দিলোয়ার হোসাইন,বানিয়াচং
সচল বিদ্যুৎ লাইনে হাত দিলেই মৃত্যু এটাই সবার জানা কথা। প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। কিন্তু হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে আছেন এক বিস্ময়কর মানুষ, যিনি এ প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। উচ্চ ভোল্টেজের বিদ্যুতের তারে দিব্যি ঝুলে থাকেন, শরীর দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করেন, এমনকি তার তাপে ডিম সেদ্ধ করেও খেয়ে দেখান—তবুও তার কিছুই হয় না!
তার নাম আয়নাল মিয়া, বয়স ৬১ বছর। বিশ্বের বৃহত্তম গ্রাম বানিয়াচংয়ের বড় বাজার এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা তিনি। পেশায় একজন ইলেকট্রিক মেকানিক ও ‘বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ’-এর প্রতিষ্ঠাতা। এলাকায় সবাই তাকে ‘বিদ্যুৎমানব’ নামে চেনেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাজারের এক কোণে বসে কাজ করছেন আয়নাল। দেখতে চাইলে ২৪০ ভোল্টের সচল তার দুই হাত দিয়ে ধরলেন। পাশে দাঁড়ানো মানুষজন বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলেন। কিছুক্ষণ পর তিনি বিদ্যুতের তারে শরীর দিয়ে প্রবাহিত বিদ্যুতের তাপে একটি ডিম সেদ্ধ করলেন। তারপর হাসিমুখে সেই ডিম খেয়ে দেখালেন সবার সামনে। আশপাশের অনেকেই ফিসফিস করে বলছিলেন- ‘এ যেন অলৌকিক ঘটনা। ’
আয়নাল মিয়া বলেন, প্রায় ২৭ বছর আগে কুমিল্লায় বৈদ্যুতিক কাজ করার সময় প্রথম বুঝি, সচল বিদ্যুতের তার ধরলেও আমার কিছু হয় না। পরে সাহস করে দ্বিতীয়বারও ধরলাম, তখনও কিছুই হয়নি। তারপর থেকে টেস্টার বা প্লাস ছাড়াই খালি হাতে কাজ করে যাচ্ছি। বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজনও জানে ২২০ কিংবা ৪৪০ ভোল্টের লাইন ধরলেও আমার ক্ষতি হয় না।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ৩৬ বছর ধরে মানুষের বিদ্যুৎ সংক্রান্ত কাজ করে আসছেন। বিনিময়ে কখনও নির্দিষ্ট টাকা দাবি করেন না, যে যা দেন, তাই নেন। এ কাজ করেই ছয় ছেলে-মেয়েকে বড় করেছি- বলেন আয়নাল।
শুধু বিদ্যুতের খেলা নয়, অন্যের জীবন রক্ষায়ও তিনি বরাবর এগিয়ে যান। স্মৃতিচারণ করে বলেন, একবার বড় বাজারে আগুন লাগে। তখন একটি ছেলে বিদ্যুতের তারে ঝুলে ছিল। আমি গিয়ে সচল লাইন থেকে তাকে নামিয়ে বাঁচাই। তার কথায় জানা গেল, এমন অনেক ঘটনাতেই তিনি মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন।
বানিয়াচং প্রেসক্লাবের সভাপতি মোশারফ হোসাইন বলেন, আমরা অনেক আগেই শুনেছি, আয়নাল ভাইয়ের শরীরে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হলেও তার কিছু হয় না। বিদ্যুৎস্পৃষ্টের খবর পেলেই তিনি ছুটে যান, মানুষের জীবন বাঁচাতে দেরি করেন না।
এলাকার ব্যবসায়ী শামীম আহমেদ বলেন, আমরা এটাকে গায়েবি ঘটনা বলি। আয়নাল ভাই খুবই সৎ ও সাদা মনের মানুষ। বিপদে-আপদে সবাইকে সাহায্য করেন। সরকারিভাবে তাকে সহযোগিতা করা উচিত।
অপর ইলেকট্রিক মেকানিক ইদু মিয়া বলেন, আমরা শিখেছি টেস্টার বা প্লাস ছাড়া সচল লাইনে ধরা যায় না। কিন্তু আয়নাল ভাই দিব্যি খালি হাতে কাজ করেন। হয়তো আল্লাহ তাকে আলাদা ক্ষমতা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বানিয়াচং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, আমরা জানি, তিনি ২২০ ভোল্টের লাইন ধরলেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন না। তবে অন্যদের এমন দুঃসাহস না করাই ভালো। এটা প্রাণঘাতী হতে পারে। এজন্য সবাইকে এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে ।
এস.এম ফিরোজ আহমেদ, ভ্রাম্যমাণ সংবাদদাতা ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় ভালুকা…
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, চলতি বছরই রোহিঙ্গা ইস্যুতে চলতি…
সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শনিবার রাজধানীর পলাশী মোড়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শোভাযাত্রা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বললেন,…
আগামী নির্বাচনে ইসলামী দলগুলো নীতিগতভাবে ঐক্যবদ্ধ হলে তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ…
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, ‘আগামী…
আগামী নির্বাচনে কেউ ভোট ডাকাতি বা কারচুপি করতে আসলে তা প্রতিহত করার প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান…
This website uses cookies.