আ.লীগের লিফলেট বিতরণ করলেন সরকারি কর্মকর্তা

রবিউল ইসলাম, লালমনিরহাট

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম এ’র কলেজ মাষ্টার চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে অন্তর্র্বতী সরকারের পদত্যাগ দাবিতে আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণ করেছেন মুকিব মিয়া (৪৫) শিক্ষা ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। অথচ বিগত তিন মাসে একদিনও কলেজে যাননি তিনি, নেননি ক্লাসও।

মুকিব মিয়া লালমনিরহাটের পাটগ্রামের সরকারি জসমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তিনি বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের ৩১তম ব্যাচের কর্মকর্তা।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লিফলেট বিতরণ করেন তিনি। মুকিব মিয়া তার নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে সেই ছবি ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদ শেয়ারও করেছেন।

জানা যায়, মুকিব মিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সোহাগ-নাজমুল কমিটির গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে টানা ১০ বছর তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরে (ডিআইএ) কর্মরত ছিলেন। সে সময়ও তিনি নিয়মিত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। তাছাড়া শিক্ষকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এদিকে, গত ২০ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ মুকিব মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেছে। কেন তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না, তা ১০ দিনের মধ্যে জানাতে নোটিশও দেওয়া হয়। আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি ব্যক্তিগত শুনানিতে ইচ্ছুক কি না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারি চাকরিজীবীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের সমালোচনা করার সুযোগ না থাকলেও ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্র্বতী সরকারের কড়া সমালোচনা করে মুকিব মিয়া নিয়মিত ফেসবুকে লেখালেখি করেন।

এসব লেখাকে ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার ৩(খ) ধারা অনুযায়ী আচরণ লঙ্ঘন উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়।

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর ২৫(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে অথবা অন্য কোনোভাবে যুক্ত হতে পারবেন না অথবা বাংলাদেশ বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে বা কোনো প্রকারের সহায়তা করতে পারবেন না।’ বিধিমালার এ ধারা লঙ্ঘনের শাস্তি চাকরিচ্যুতি। অধ্যক্ষ বলেন, মুকিব মিয়া গত তিন মাসের বেশি সময়ের মধ্যে একদিনও কলেজে আসেননি। তিনি অনলাইনে যোগদানের আবেদন করেছিলেন। তা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু তিনি যোগদানের হার্ডকপি জমা দেননি। সম্প্রতি তিনি তিন মাসের অসুস্থতাজনিত ছুটি চেয়ে আবেদন করেছেন। তার সঙ্গে চিকিৎসকের সুপারিশ, ব্যবস্থাপত্র, অসুস্থতার প্রমাণপত্র কিছুই দেননি। এরপর আর যোগাযোগ রাখেনি।

প্রলয় ডেস্ক

Recent Posts

১৮ বছর আগে বরখাস্ত ৩২৮ জনকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ

কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করার নির্দেশ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে। এই রায় আপিল বিভাগের ১৭…

2 hours ago

সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম অপু গ্রেপ্তার

রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল…

2 hours ago

ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক গুরুতর অসুস্থ

আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক, কবি ও রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিক গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি…

2 hours ago

সাবেক ডিবি প্রধান হারুনসহ ১৮ পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদসহ ১৮ পুলিশ কর্মকর্তাকে বিনা…

2 hours ago

ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের চূড়ান্ত প্যানেলে অন্য যারা আছেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ইনক্লুসিভ তথা অন্তর্ভুক্তিমূলক প্যানেল ঘোষণা করেছে…

2 hours ago

মাছ রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নিতে হবে: ড. মুহাম্মদ ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি মাছ রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য…

2 hours ago

This website uses cookies.