Categories: Uncategorized

চুনারুঘাটে জমে উঠেছে শীতের পিঠা বিক্রি

জসিম উদ্দিন, হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় শীত মৌসুমের শুরুতেই পিঠা ব্যবসায়ীদের পিঠা বিক্রির হিড়িক পড়তে দেখা যায়। উপজেলার বিভিন্ন লোকালয়ে চলছে পিঠা বিক্রির হিড়িক। এ ব্যবসায় অনেকেই ভাল আয় করছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানায়। এ ব্যবসায় তেমন বেশি পুঁজি লাগেনা। জ্বালানী হিসেবে লাকড়ি বা খড়ি, কিছু গুড়, নারকেল ও চাউলের গুড়া দিয়ে শুরু করা হয় এ ব্যবসা। পিঠা ব্যবসায়ীরা লাকড়ীর পরিবর্তে গ্যাসের চুলা ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে। উপজেলার পৌরশহর ও ১০টি ইউনিয়নে বিশেষ করে সাপ্তাহিক হাট-বাজারগুলোতে শীত মৌসুমে জমজমাট ভাপা ও চিতই পিঠার ব্যবসা শুরু হয়। ক্রেতাদের সংখ্যা চোখে পরার মত।

এ ব্যবসা চলে বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত। চুনারুঘাট বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ও রাস্তার মোড়ে এ মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ীদের পিঠা বিক্রি করতে দেখা যায়। পিঠা বিক্রি জমে উঠে সন্ধ্যার পর থেকে। সন্ধ্যায় পরে দোকানে ক্রেতাদের ভিড় থাকে অনেক বেশি। সমাজের সব শ্রেণির লোকেই পিঠা খেতে যায়। কেউ টুলে বসে কেউ বা দাঁড়িয়ে পিঠা খায়। আবার অনেকে বাড়ির জন্য কাগজে করে নিয়ে যায় এসব পিঠা। অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ী ধুপি পিঠা ছাড়াও চিতই বানিয়েও বিক্রি করে। আবার চিতই পিঠার সাথে ধনিয়া পাতা, মরিচ, সরষে, শুঁটকি বাটা দিয়েও পিঠা বিক্রি করে। এসব পিঠার এক একটির দাম নেয়া হয় ১০টাকা। পিঠা তৈরীর বেশির ভাগ স্থানীয় বাজার পিঠা ব্যবসায়ী হয় মহিলা। পাশাপাশি পুরুষরাও তৈরি করে এ পিঠা। পিঠা বিক্রেতা নুরজাহান বেগম জানান, প্রতিবছর শীত এলেই আমরা পিঠা বিক্রি শুরু করি। শীতের প্রকোপ যত বেশি থাকে পিঠা বিক্রিও তত বেড়ে যায়।

পৌর শহর এলাকার পাকুরিয়া গ্রামের পিঠা বিক্রেতা বাচির মিয়া জানান, প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এক থেকে দেড় হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করি। সারা বছরই পিঠা বিক্রি করি শীতের হিমেল হাওয়ার তীব্রতা যতই বেশী বাড়ছে পিঠার বিক্রির চাহিদা বেড়ে যায়। পিঠা খেতে আসা মানুষ জানান, শীতের সময় ভাপা ও চিতই পিঠা খাওয়ার মজাই অন্যরকম। গরম গরম ভাপা পিঠা দেখলে লোভ সামলানো দায়, তাইতো খেতেই হবে অন্তত একটি ভাপা পিঠা।

তারা আরো জানান, কর্মব্যস্ততার কারণে বাসায় পিঠা তৈরি করে খাওয়া অধিকাংশ সময়ই সম্ভব হয় না। ফলে রাস্তার পাশের দোকান থেকে কিনে খেতে হয়। তবে পিঠা যারা তৈরি করেন তারা যেন ধুলা বালি থেকে রক্ষা করে স্বাস্থ্য সম্মতভাবে পিঠা তৈরি করেন। সাধারণত সিদ্ধ চাউলের গুঁড়া তৈরি করে সেই গুঁড়ার সাথে নারিকেল, খেজুর পাটালি মিশিয়ে তৈরি করা হয় ভাপা পিঠা। প্রতিদিন অন্তত ৪ শ’ থেকে ৫ শ’ পিস পিঠা বিক্রি করেন একজন বিক্রেতা। প্রতিপিস পিঠা বিক্রি করা হয় ১০ টাকা করে, এতে লাভ ২টাকা।

পিঠা বিক্রেতারা জানান, এখন বিক্রি বেশি থাকায় লাভের পরিমাণও একটু বেশি। স্বাস্থ্যসম্মতভাবেই পিঠা তৈরি করছেন বলে দাবি তাদের। চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোজাম্মেল হোসেন জানান, রাস্তার পাশে খোলা বাজারে তৈরি পিঠাতে ধুলা-বালিসহ নানা রকম জীবাণু লেগে যেতে পারে। যা হতে পারে পেপটিকালচার ডিজিজ, ডায়রিয়া, টাইফয়েডসহ নানা ধরনের কঠিন শারীরিক সমস্যার কারণ। তাই পিঠা তৈরি ও তা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

প্রলয় ডেস্ক

Recent Posts

মারা গেলেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ক্রিকেটার সিম্পসন

জমিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক টেস্ট অধিনায়ক এবং প্রথম পূর্ণকালীন কোচ বব সিম্পসন। ৮৯ বছর বয়সে সিডনিতে…

18 minutes ago

গাজাবাসীদের জোরপূর্বক স্থানান্তরের প্রস্তুতি

ইসরায়েল গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে অধিবাসীদের দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। শনিবার (১৬ আগস্ট) ইসরায়েলি…

28 minutes ago

না ফেরার দেশে কারা সহকারী মহাপরিদর্শক আবু তালেব

অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মো. আবু তালেব আর নেই। রোববার (১৭ আগস্ট) ভোরে হঠাৎ অসুস্থ…

30 minutes ago

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের জামিন শুনানি অক্টোবরে

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ…

32 minutes ago

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চার আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ঘোষণা

মনোযোগ ফেরাতে বিদেশি কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের ব্রিফ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। রোববার (১৭ আগস্ট)…

36 minutes ago

বাংলাদেশের সব কূটনৈতিক মিশন থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর নির্দেশ

বিদেশে বাংলাদেশের সব কূটনৈতিক মিশন, কনস্যুলেট, কূটনীতিকদের অফিস ও বাসভবন থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি…

39 minutes ago

This website uses cookies.