জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেল শেরপুরের ছানার পায়েস

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেরপুর জেলার অন্যতম শতবছরের ঐতিহ্যবাহী খাবার হলো ছানার পায়েস যা অনেকের কাছে রসমালাই হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন থেকে জেলাবাসীর দাবি ছিল সুস্বাদু এই খাবার জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির। অবশেষে ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেল ছানার পায়েস। জেলার তুলসীমালা ধানকে ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর জেলার আরেক ঐতিহ্যবাহী খাবার ছানার পায়েসকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির আবেদন করা হয়। চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারী ছানার পায়েসকে ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির আবেদন করে শেরপুর জেলা প্রশাসন। এরপর নানা তথ্য সংগ্রহ এবং এই খাবারের বিশেষত্ব যাচাই করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে ছানার পায়েসকে জিআই পণ্য হিসেবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এই তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ববিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড প্রপার্টি রাইটস অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউআইপিও) নিয়ম মেনে বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) এই স্বীকৃতি ও সনদ দিয়ে থাকে। যারা জিআইয়ের জন্য আবেদন করেন, তাদেরই দেওয়া হয় মেধাস্বত্ব। চাইলেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া যায় না। বেশ কিছু প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। আবেদনকারী কর্তৃপক্ষ বা ব্যক্তিকে কাঙ্ক্ষিত পণ্যটি যে মৌলিকভাবে শুধু বাংলাদেশেই হয়, তার প্রমাণ দিতে হয়। ডিপিডিটির একটি কমিটি তা মূল্যায়ন করে ওই স্বীকৃতি দেয়। এরপর সংস্থাটির জার্নালে তা প্রকাশ করা হয়।

এদিকে জেলার অন্যতম শতবছরের ঐতিহ্যবাহী খাবার ছানার পায়েস বা রসমালাই জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় উৎসবে মেতেছে সাধারন জনতা। স্বীকৃতি পাওয়ার পর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভিতরে অনেককে দেখা গেছে মিষ্টি বিতরন করতে।

এবিষয়ে আওয়ার জেলা প্রতিষ্ঠাতা দেলোয়ার হোসাইন বলেন, জেলাবাসীর প্রাণের দাবি ছিল যেন শেরপুরের ছানার পায়েস জিআই পণ্য হিসবে স্বীকৃতি পায়। অবশেষে এখন আমাদের সেই দাবি পূরন হয়েছে। অনুরাধা মিষ্টান্ন ভান্ডার এর স্বত্বাধিকারী বাপ্পি দে জানান, জিআই পণ্য হিসেবে ছানার পায়েসের স্বীকৃতি শেরপুর জেলাকে বিশ্বের দরবারে অন্য ভাবে চেনাবে। একদিকে যেমন এই ছানার পায়েস দেশের পাশাপাশি বিদেশে রপ্তারি হবে।

অন্যদিকে দেশের অর্থনীতিতে অনন্যা ভূমিকা রাখবে এই পণ্যটি। জেলা প্রশাসক বাসস’কে জানান, ছানার পায়েস ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় শেরপুরের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। দেশের সব জেলাসহ সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে এই ছানার পায়েস বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত হবে বৈদেশিক মুদ্রা।

প্রলয় ডেস্ক/আ

Recent Posts

ত্রিশালে অসহায় পরিবারের কাকরুল গাছের বাগান কেটে দেওয়ার অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বীরমপুর ভাটিপাড়া এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সূয্যত…

4 hours ago

আইসিইউতে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল, দেখার কেউ নেই

এফ এম সিফাত হাসান, শেরপুর হাসপাতালে অসুস্থ মানুষ যায় ভালো চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার জন্য।…

4 hours ago

চিলমারীর অসহায় রফিকুল পরিবারের পাশে চার সাংবাদিক

নুর মোহাম্মদ (রোকন), ভ্রাম্যমাণ এই দৃশ্য কোনো কল্পনা নয়, একেবারেই বাস্তব। কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট…

4 hours ago

ময়মনসিংহে স্টেশন রোডে অবৈধ হকার উচ্ছেদ

সুমন ভট্টাচার্য, ময়মনসিংহ যানজট নিরসনে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে দেড়শ দোকান উচ্ছেদ। ময়মনসিংহ নগরীর স্টেশন রোডে…

4 hours ago

রাজবাড়ীতে অচল খাল সচল ও জলাবদ্ধতা নিরসনে কৃষক সমিতির বিক্ষোভ

রাজবাড়ী সংবাদদাতা অচল খাল সচল করে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে রাজবাড়ীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ কৃষক…

6 hours ago

ময়মনসিংহ জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

সুমন ভট্টাচার্য, ময়মনসিংহ ময়মনসিংহ জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১৭ আগস্ট)…

7 hours ago

This website uses cookies.