দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারে ব্যর্থ তদন্তকারীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলকে গ্রেপ্তারে ব্যর্থ হয়েছেন দেশটির তদন্তকারীরা। গত মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারির ব্যর্থ প্রচেষ্টার ঘটনায় শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকালে ইউনকে গ্রেপ্তার করতে প্রেসিডেন্টের বাসভবন কমপ্লেক্সে যান দেশটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্ত কার্যালয়ের (সিআইও) কর্মকর্তারা। তাঁদের সঙ্গে ছিল পুলিশ।

ইউনকে গ্রেপ্তারে বাধা দেয় প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাহিনী (প্রেসিডেনশিয়াল সিকিউরিটি সার্ভিস-পিএসএস)। এ ছাড়া সেনাসদস্যরাও বাধা হয়ে দাঁড়ান।

অন্যদিকে ইউনের গ্রেপ্তার ঠেকাতে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের বাইরে অবস্থান নেন তাঁর শত শত সমর্থক।

ইউনকে গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা ঘিরে নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়। কয়েক ঘণ্টা ধরে অচলাবস্থা চলে। পরে তদন্তকারীরা গ্রেপ্তার প্রচেষ্টা থেকে সরে আসেন। তাঁরা প্রেসিডেন্টের বাসভবন কমপ্লেক্স ত্যাগ করেন।

তদন্তকারীরা চলে গেলে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের বাইরে অবস্থান নেওয়া ইউনের সমর্থকেরা উল্লাস করেন। তাঁরা স্লোগানে স্লোগানে বলেন, ‘আমরা জয়ী হয়েছি।’

তদন্তকারীরা এক বিবৃতিতে বলেছেন, অচল পরিস্থিতির কারণে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করাটা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। অভিযুক্ত ব্যক্তির আইনি প্রক্রিয়া প্রত্যাখ্যানের মনোভাব দেখতে পেয়েছে তারা, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

গত ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউন। কিন্তু তীব্র প্রতিবাদের মুখে ছয় ঘণ্টার মাথায় তা প্রত্যাহারে বাধ্য হন তিনি।

সামরিক আইন জারির জেরে প্রেসিডেন্ট ইউন গত ১৪ ডিসেম্বর পার্লামেন্টে অভিশংসিত হন। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। দেশটির সাংবিধানিক আদালত যদি ইউনের অভিশংসন বহাল রাখেন, তাহলে তাঁকে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে অপসারণ করা যাবে।

তদন্তকারীরা ইউনের সামরিক আইন জারির বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিদ্রোহ উসকে দেওয়ার অভিযোগে তদন্তকারীদের সামনে হাজির হতে তিনি একাধিকবার অস্বীকৃতি জানান। এরপর গত ৩১ ডিসেম্বর ইউনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন দেশটির একটি আদালত।

ইউনের আইনি দল এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে ‘বেআইনি’ বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে চ্যালেঞ্জ করা হবে।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানার মেয়াদ আছে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। ইউনকে গ্রেপ্তারে আজ তদন্তকারীরা ব্যর্থ হওয়ার পর ঠিক কী হবে, তা স্পষ্ট নয়। তবে পরোয়ানার মেয়াদের মধ্যে তদন্তকারীরা ইউনকে গ্রেপ্তারে আবার চেষ্টা করতে পারেন। এই মেয়াদকালের মধ্যে তাঁকে গ্রেপ্তার করা না গেলে তাঁরা নতুন করে পরোয়ানা জারির আবেদন জানাতে পারেন।

প্রলয় ডেস্ক

Recent Posts

১৮ বছর আগে বরখাস্ত ৩২৮ জনকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ

কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করার নির্দেশ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে। এই রায় আপিল বিভাগের ১৭…

15 minutes ago

সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম অপু গ্রেপ্তার

রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল…

19 minutes ago

ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক গুরুতর অসুস্থ

আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক, কবি ও রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিক গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি…

20 minutes ago

সাবেক ডিবি প্রধান হারুনসহ ১৮ পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদসহ ১৮ পুলিশ কর্মকর্তাকে বিনা…

23 minutes ago

ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের চূড়ান্ত প্যানেলে অন্য যারা আছেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ইনক্লুসিভ তথা অন্তর্ভুক্তিমূলক প্যানেল ঘোষণা করেছে…

25 minutes ago

মাছ রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নিতে হবে: ড. মুহাম্মদ ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি মাছ রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য…

31 minutes ago

This website uses cookies.