জলঢাকায় ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে

বিধান চন্দ্র রায়, জলঢাকা

নীলফামারীর জলঢাকায় কৃষকদের মাঝে ভুট্টা চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। তিস্তা, বুড়ি তিস্তা নদী সমুহের বুকে জেগে উঠা ধু-ধু রুপালী বালু চর’ সহ বিভিন্ন এলাকায় অল্প পরিশ্রমে বেশি লাভের আশায় ভুট্টা চাষে স্বপ্ন বুনছেন এই অঞ্চলের চাষীরা। কৃষকরা বলছেন, তেল, সার, কীটনাশকের দাম বাড়ায় অন্যান্য ফসলের উৎপাদন খরচ বাড়লেও ভুট্টা চাষে খরচ কম হওয়ায় দিনদিন ভুট্টার আবাদ বেড়েই চলেছে। পশু খাদ্য তৈরিতে ভুট্টার পাতা ব্যবহার বেশি হওয়ায় সারা বছর ভুট্টার চাহিদা লেগেই থাকে। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনাও রয়েছে।

আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চলতি মৌসুমে অধিক পরিমান জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিসের সুষ্ঠ পরামর্শ ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকরা এবারে ভুট্টা চাষে বেশি ঝুঁকছেন বলে সুত্রে জানা গেছে। ভুট্টা চাষে খরচ কম। ফলন, দাম ও লাভ বেশি পাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে এ ফসল আবাদেও আগ্রহ বেশি বলে কৃষি অফিস দাবী করেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ উপজেলায় চাষ যোগ্য জমি রয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার হেক্টর। তার মধ্যে ভুট্টা ১ হাজার ৯৭৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া আলু ৩ হাজার ৯৫০ হেক্টর, শাক সবজি ৯৩০ হেক্টর, পেয়াজ ৮৫ হেক্টর, রসুন ৩৫ হেক্টর, মরিচ ৪৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।

জলঢাকার বিভিন্ন চরাঞ্চলের ১০ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে ৮ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার ফসলের আবাদ করা হয়ে থাকে। এসব জমিতে বেশির ভাগই চাষ হচ্ছে ভুট্টা। যা সম্প্রতি এ অঞ্চলের ব্র্যান্ডিং পন্য হিসাবে খ্যাতি পেয়েছে ।

সরেজমিনে উপজেলার চরাঞ্চল’ সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা ও জানা যায়, এলাকার চরাঞ্চল’ সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ভুট্টার আবাদ করা হয়েছে। তিস্তা ও বুড়ি তিস্তা নদীর দুই পাশে এক সময় দেখা যেত শুধু রাশি – রাশি রুপালী বালু। সেখানে ফসল উৎপাদনই ছিল চিন্তার বাইরে। উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক স্বাধীন রায় বলেন, ইরি-বোরো আবাদের চেয়ে ভুট্টা চাষে খরচ কম। ধানের চেয়ে ভুট্টা চাষে অনেক বেশি লাভ হয়। তাই কৃষকদের মাঝে ভুট্টা চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার সুমন আহমেদ জানান, এই উপজেলায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর বেশী জমিতে ভুট্টা চাষ করছেন কৃষকেরা। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কৃষকদের সব সময় সহযোগীতা ও সঠিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। কৃষকদের মাঝে সার, বীজসহ কৃষি প্রণোদনাও দেয়া হয়েছে। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও বাম্পার ফলন হবে।

প্রলয় ডেস্ক

Recent Posts

জিয়াউর রহমান এক দূরদর্শী নেতা ও দেশ গঠনের রূপকার: মোহাম্মদ মাসুদ

জিয়াউর রহমান, বাংলাদেশের একজন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, যিনি ১৯৩৬ সালের ১৯…

12 hours ago

ভালুকায় ইয়াবাসহ ৪ মাদক কারবারি গ্রেফতার

এস.এম ফিরোজ আহমেদ, ভ্রাম্যমাণ সংবাদদাতা ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় ভালুকা…

16 hours ago

রোহিঙ্গা ইস্যুতে চলতি বছরই ৩টি আন্তর্জাতিক সম্মেলন: প্রধান উপদেষ্টা

সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, চলতি বছরই রোহিঙ্গা ইস্যুতে চলতি…

17 hours ago

এদেশে সবার অধিকার সমান, ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ থাকবে না: সেনাপ্রধান

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শনিবার রাজধানীর পলাশী মোড়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শোভাযাত্রা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বললেন,…

17 hours ago

ইসলামী জোটে নির্বাচনে অংশ নেবে খেলাফত আন্দোলন

আগামী নির্বাচনে ইসলামী দলগুলো নীতিগতভাবে ঐক্যবদ্ধ হলে তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ…

17 hours ago

জামায়াত ও এনসিপির মতো কিছু গোষ্ঠী চায় না দেশে নির্বাচন হোক: দুলু

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, ‘আগামী…

17 hours ago

This website uses cookies.