মীরসরাইয়ে বন্যার পানি নামার সাথে সাথে তীব্র হচ্ছে নদী ভাঙ্গন

মীরসরাই সংবাদদাতা

মীরসরাইয়ে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত ৯টি ইউনিয়ন। বিশেষ করে ফেনী নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। বন্যার পানি নামার সাথে সাথে নদী তীরে অবস্থিত এলাকায় এখন আরো বেশি প্রকট আকার ধারণ করছে নদী ভাঙ্গন।

বছরের পর বছর ফেনী নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে শতশত বসতবাড়ি আর হাজার হাজার একর কৃষিজমি। কয়েক বছর নদী ভাঙ্গন বন্ধ থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ের বন্যায় অতিরিক্ত পানির চাপ ও স্রোতে ফেনী নদীর মীরসরাই অংশে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

মীরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ফেনী নদীর আমলীঘাট থেকে শুভপুর পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে একাধিক জায়গায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে মোল্লা বাড়ি, তিলকের খাল, চোধুরী বাড়ির প্রায় অর্ধশত বসতবাড়ি ভাঙ্গনের কবলে। ফেনী নদীর অপর পাশে ছাগলনাইয়া উপজেলা। ঐ তীরে নতুন করে চর জাগায় মীরসরাই অংশে স্রোতের পানি তীব্র ধাক্কা দিচ্ছে। এতে করে নদীর তীর ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে।

অলিনগর গ্রামের বাসিন্দা আরমান জানান, নদীর এ কূল ভাঙে, ও কূল গড়ে। ঠিক তেমনই হচ্ছে ফেনী নদীতে। তবে ভাঙনের পর আমাদের ভাগ্য গড়া হবে কিনা তা কেউ বলতে পারেনা। বন্যার পানি নামার সাথে সাথে আমরা আরেকটি সঙ্কটে পড়েছি।

আমেনা বেগম বলেন, নদী তার ভিটেমাটি ভাসিয়ে নিলে কোথায় আশ্রয় হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আকাশের দিকে তাকিয়ে তিনি বলেন, ওপরওয়ালা ছাড়া কেউ জানে না।

ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া ব্লক এই বন্যায় তলিয়ে গেছে। ভাঙন কবলিত মানুষের পুনর্বাসন এবং শক্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থায় সরকারের কোনও উদ্যোগও নেই। এভাবে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে পুরো গ্রাম বিলীন হওয়ার শঙ্কায় গ্রামবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী ও ধুম ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙনের সৃষ্টি হলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন করেরহাট ইউনিয়নের অলিনগর, পশ্চিম জোয়ার, ধুম ইউনিয়নের মোবারকঘোনা ও শুক্কুরবারইয়াহাট গ্রামের বাসিন্দারা।

শীঘ্রই সরেজমিনে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মীরসরাই উপজেলার দায়িত্বরত কর্মকর্তা আবদুল কাদের।

মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, নদী ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে সমন্বয় করে শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এখনই ভাঙ্গন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে বিলীন হতে পারে শত শত বসতঘর ও ফসলি জমি এমনটাই আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।