ঢাকা ০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ঢাকাইয়া রূপে আসছে ‘দেবদাস’, বুবলী–আজাদ জুটি নিয়ে জাহিদ হোসেনের নতুন আয়োজন কুমিল্লায় বিএনপির উদ্যোগে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন মোরেলগঞ্জে বিষখালী নদীর সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে যান চলাচল বন্ধ শাল্লায় ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালিত দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারই আমাদের মূল লক্ষ্য- সেলিমুজ্জামান সেলিম কেন্দুয়ায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত জিয়া ছিলেন সকল রাজনৈতিক সংগঠনের অভিন্ন চরিত্র: ইবি উপাচার্য মোরেলগঞ্জে ঐতিহাসিক ৭ই নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির বর্ণাঢ্য র‌্যালি বগুড়ায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপ প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবেঃ কর্নেল লুৎফর

নান্দাইলে ইউএনও সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে ৮ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৮:০৫:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫
  • / ৫৮ বার পড়া হয়েছে

নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে প্রায় আট কোটি টাকার দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অভিযোগ করেছেন, তিনি হাটবাজার ইজারা, খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগ, এডিপি ও অন্যান্য সরকারি তহবিল থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এ ঘটনায় নান্দাইল উপজেলার ১০ নম্বর শেরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মাসহুদ পারভেজের পক্ষে তার আইনজীবী খায়রুল হাসান সরকার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে একটি আইনগত নোটিশ পাঠিয়েছেন।

নোটিশে ইউএনও সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে সরকারি বিভিন্ন খাত থেকে প্রায় আট কোটি টাকার আত্মসাতের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছে এবং আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, ১৪৩২ বাংলা সনের বড় হাটবাজার ইজারায় সর্বোচ্চ দরদাতাদের প্রস্তাব বাতিল করে কম দরদাতাদের কাছে ঘুষের বিনিময়ে ইজারা প্রদান করা হয়েছে। এতে সরকার ৪ থেকে ৫ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

এছাড়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৫২ জন ডিলার নিয়োগে কোনো লটারি ছাড়াই দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জনপ্রতি ১ লাখ টাকা করে মোট ৫২ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রতিবাদের মুখে তালিকা বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত যাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে, তাদেরকেই বহাল রাখা হয়।

নোটিশে আরও বলা হয়, ১০ জন গ্রাম পুলিশ নিয়োগে জনপ্রতি ৫ লাখ টাকা করে মোট ৫০ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। পাশাপাশি এডিপি, রাজস্ব, উদ্বৃত্ত ও বিশেষ তহবিল থেকে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা উত্তোলন ও আত্মসাৎ করা হয়েছে।

তথ্য অধিকার আইনে প্রয়োজনীয় তথ্য চাওয়া হলেও ইউএনও সারমিনা সাত্তার তা প্রদান করেননি বলে নোটিশে উল্লেখ রয়েছে। এমনকি নান্দাইলে যোগদানের পর নিজের নতুন বাসার ভুয়া সংস্কার কাজ দেখিয়ে ২৪ লাখ টাকার প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে নান্দাইল চৌরাস্তা থেকে তাড়াইল রোডে বন বিভাগের গাছ কাটার এক কোটি কয়েক লক্ষ টাকা আৎসাত।

নোটিশে দাবি করা হয়, ইউএনও সারমিনা সাত্তার পূর্বে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত থাকাকালীনও একই ধরনের অনিয়মে জড়িত ছিলেন। সে সময় তার বিরুদ্ধে এডিপি ও রাজস্ব তহবিল আত্মসাতের অভিযোগে বিভিন্ন সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল, যার কপি নোটিশের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে।

অভিযোগকারী ইউপি সদস্য মাসহুদ পারভেজ জানান, এর আগেও তিনি ও নান্দাইলের কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ২০২৫ সালের ২৮ মার্চ বিভাগীয় কমিশনার এবং ১৩ জুলাই জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দাখিল করেন। সর্বশেষ ২৯ জুলাই দুদক চেয়ারম্যানের কাছেও সরাসরি অভিযোগ করা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই, এবার আইনগত নোটিশ পাঠিয়ে দ্রুত তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ইউএনও সারমিনা সাত্তারের মন্তব্য জানতে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

নান্দাইলে ইউএনও সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে ৮ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৮:০৫:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে প্রায় আট কোটি টাকার দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অভিযোগ করেছেন, তিনি হাটবাজার ইজারা, খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগ, এডিপি ও অন্যান্য সরকারি তহবিল থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এ ঘটনায় নান্দাইল উপজেলার ১০ নম্বর শেরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মাসহুদ পারভেজের পক্ষে তার আইনজীবী খায়রুল হাসান সরকার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে একটি আইনগত নোটিশ পাঠিয়েছেন।

নোটিশে ইউএনও সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে সরকারি বিভিন্ন খাত থেকে প্রায় আট কোটি টাকার আত্মসাতের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছে এবং আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, ১৪৩২ বাংলা সনের বড় হাটবাজার ইজারায় সর্বোচ্চ দরদাতাদের প্রস্তাব বাতিল করে কম দরদাতাদের কাছে ঘুষের বিনিময়ে ইজারা প্রদান করা হয়েছে। এতে সরকার ৪ থেকে ৫ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

এছাড়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৫২ জন ডিলার নিয়োগে কোনো লটারি ছাড়াই দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জনপ্রতি ১ লাখ টাকা করে মোট ৫২ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রতিবাদের মুখে তালিকা বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত যাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে, তাদেরকেই বহাল রাখা হয়।

নোটিশে আরও বলা হয়, ১০ জন গ্রাম পুলিশ নিয়োগে জনপ্রতি ৫ লাখ টাকা করে মোট ৫০ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। পাশাপাশি এডিপি, রাজস্ব, উদ্বৃত্ত ও বিশেষ তহবিল থেকে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা উত্তোলন ও আত্মসাৎ করা হয়েছে।

তথ্য অধিকার আইনে প্রয়োজনীয় তথ্য চাওয়া হলেও ইউএনও সারমিনা সাত্তার তা প্রদান করেননি বলে নোটিশে উল্লেখ রয়েছে। এমনকি নান্দাইলে যোগদানের পর নিজের নতুন বাসার ভুয়া সংস্কার কাজ দেখিয়ে ২৪ লাখ টাকার প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে নান্দাইল চৌরাস্তা থেকে তাড়াইল রোডে বন বিভাগের গাছ কাটার এক কোটি কয়েক লক্ষ টাকা আৎসাত।

নোটিশে দাবি করা হয়, ইউএনও সারমিনা সাত্তার পূর্বে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত থাকাকালীনও একই ধরনের অনিয়মে জড়িত ছিলেন। সে সময় তার বিরুদ্ধে এডিপি ও রাজস্ব তহবিল আত্মসাতের অভিযোগে বিভিন্ন সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল, যার কপি নোটিশের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে।

অভিযোগকারী ইউপি সদস্য মাসহুদ পারভেজ জানান, এর আগেও তিনি ও নান্দাইলের কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ২০২৫ সালের ২৮ মার্চ বিভাগীয় কমিশনার এবং ১৩ জুলাই জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দাখিল করেন। সর্বশেষ ২৯ জুলাই দুদক চেয়ারম্যানের কাছেও সরাসরি অভিযোগ করা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই, এবার আইনগত নোটিশ পাঠিয়ে দ্রুত তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ইউএনও সারমিনা সাত্তারের মন্তব্য জানতে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।