তিনদিনব্যাপী উৎসবে পূণ্যার্থীদের ভিড়, কঠোর নিরাপত্তায় বন প্রশাসন
সুন্দরবনের দুবলার চরে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা
- আপডেট সময় : ০৯:২৮:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫
- / ২৪ বার পড়া হয়েছে
বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলের দুবলার চরে শুরু হয়েছে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা। রবিবার (৩ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া এই উৎসব চলবে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত। রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে আয়োজিত এই ধর্মীয় উৎসব ঘিরে তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে সুন্দরবনে।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রায় দুই শত বছর ধরে এই দুবলার চরে রাস উৎসব পালিত হচ্ছে। কেউ কেউ এর বয়স ৫০০ বছর বলেও দাবি করেন। শ্রীকৃষ্ণের ব্রজলীলার অনুকরণে বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের এ পূণ্যস্নান ও রাসলীলা উৎসব সময়ের পরিক্রমায় এখন একটি বৃহৎ সামাজিক ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে। পূর্ণিমার জোয়ারে বঙ্গোপসাগরের নোনাজলে স্নান করে পাপমোচনের উদ্দেশ্যে হাজির হন হাজারো ভক্ত।
তাদের বিশ্বাস—এই সাগরস্নান মন-প্রাণ পবিত্র করে এবং জীবনে শান্তি ও সমৃদ্ধি আনে। রাসমেলা উপলক্ষে সাগরতটে চলে খোল-করতাল, নামসংকীর্তন, রাসনৃত্য ও রাখাল নাচের আয়োজন। মেলা ঘিরে সুন্দরবন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
বন বিভাগ, নৌপুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। উৎসবের এক সপ্তাহ আগে থেকেই বনাঞ্চলে সব ধরনের প্রবেশাধিকার সীমিত রাখা হয়েছে। বাগেরহাট জেলার শরণখোলা রেঞ্জের অন্তর্গত এ চরের আয়তন প্রায় ৮১ বর্গমাইল। এখানে শীত মৌসুমে হাজারো জেলে মাছ ধরেন ও শুঁটকি প্রস্তুত করেন।
এসময় পুরো চরে সাময়িক বসতি গড়ে ওঠে। লোককথা ও পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, দেবী কমলকামিনীর আরাধনায় এই রাসমেলার সূচনা হয়। বর্তমানে এটি ধর্মীয় সীমা পেরিয়ে পরিণত হয়েছে এক ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক উৎসবে।
চাঁদের আলোয় সাগরের ঢেউ ও বনভূমির সৌন্দর্যের মাঝে ভক্তদের পূজা, নামসংকীর্তন ও পবিত্র স্নানে মুখর হয়ে উঠেছে পুরো দুবলার চর-বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের এক অনন্য আধ্যাত্মিক উৎসবে।




















