ঢাকা ০৬:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ঢাকাইয়া রূপে আসছে ‘দেবদাস’, বুবলী–আজাদ জুটি নিয়ে জাহিদ হোসেনের নতুন আয়োজন কুমিল্লায় বিএনপির উদ্যোগে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন মোরেলগঞ্জে বিষখালী নদীর সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে যান চলাচল বন্ধ শাল্লায় ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালিত দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারই আমাদের মূল লক্ষ্য- সেলিমুজ্জামান সেলিম কেন্দুয়ায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত জিয়া ছিলেন সকল রাজনৈতিক সংগঠনের অভিন্ন চরিত্র: ইবি উপাচার্য মোরেলগঞ্জে ঐতিহাসিক ৭ই নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির বর্ণাঢ্য র‌্যালি বগুড়ায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপ প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবেঃ কর্নেল লুৎফর

ঈশ্বরগঞ্জের পিআইওর বিরুদ্ধে প্রতি প্রকল্পে ২৫% ঘুষের অভিযোগ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১১:৫১:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১০১ বার পড়া হয়েছে

ইউপি চেয়ারম্যানদের সংবাদ সম্মেলনে নানা অনিয়মের অভিযোগ, অভিযুক্ত কর্মকর্তার দাবি—সবই মিথ্যা

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোহাম্মদ রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ঘুষ আদায়, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানরা।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঈশ্বরগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ১১টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা এ অভিযোগ করেন। এর আগে তাঁরা বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সরিষা ইউপি চেয়ারম্যান একরাম হোসেন ভুঁইয়া।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, পিআইও রেজাউল করিম ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা-কাবিটা) প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম করেছেন। প্রকল্পগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হওয়ার পরও বিল প্রদান না করে তিনি প্রতিটি প্রকল্পের বিপরীতে ২৫ শতাংশ ঘুষ দাবি করেন। বাধ্য হয়ে প্রকল্প সভাপতি ও চেয়ারম্যানদের ওই টাকা নগদে পরিশোধ করতে হয়।

এ ছাড়া অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ভ্যাট ও আয়করের নাম করে তিনি প্রতিটি প্রকল্পের বিল থেকে ১৫ শতাংশ (১০% ভ্যাট ও ৫% আয়কর) কেটে নেন, যা সরকারি হিসাবে জমা না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেন। উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব অর্থ সরকারি খাতে জমা হয়নি।

চেয়ারম্যানদের দাবি, প্রকল্পের বিল জমা দেওয়ার সময় “বিল-ভাউচার ও মাস্টাররোল সমন্বয়” বাবদ প্রতি প্রকল্প থেকে তিন হাজার টাকা করে আদায় করেন পিআইও, যা মোট কয়েক লাখ টাকায় দাঁড়ায়। তাঁরা অভিযোগ করেন, রেজাউল করিমের আচরণও কর্মকর্তাসুলভ নয়—তিনি সব সময় উত্তেজিত থাকেন এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবু হানিফা, উচাখিলা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হাসান খান, আঠারবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জুবের আলম কবির, মগটুলা ইউপি চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন আকন্দ, মাইজবাগ ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলামসহ অন্যরা।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পিআইও মোহাম্মদ রেজাউল করিম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,

> “আমার বিরুদ্ধে যা বলা হচ্ছে, সবই মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রকল্পের তালিকা তৈরির সময় ইউএনও ও চেয়ারম্যানরা মিটিং ছাড়াই আমাকে স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি সময় নিয়ে প্রকল্পগুলোর বাস্তবতা যাচাই করতে চাই। এতে তাঁদের ক্ষোভ জন্মায়। মাঠে গিয়ে দেখি কিছু প্রকল্পে ত্রুটি আছে, সেটি জানানোয় চেয়ারম্যানরা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন।”

অন্যদিকে, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা রহমান বলেন,

> “পিআইওর বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রকল্পগুলোর ৮০ ভাগ চেয়ারম্যানরা দিয়েছেন, বাকি ২০ ভাগ আমি দিয়েছি। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মাঠ পরিদর্শনেও কোনো ভুয়া প্রকল্প পাননি।”

চেয়ারম্যানরা দাবি করেছেন, পূর্ববর্তী অর্থবছরে ভ্যাট-আয়করের নাম করে টাকা কেটে নেওয়া হলেও তা সরকারি খাতে জমা হয়নি। তাঁরা দ্রুত তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

ঈশ্বরগঞ্জের পিআইওর বিরুদ্ধে প্রতি প্রকল্পে ২৫% ঘুষের অভিযোগ

আপডেট সময় : ১১:৫১:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

ইউপি চেয়ারম্যানদের সংবাদ সম্মেলনে নানা অনিয়মের অভিযোগ, অভিযুক্ত কর্মকর্তার দাবি—সবই মিথ্যা

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোহাম্মদ রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ঘুষ আদায়, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানরা।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঈশ্বরগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ১১টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা এ অভিযোগ করেন। এর আগে তাঁরা বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সরিষা ইউপি চেয়ারম্যান একরাম হোসেন ভুঁইয়া।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, পিআইও রেজাউল করিম ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা-কাবিটা) প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম করেছেন। প্রকল্পগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হওয়ার পরও বিল প্রদান না করে তিনি প্রতিটি প্রকল্পের বিপরীতে ২৫ শতাংশ ঘুষ দাবি করেন। বাধ্য হয়ে প্রকল্প সভাপতি ও চেয়ারম্যানদের ওই টাকা নগদে পরিশোধ করতে হয়।

এ ছাড়া অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ভ্যাট ও আয়করের নাম করে তিনি প্রতিটি প্রকল্পের বিল থেকে ১৫ শতাংশ (১০% ভ্যাট ও ৫% আয়কর) কেটে নেন, যা সরকারি হিসাবে জমা না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেন। উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব অর্থ সরকারি খাতে জমা হয়নি।

চেয়ারম্যানদের দাবি, প্রকল্পের বিল জমা দেওয়ার সময় “বিল-ভাউচার ও মাস্টাররোল সমন্বয়” বাবদ প্রতি প্রকল্প থেকে তিন হাজার টাকা করে আদায় করেন পিআইও, যা মোট কয়েক লাখ টাকায় দাঁড়ায়। তাঁরা অভিযোগ করেন, রেজাউল করিমের আচরণও কর্মকর্তাসুলভ নয়—তিনি সব সময় উত্তেজিত থাকেন এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবু হানিফা, উচাখিলা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হাসান খান, আঠারবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জুবের আলম কবির, মগটুলা ইউপি চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন আকন্দ, মাইজবাগ ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলামসহ অন্যরা।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পিআইও মোহাম্মদ রেজাউল করিম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,

> “আমার বিরুদ্ধে যা বলা হচ্ছে, সবই মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রকল্পের তালিকা তৈরির সময় ইউএনও ও চেয়ারম্যানরা মিটিং ছাড়াই আমাকে স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি সময় নিয়ে প্রকল্পগুলোর বাস্তবতা যাচাই করতে চাই। এতে তাঁদের ক্ষোভ জন্মায়। মাঠে গিয়ে দেখি কিছু প্রকল্পে ত্রুটি আছে, সেটি জানানোয় চেয়ারম্যানরা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন।”

অন্যদিকে, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা রহমান বলেন,

> “পিআইওর বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রকল্পগুলোর ৮০ ভাগ চেয়ারম্যানরা দিয়েছেন, বাকি ২০ ভাগ আমি দিয়েছি। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মাঠ পরিদর্শনেও কোনো ভুয়া প্রকল্প পাননি।”

চেয়ারম্যানরা দাবি করেছেন, পূর্ববর্তী অর্থবছরে ভ্যাট-আয়করের নাম করে টাকা কেটে নেওয়া হলেও তা সরকারি খাতে জমা হয়নি। তাঁরা দ্রুত তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।