ঢাকা ০৬:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ঢাকাইয়া রূপে আসছে ‘দেবদাস’, বুবলী–আজাদ জুটি নিয়ে জাহিদ হোসেনের নতুন আয়োজন কুমিল্লায় বিএনপির উদ্যোগে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন মোরেলগঞ্জে বিষখালী নদীর সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে যান চলাচল বন্ধ শাল্লায় ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালিত দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারই আমাদের মূল লক্ষ্য- সেলিমুজ্জামান সেলিম কেন্দুয়ায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত জিয়া ছিলেন সকল রাজনৈতিক সংগঠনের অভিন্ন চরিত্র: ইবি উপাচার্য মোরেলগঞ্জে ঐতিহাসিক ৭ই নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির বর্ণাঢ্য র‌্যালি বগুড়ায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপ প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবেঃ কর্নেল লুৎফর

চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন ঠেকাতে প্রাকৃতিক বাঁধ

মোঃ জাফর আহমেদ, কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদ্তাঃ
  • আপডেট সময় : ০১:৪১:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৫৯ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্র নদের ভয়াবহ ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ফসলি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নদী তীরবর্তী মানুষ প্রতিনিয়ত হারাচ্ছেন তাদের জীবিকা ও নিরাপত্তা। অথচ বছরজুড়ে সরকারি প্রকল্প কিংবা স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কার্যকর উদ্যোগের দেখা মেলে না। ফলে হতাশা, আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তা তাদের নিত্যসঙ্গী। তবে এবার কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের খেরুয়ার চরের বাসিন্দারা গড়েছেন এক ব্যতিক্রম দৃষ্টান্ত। সরকারি সহায়তার অপেক্ষা না করে নিজেদের টাকায় ও শ্রমে তারা ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে গড়ে তুলছেন একটি ‘প্রাকৃতিক বাঁধ’। তাদের বিশ্বাস-এই উদ্যোগ অন্তত কিছুটা হলেও নদীভাঙন ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

জানা গে‌ছে, খেরুয়ার চরে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কলাগাছ, কাশফুল ও কলমি গাছের চারা রোপণ করে গড়ে তোলা হয় প্রাকৃতিক বাঁধের প্রাথমিক স্তর। স্থানীয়দের ধারণা, এসব গাছের বিস্তৃত শিকড় মাটিকে আঁকড়ে ধরে নদীর তীর শক্ত করবে, যা সময়ের সঙ্গে ভাঙন প্রতিরোধে প্রাকৃতিক এক বাঁধ হিসেবে কাজ করবে।

নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙনে বজরা দিয়ারখাতা, দক্ষিণ খাউরিয়ার চর ও ফেইচকা এলাকার অন্তত ১০০ পরিবার সর্বস্ব হারিয়েছে। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি ও গাছপালা। এখন ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে আশ্রয়ন প্রকল্প, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অসংখ্য স্থাপনা।

খেরুয়ার চরের বাসিন্দা দুলাল জোয়াদ্দার, আনোয়ার হোসেন, আব্দুল করিম ও নুর হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছর ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে যাই। বাড়ি হারিয়ে অন্যের জমিতে আশ্রয় নিতে হয়। তাই এবার অপেক্ষা না করে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়েছি। গাছ লাগালে অন্তত কিছুটা ভাঙন রোধ হবে-এই বিশ্বাস থেকেই আমরা গাছ লাগাচ্ছি।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য সানোয়ার হোসেন জানান, ভাঙনের ঝুঁকি কমাতে এর আগেও এলাকাবাসী এমন উদ্যোগ নেয়। তবে এবার অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বেশি এবং কাজটি অনেকটা সংগঠিতভাবে হয়েছে। আশা করছি এর সুফল পাওয়া যাবে।

ত‌বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদের বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র নদের গভীরতা হিসেবে এ ধরণের উদ্যোগ তেমন কোনো কাজে আসবে না। কেনো না একটি গাছের শিকর ২-৩ বছরে সবোর্চ্চ এক থেকে দুই ফুট হবে। ব্রহ্মপুত্র নদের ভিতরে দ্বীপচর হওয়ায় ভাঙন রোধে আপাতত সেখানে কোনো প্রকল্প হাতে নেই।

উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) সবুজ কুমার বসাক বলেন, এটি ভালো উদ্যোগ। আমরা সরকারিভাবেও বিভিন্ন জায়গায় গাছ লাগাচ্ছি। ব্যক্তি বা বে-সরকারি পর্যায়েও গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করছি। 

নিউজটি শেয়ার করুন

চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন ঠেকাতে প্রাকৃতিক বাঁধ

আপডেট সময় : ০১:৪১:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিবছর ব্রহ্মপুত্র নদের ভয়াবহ ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ফসলি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নদী তীরবর্তী মানুষ প্রতিনিয়ত হারাচ্ছেন তাদের জীবিকা ও নিরাপত্তা। অথচ বছরজুড়ে সরকারি প্রকল্প কিংবা স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কার্যকর উদ্যোগের দেখা মেলে না। ফলে হতাশা, আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তা তাদের নিত্যসঙ্গী। তবে এবার কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের খেরুয়ার চরের বাসিন্দারা গড়েছেন এক ব্যতিক্রম দৃষ্টান্ত। সরকারি সহায়তার অপেক্ষা না করে নিজেদের টাকায় ও শ্রমে তারা ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে গড়ে তুলছেন একটি ‘প্রাকৃতিক বাঁধ’। তাদের বিশ্বাস-এই উদ্যোগ অন্তত কিছুটা হলেও নদীভাঙন ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

জানা গে‌ছে, খেরুয়ার চরে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কলাগাছ, কাশফুল ও কলমি গাছের চারা রোপণ করে গড়ে তোলা হয় প্রাকৃতিক বাঁধের প্রাথমিক স্তর। স্থানীয়দের ধারণা, এসব গাছের বিস্তৃত শিকড় মাটিকে আঁকড়ে ধরে নদীর তীর শক্ত করবে, যা সময়ের সঙ্গে ভাঙন প্রতিরোধে প্রাকৃতিক এক বাঁধ হিসেবে কাজ করবে।

নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙনে বজরা দিয়ারখাতা, দক্ষিণ খাউরিয়ার চর ও ফেইচকা এলাকার অন্তত ১০০ পরিবার সর্বস্ব হারিয়েছে। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি ও গাছপালা। এখন ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে আশ্রয়ন প্রকল্প, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অসংখ্য স্থাপনা।

খেরুয়ার চরের বাসিন্দা দুলাল জোয়াদ্দার, আনোয়ার হোসেন, আব্দুল করিম ও নুর হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছর ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে যাই। বাড়ি হারিয়ে অন্যের জমিতে আশ্রয় নিতে হয়। তাই এবার অপেক্ষা না করে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়েছি। গাছ লাগালে অন্তত কিছুটা ভাঙন রোধ হবে-এই বিশ্বাস থেকেই আমরা গাছ লাগাচ্ছি।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য সানোয়ার হোসেন জানান, ভাঙনের ঝুঁকি কমাতে এর আগেও এলাকাবাসী এমন উদ্যোগ নেয়। তবে এবার অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বেশি এবং কাজটি অনেকটা সংগঠিতভাবে হয়েছে। আশা করছি এর সুফল পাওয়া যাবে।

ত‌বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদের বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র নদের গভীরতা হিসেবে এ ধরণের উদ্যোগ তেমন কোনো কাজে আসবে না। কেনো না একটি গাছের শিকর ২-৩ বছরে সবোর্চ্চ এক থেকে দুই ফুট হবে। ব্রহ্মপুত্র নদের ভিতরে দ্বীপচর হওয়ায় ভাঙন রোধে আপাতত সেখানে কোনো প্রকল্প হাতে নেই।

উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) সবুজ কুমার বসাক বলেন, এটি ভালো উদ্যোগ। আমরা সরকারিভাবেও বিভিন্ন জায়গায় গাছ লাগাচ্ছি। ব্যক্তি বা বে-সরকারি পর্যায়েও গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করছি।