরূপ সৌন্দর্যের শোভা ছড়াচ্ছে। তেমনি সরিষার হলুদ রাজ্য দেখতে ভিড় করছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। একই সঙ্গে শীতের কুয়াশাকে উপেক্ষা করে চাষীরা সরিষা ক্ষেতের যত্ন নিচ্ছেন। সরিষা ক্ষেতগুলো সেজেছে হলুদ রঙে। সবুজের বুকে হলুদ রঙ মেখে বেড়ে উঠছে এ উপজেলার কৃষকদের স্বপ্ন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় চলতি বৎসর লাখাইয়ে সরিষা চাষাবাদের এর লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৩২০ হেক্টর। বৈরী আবহাওয়ার কারণে চাষাবাদ হয়েছে ১ হাজার ৬০ হেক্টর জমি। যা গত বছরের চেয়ে ২৬০ হেক্টর কম। আবাদকৃত জমিতে বারি সরিষা- ১৪,১৭, ১৮ বিনা- ০৯, ১১ ইত্যাদি জাতের সরিষা চাষ করা হয়েছে। ধান ও অন্য ফসলের তুলনায় সরিষার আবাদ লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা দিনদিন সরিষা চাষে ঝুঁকছেন।

অন্যদিকে স্থানীয় কৃষি বিভাগ ৯৫০ জন কৃষককে প্রনোদনার মাধ্যমে বিনামুল্যে ১কেজি করে সরিষা বীজ, ১০ কেজি এমওপি, ডিএপি সার দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে নতুন নতুন জাত সম্প্রসারণ করা হয়েছে বলে জানাগেছে। ৯ (জানুয়ারি) বৃহস্পতিবার উপজেলার করাব, মুড়িয়াউক, মোড়াকরি, বামৈ ইউনিয়ন এর বিভিন্ন মাঠে সরেজমিন পরিদর্শন কালে সরিষার ফলন দেখে চোখ জুরিয়ে গিয়েছিল। বিস্তীর্ণ মাঠে যেন হলুদ সাজে বেড়ে উঠছে কৃষকের স্বপ্ন।

মাঠে সরেজমিনে কৃষক মহন মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি এ বছর আমার ২ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। আশাকরি ফলন ভালো হবে। গুনিপুর গ্রামের এক কৃষক বলেন, এবছর আমার ৪/৫বিগা জমিতে সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে আশাবাদী। বীজ বপনের দুই মাসের মধ্যেই সরিষা ঘরে উঠে আসে। সরিষা উঠিয়ে ধান চাষ করতে কোনো সমস্যা হয় না এবং ধানের ফলনেও কোনো প্রভাব পড়ে না। তার মতে সরিষার আবাদ করা মানেই অতিরিক্ত লাভের মুখ দেখা। একইভাবে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন অসংখ্য কৃষক। আশার আলো দেখে তাঁরা উল্লাসিত।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহমুদুল হাসান মিজান বলেন, সরিষার আবাদের শুরুতে টানা দুইবারের বৃষ্টিপাতের ফলে এ বছর সরিষা কাঙ্কিত আবাদ ও ফলন নিয়ে শংকায় ছিলাম। তবে শেষের দিকে কৃষকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে সফলতা এসেছে। আশাবাদী উপজেলার কৃষকেরা খুবই পরিশ্রমী। তাই চাষের লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে আবাদ কম হলেও ফলন আশানুরূপ হওয়ার সম্ভাবণা রয়েছে। এছাড়াও জমির অবস্থানুযায়ী কৃষকদের সঠিক মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

প্রলয় ডেস্ক

Recent Posts

জিয়াউর রহমান এক দূরদর্শী নেতা ও দেশ গঠনের রূপকার: মোহাম্মদ মাসুদ

জিয়াউর রহমান, বাংলাদেশের একজন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, যিনি ১৯৩৬ সালের ১৯…

12 hours ago

ভালুকায় ইয়াবাসহ ৪ মাদক কারবারি গ্রেফতার

এস.এম ফিরোজ আহমেদ, ভ্রাম্যমাণ সংবাদদাতা ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় ভালুকা…

16 hours ago

রোহিঙ্গা ইস্যুতে চলতি বছরই ৩টি আন্তর্জাতিক সম্মেলন: প্রধান উপদেষ্টা

সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, চলতি বছরই রোহিঙ্গা ইস্যুতে চলতি…

17 hours ago

এদেশে সবার অধিকার সমান, ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ থাকবে না: সেনাপ্রধান

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শনিবার রাজধানীর পলাশী মোড়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শোভাযাত্রা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বললেন,…

17 hours ago

ইসলামী জোটে নির্বাচনে অংশ নেবে খেলাফত আন্দোলন

আগামী নির্বাচনে ইসলামী দলগুলো নীতিগতভাবে ঐক্যবদ্ধ হলে তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ…

17 hours ago

জামায়াত ও এনসিপির মতো কিছু গোষ্ঠী চায় না দেশে নির্বাচন হোক: দুলু

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, ‘আগামী…

17 hours ago

This website uses cookies.