বাংলাদেশি পাসপোর্টের মানে বড় ধস: সূচকে ১০০তম অবস্থান
- আপডেট সময় : ১১:২৮:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
- / ৩৭ বার পড়া হয়েছে
প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় পাসপোর্টের মানে অনেক পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। চলতি বছরের বৈশ্বিক পাসপোর্ট সূচকে (Henley Passport Index 2025) ১০৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম। বাংলাদেশের নিচে রয়েছে মাত্র ৬টি দেশ। এমনকি নানা নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত উত্তর কোরিয়াও বাংলাদেশের সঙ্গে একই অবস্থানে রয়েছে।
গত বছরের শুরুতে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৯৭তম। এক বছরে তিন ধাপ পিছিয়েছে দেশটি। বর্তমানে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়া মাত্র ৩৮টি দেশে ভ্রমণ করতে পারেন, যেখানে এক বছর আগেও এই সংখ্যা ছিল ৪২।
একই সূচকে প্রতিবেশী দেশগুলোর অবস্থান বাংলাদেশের চেয়ে তুলনামূলক ভালো। মিয়ানমার ৯৬তম, ভুটান ৯২তম, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ ৯৮তম এবং ভারত রয়েছে ৮৫তম স্থানে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়া ১২তম, থাইল্যান্ড ৬৬তম, ইন্দোনেশিয়া ৭০তম, ফিলিপাইন ৭৯তম ও ভিয়েতনাম ৯২তম অবস্থানে আছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈশ্বিক পর্যায়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রতি আস্থাহীনতা দিন দিন বাড়ছে। এর ফলে কমে আসছে ভিসা-ছাড় সুবিধা এবং বেড়েছে ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার।
সূত্র জানায়, গত এক বছরে অন্তত চারটি দেশ বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা-ছাড় সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে। সম্প্রতি ভিয়েতনাম বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ইস্যু পুরোপুরি স্থগিত করেছে। কারণ হিসেবে দেশটিতে গিয়ে অনেক বাংলাদেশি পর্যটক ফিরে না এসে অবৈধভাবে অবস্থান করছেন বা কাজ করছেন।
একই কারণে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়াও বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা অনুমোদনে কঠোরতা বাড়িয়েছে। এমনকি উজবেকিস্তানের ই-ভিসা ব্যবস্থাও এখন বাংলাদেশিদের জন্য সম্পূর্ণ বন্ধ।
হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের তথ্যমতে, ২০০৬ সালে বাংলাদেশি পাসপোর্টের সর্বোচ্চ অবস্থান ছিল ৬৮তম। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে নিচের দিকে নামছে অবস্থান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদেশগামীদের মধ্যে প্রতারণা, জালিয়াতি ও অবৈধ কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির কারণে আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের বিশ্বাসযোগ্যতা কমে গেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পাসপোর্টের মান কোনো দেশের আয়তন বা অর্থনৈতিক শক্তির ওপর নির্ভর করে না, বরং জনগণের সততা, আচরণ ও আন্তর্জাতিক আস্থার ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশিদের মধ্যে বিদেশগমন সংক্রান্ত প্রতারণা ও মিথ্যাচার কমানো না গেলে পাসপোর্টের অবস্থান আরও নিচে নামতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সামাজিক ও নাগরিক মূল্যবোধ জোরদার করা জরুরি। অন্যথায় ভবিষ্যতে চাকরি, উচ্চশিক্ষা কিংবা চিকিৎসার জন্য বিদেশগমন আরও কঠিন হয়ে পড়বে।


























