পিলখানা হত্যাকাণ্ড: শেখ হাসিনাসহ অর্ধশত ব্যক্তির নামে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক 

রাজধানীর পিলখানায় ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদসহ ৫৭ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেন শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরা।
এ সময় তৎকালীন বিডিআরের ডিজি মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে ব্যারিস্টার রাকিন আহমেদ, শহীদ কর্নেল মুজিবুল হকের স্ত্রী ফেরদৌসী, কর্নেল কুদরত এলাহীর ছেলে সাকিব রহমানসহ ১৫-২০ জন শহীদ পরিবারের সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদ্‌ঘাটনে জাতীয় স্বাধীন কমিশন গঠন করেছে সরকার। ২ ডিসেম্বর সকালে বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চকে এ তথ্য জানায় রাষ্ট্রপক্ষ। এদিন রাষ্ট্রপক্ষ আদালতকে জানায়, মতামতের জন্য বর্তমানে এটি আইন মন্ত্রণালয়ে আছে। তবে বিষয়টি শুনে উষ্মা প্রকাশ করে আদালত বলেন, কমিশনের পূর্ণাঙ্গ তথ্য এনে হাইকোর্টকে জানাবেন।
জাতীয় স্বাধীন কমিশন গঠনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আইনি নোটিশ পাঠিয়ে সাড়া না পাওয়ায় গত মাসে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ ও বিপ্লব কুমার পোদ্দার। গত ৬ নভেম্বর এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া রিটকারীর আবেদন ১০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে স্বরাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
ওইদিন আদালত বেঞ্চ রুলসহ আবেদন ১০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির আদেশ দেন। রুলে জাতীয় স্বাধীন কমিশন গঠনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং জাতীয় স্বাধীন কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘শহিদ সেনা দিবস’ ঘোষণা করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুলে জানতে চাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআরের সদর দফতরে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। পরে মামলা দুটি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। বিচার হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন আলিয়া মাদরাসা মাঠসংলগ্ন অস্থায়ী এজলাসে। বিচার শেষে ঢাকা মহানগর তৃতীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন-
রায়ে বিডিআরের সাবেক ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু (প্রয়াত) ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৭৭ জনকে খালাস দেওয়া হয়। এ ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলাটি এখনো নিম্ন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
দৈনিক প্রলয় এএএস
প্রলয় ডেস্ক/আ

Recent Posts

টঙ্গীতে ১৫ রাউন্ড গুলিসহ বিদেশী রিভলবার উদ্ধার

গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে ১৫ রাউন্ড তাজা গুলিসহ একটি বিদেশী রিভলবার উদ্ধার করেছে টঙ্গী পূর্ব থানা…

5 hours ago

ত্রিশালে অসহায় পরিবারের কাকরুল গাছের বাগান কেটে দেওয়ার অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বীরমপুর ভাটিপাড়া এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সূয্যত…

11 hours ago

আইসিইউতে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল, দেখার কেউ নেই

এফ এম সিফাত হাসান, শেরপুর হাসপাতালে অসুস্থ মানুষ যায় ভালো চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার জন্য।…

11 hours ago

চিলমারীর অসহায় রফিকুল পরিবারের পাশে চার সাংবাদিক

নুর মোহাম্মদ (রোকন), ভ্রাম্যমাণ এই দৃশ্য কোনো কল্পনা নয়, একেবারেই বাস্তব। কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট…

11 hours ago

ময়মনসিংহে স্টেশন রোডে অবৈধ হকার উচ্ছেদ

সুমন ভট্টাচার্য, ময়মনসিংহ যানজট নিরসনে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে দেড়শ দোকান উচ্ছেদ। ময়মনসিংহ নগরীর স্টেশন রোডে…

11 hours ago

রাজবাড়ীতে অচল খাল সচল ও জলাবদ্ধতা নিরসনে কৃষক সমিতির বিক্ষোভ

রাজবাড়ী সংবাদদাতা অচল খাল সচল করে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে রাজবাড়ীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ কৃষক…

14 hours ago

This website uses cookies.