নিজস্ব প্রতিবেদক
সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পুনর্বহাল করে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের রিভিউ নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর ফলে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা ফিরলো সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের হাতে।
বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ।ফলে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। এখন থেকে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে থাকবে।
আজ রোববার (২০ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। এ রায়ের ফলে দীর্ঘ আট বছর পর নিষ্পত্তি হলো গুরুত্বপূর্ণ এ রিভিউ আপিলের।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। সুপ্রিম কোর্ট বারের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
আইনজীবীরা জানান, আজকের এই রায়ের ফলে এখন থেকে কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এলে সেই অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের সবচেয়ে সিনিয়র দুইজন বিচারপতিকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠিত হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ওই বিচারপতিকে অপসারণ বা ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন শুনানির দিন গত ১৫ আগস্ট আজকের দিন ধার্য করা হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। এর আগে বেশ কয়েকবার সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন কার্যতালিকায় এলেও শুনানি হয়নি।
গত বছরের ২৩ নভেম্বর বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ ৬ জন বিচারপতি শুনতে পারবেন বলে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন আপিল বিভাগ।
২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন দাখিল করা হয়।’
আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় রাষ্ট্রপক্ষ ৯০৮ পৃষ্ঠার এ রিভিউ আবেদনে ষোড়শ সংশোধনীর পক্ষে ৯৪টি যুক্তি দেখিয়ে আপিল বিভাগের রায় বাতিল চাওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালের ৩ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন। ৮ মে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শুরু হয়। ধারাবাহিকভাবে ১১ দিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আপিল শুনানিতে আদালতে মতামত উপস্থাপনকারী ১০ অ্যামিকাস কিউরির (আদালতের বন্ধু) মধ্যে শুধু ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর পক্ষে মত দেন।
অপর ৯ অ্যামিকাস কিউরি ড. কামাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আই ফারুকী, আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ এম হাসান আরিফ ব্যারিস্টার এম. আমিরুল ইসলাম, বিচারপতি টিএইচ খান, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ফিদা এম কামাল, এ জে মোহাম্মদ আলী সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বিপক্ষে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
২০১৬ সালের ১১ আগস্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১৬ সালের ৫ মে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ বলে রায় ঘোষণা করেন।’
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানটি তুলে দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন এনে বিচারকের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যেটি ১৯৭২ সালের সংবিধানেও ছিল।’
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস করে আওয়ামী লীগ সরকার। এ সংশোধনীর বিরুদ্ধে একই বছরের ৫ নভেম্বর নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। সে রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ মে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ।’
রায়টি বহাল থাকে আপিল বিভাগেও। এরপর বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফেরাতে রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সম্প্রতি হাইকোর্ট বিভাগের বিতর্কিত বিচারপতিদের অপসারণের দাবি উঠলে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়।’
পাবনা সংবাদদাতা উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পাবনায় পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে গেছে তিন…
জাকির হোসেন (বাবলু), দুর্গাপুর রাজশাহীর দুর্গাপুরে বন্যার পানিতে ডুবে গেছে কৃষকের স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নে রোপণ…
শাকুর মাহমুদ চৌধুরী, উখিয়া নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকালে এক মিয়ানমার নাগরিক (আরাকান আর্মির…
উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সোমবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর…
ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ভেজালবিরোধী ও দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে আলোচনায় আসা মো. সারোয়ার আলম নতুন দায়িত্ব পেলেন সিলেটে।…
উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম সোমবার রাজধানীর সিরডাপ অডিটোরিয়ামে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত কর্মশালায় যোগ দিয়ে…
This website uses cookies.