এপিসি থেকে গুলি চালানো এসপি শাহজাহান আলোচনায় : শাস্তির দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছাত্র জনতার গণ আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৬ জুলাই আবু সাঈদ মারা যাওয়ার পর রংপুর হয়ে ওঠে সারা দেশের আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু। মূলত আবু সাঈদকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি সারা দেশের মানুষকে সরকারবিরোধী আন্দোলনের দিকে ধাবিত করেছিল।

তবে, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের পরদিন পুলিশের কিছু সদস্যকে আরো বেপরোয়া আচরণ করতে দেখা যায় রংপুরে। ১৯ জুলাই সাঁজোয়া এপিসি যানে করে সিটি বাজারের সামনে আন্দোলনকারীদের দিকে তৎকালীন রংপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহজাহানকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়।

সম্প্রতি মো. শাহজাহানের সেদিনের গুলি ছোড়ার ভিডিও ও স্থিরচিত্র ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুকে। ইতিমধ্যে তার শাস্তি দাবিও করেছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া আন্দোলনকারীরা।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) এ নিয়ে নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

ওই পোস্টে বলা হয়েছে, ‘১৬ জুলাই আবু সাঈদ মারা যাওয়ার পর রংপুর হয়ে ওঠে সারা দেশের আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু। সেদিন থেকে রংপুরে শুরু হয় ছাত্র-জনতার সম্মিলিত আন্দোলন। যার ধারাবাহিকতা ১৭, ১৮, ১৯ জুলাই ও ১, ২, ৩, ৪ আগস্ট।

ফেসবুক পোস্টটিতে সাজোয়া এপিসি থেকে অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে থাকা মো. শাহজাহানের কয়েকটি ছবি জুড়ে দিয়ে দাবি করা হয়েছে, যখন মেট্রোপলিটন পুলিশের কুখ্যাত কমিশনার মনিরুজ্জামান গং ছাত্রদের সামনে ভয়ঙ্কর রুপে আবির্ভূত হয়, তাণ্ডব চালায় পুরো রংপুর জুড়ে; চালায় ঢালাও গ্রেপ্তার বাণিজ্য করে তখন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কিছু ভালো অফিসার দাঁড়ায় ছাত্র জনতার পক্ষে। যখন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ভিতরে ভিতরে ছাত্রদের পক্ষে বিপক্ষে দু’ভাগ হয়ে যায়, তখন ১৯ জুলাই মাঠে নামে রংপুর জেলা পুলিশ।

সেদিন মূলত রংপুর সিটি বাজার এলাকা ছিল আন্দোলনের মূল কেন্দ্র। সেখানকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য আন্দোলনকারীদের সাথে রংপুর জেলা পুলিশের পোশাক পরিহিত সদস্যদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এক সময় নিজ হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে সাঁজোয়া এপিসি যানে করে সিটি বাজারের সামনে সিটি কর্পোরেশনের পাশে মুহুর্মুহু গুলি বর্ষণ করেন তৎকালীন রংপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান।

সারজিসের শেয়ার করা ফেসবুক পোস্টে আরো বলা হয়, সেদিন রংপুরে ৪ জন শহীদ হন ঘটনাস্থলে, গুলিবিদ্ধ হন প্রায় দুই শতাধিক মানুষ। এই দিনে মেট্রোপলিটন পুলিশের পোশাক পরিহিত কাউকে দেখা না গেলেও তাদের একটি সাঁজোয়া যান রাস্তায় ছিলো। এতে বলা হয়, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সিন্ডিকেটকে ম্যানেজ করে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত আছেন অভ্যুত্থানের হত্যা মামলার আসামি এই সাবেক পুলিশ সুপার। আমার ভাইদের হত্যাকারীরা কি এভাবেই ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকবেন? তাদের কি শাস্তি হবে না? হাসিনার পতনের পর এই তথাকথিত পুলিশ সদস্যদের আইনের আওতায় না এনে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে যুক্ত করা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে পুলিশ বাহিনীকে কলঙ্কমুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। না হলে পরিণতি ভালো হবে না।

প্রলয় ডেস্ক

Recent Posts

জিয়াউর রহমান এক দূরদর্শী নেতা ও দেশ গঠনের রূপকার: মোহাম্মদ মাসুদ

জিয়াউর রহমান, বাংলাদেশের একজন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, যিনি ১৯৩৬ সালের ১৯…

7 hours ago

ভালুকায় ইয়াবাসহ ৪ মাদক কারবারি গ্রেফতার

এস.এম ফিরোজ আহমেদ, ভ্রাম্যমাণ সংবাদদাতা ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় ভালুকা…

11 hours ago

রোহিঙ্গা ইস্যুতে চলতি বছরই ৩টি আন্তর্জাতিক সম্মেলন: প্রধান উপদেষ্টা

সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, চলতি বছরই রোহিঙ্গা ইস্যুতে চলতি…

11 hours ago

এদেশে সবার অধিকার সমান, ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ থাকবে না: সেনাপ্রধান

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শনিবার রাজধানীর পলাশী মোড়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শোভাযাত্রা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বললেন,…

11 hours ago

ইসলামী জোটে নির্বাচনে অংশ নেবে খেলাফত আন্দোলন

আগামী নির্বাচনে ইসলামী দলগুলো নীতিগতভাবে ঐক্যবদ্ধ হলে তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ…

11 hours ago

জামায়াত ও এনসিপির মতো কিছু গোষ্ঠী চায় না দেশে নির্বাচন হোক: দুলু

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, ‘আগামী…

12 hours ago

This website uses cookies.