মোঃ আব্দুস ছালিক
বাংলাদেশের রাজনীতি এক সময় ন্যায়, নীতি ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ছিল। কিন্তু আজ আমরা যে রাজনীতি দেখি, সেখানে নৈতিকতার সংকট প্রকটভাবে প্রতিভাত হচ্ছে। রাজনীতি ক্রমেই ব্যক্তিস্বার্থ, সুবিধাবাদ ও ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়েছে। এর ফলে প্রকৃত নীতিবান কর্মীরা রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে, আর রাজনীতি হারিয়েছে জনআস্থা।
নৈতিকতা সংকটের কারণ
এক সময়ের সেবামূলক রাজনীতি আজ ক্ষমতা কেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। ক্ষমতার কাছাকাছি এলেই সুবিধাবাদীরা রাজনীতিতে যুক্ত হয়। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা এবং সন্ত্রাসের মতো কর্মকাণ্ড রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠে। এর ফলে দলের ভেতরে নৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড়ানো প্রকৃত কর্মীরা উপেক্ষিত হয়। সুবিধাবাদী কর্মীদের প্রভাব রাজনীতিকে আরও দূষিত করে তুলছে।
আমরা দেখেছি, যখন কোনো দল ক্ষমতায় থাকে তখন দলে ভিড় করে সুবিধাবাদীরা। অথচ সেই দল ক্ষমতা হারালে তারা দল ছেড়ে যায়। এ চিত্র যেকোনো বড় রাজনৈতিক দলে দেখা যায়। নৈতিকতা যেখানে হারায়, সেখানে রাজনীতি আর জনসেবার জায়গা থাকে না, বরং হয় স্বার্থসিদ্ধির মাধ্যম।
এর প্রভাবঃ
নীতিহীন রাজনীতি দেশে গণতন্ত্রকে দুর্বল করে। কর্মীর সংকট দেখা দেয়, বিশেষ করে আন্দোলনের সময়। রাজনীতি হয়ে পড়ে অর্থ ও শক্তির খেলা। জনগণের আস্থা নষ্ট হয়; রাজনীতিকে তারা ঘৃণার চোখে দেখতে শুরু করে। এ অবস্থা বদলাতে না পারলে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হবে।
করণীয়ঃ
* শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা নিশ্চিত করতে হবে
দলীয় গঠনতন্ত্রে শৃঙ্খলা জোরদার করতে হবে। চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দলীয় ও আইনগত শাস্তি দিতে হবে এবং সেটি প্রকাশ করতে হবে।
* নৈতিক নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে
ছাত্র, যুব ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনগুলোতে নৈতিকতা ও জনসেবার ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ চালু করতে হবে।
* ভোগ-বিলাসের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।
রাজনীতি হতে হবে আত্মত্যাগের চর্চা। মিছিল-মিটিং শেষে ভোগ-বিলাস, অপচয় বা অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।
* জনসেবাকে রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য করতে হবে
রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত জনসেবামূলক প্রকল্প গ্রহণ করা—যেমন শিক্ষা সহায়তা, স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য সহায়তা ইত্যাদি।
* দলীয় পদে সুযোগসন্ধানী নয়, প্রকৃত আদর্শিকদের মূল্যায়ন করতে হবে
যারা ক্ষমতার বাইরে থেকেও দলের জন্য কাজ করে, তাদেরই নেতৃত্বে আনতে হবে।
* জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে
নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতিমুক্ত ও নীতিনিষ্ঠ রাজনীতির অঙ্গীকার স্পষ্ট করতে হবে।
উপসংহারঃ
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নৈতিকতা ফিরিয়ে আনাই সময়ের দাবি। রাজনীতি হতে হবে জনকল্যাণের জন্য, সুবিধাবাদ ও দুর্নীতির জন্য নয়। নৈতিক রাজনীতি চর্চার মাধ্যমে জনগণের আস্থা পুনর্গঠন করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে সবার আগে সৎ, সাহসী ও নীতিনিষ্ঠ নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে হবে—তবেই রাজনীতি তার প্রকৃত মর্যাদা ফিরে পাবে।
লেখক : অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
প্রলয়/নাদিয়া ইসলাম
এস.এম ফিরোজ আহমেদ, ভ্রাম্যমাণ সংবাদদাতা ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় ভালুকা…
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, চলতি বছরই রোহিঙ্গা ইস্যুতে চলতি…
সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শনিবার রাজধানীর পলাশী মোড়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শোভাযাত্রা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বললেন,…
আগামী নির্বাচনে ইসলামী দলগুলো নীতিগতভাবে ঐক্যবদ্ধ হলে তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ…
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, ‘আগামী…
আগামী নির্বাচনে কেউ ভোট ডাকাতি বা কারচুপি করতে আসলে তা প্রতিহত করার প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান…
This website uses cookies.