জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
জাহাঙ্গীর আলম ঢাকার বাসায় অবস্থান করছিলেন। সকাল সাড়ে ৯টায় জাহাঙ্গীর গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পান। তিনি বুঝতে পারেন ছাত্র-জনতার উপর পুলিশের গুলির নির্মমতা চলছে। প্রত্যেক গুলির শব্দই তার বিবেককে নাড়া দিচ্ছিল।
জাহাঙ্গীর আর ঘরে বসে না থেকে ছাত্র-জনতার পাশে দাঁড়াতে বেরিয়ে পড়েন। চলে আসেন ঢাকার ভাটারা থানার আমেরিকান অ্যাম্বাসির পাশের রাস্তায়। কিছু বুঝে উঠার আগেই গুলিবিদ্ধ হয়ে এক রিকশাচালক লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। তাকে উদ্ধারে এগিয়ে যান জাহাঙ্গীর। তখনই বাম পায়ে গুলি খেয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন এবং জ্ঞান হারান।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার হিড়িমদিয়া গ্রামের খয়মুদ্দিন মন্ডলের ছেলে দিনমজুর জাহাঙ্গীর আলম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৯ জুলাই গুলিবিদ্ধ হন তিনি। সোমবার (২৩ জুলাই) হাসপাতালে শুয়ে রাজধানীর শাহাজাদপুর-ভাটারা এলাকায় ঘটে যাওয়া সেদিনের সেসব ঘটনা ইত্তেফাককে বর্ণনা দিচ্ছিলেন আর কাঁদছিলেন তিনি।
ঘটনার বর্ণনায় জাহাঙ্গীর জানান, সেদিন ঢাকার শাহাজাদপুর খিলবাড়ীর বাসায় অবস্থান করছিলেন। আনুমানিক সকাল সাড়ে নয়টায় জাহাঙ্গীর শুনতে পান গোলাগুলির আওয়াজ। তিনি আর ঘরে বসে না থেকে ছাত্র-জনতার পাশে দাঁড়াতে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন। চলে আসেন ঢাকার ভাটারা থানার আমেরিকান অ্যাম্বাসির পাশের রাস্তায়। কিছু বুঝে উঠার আগেই তার চোখের সামনে গুলিবিদ্ধ হন এক রিকশাচালক। গুলি খেয়ে রিকশাচালক লুটিয়ে পড়ে মাটিতে। দৌড়ে তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যান জাহাঙ্গীর আলম। তখনই বাম পায়ে গুলি লাগে জাহাঙ্গীরের। তিনিও লুটিয়ে পড়েন মাটিতে এবং জ্ঞান হারান। জ্ঞান ফিরে দেখেন জাহাঙ্গীর বারিধারা উপশম হাসপাতালে মেঝেতে শুয়ে আছেন।
ভেড়ামারা চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মনজুর আহম্মেদ ভুট্টো জানান, উপশম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জাহাঙ্গীরের গুলিবিদ্ধ পা এক্সরে করে। এক্সরে রিপোর্ট দেখে জানিয়ে দেন সেখানে চিকিৎসা করা সম্ভব না। নিয়ে যেতে হবে কুর্মিটোলা হাসপাতালে। কিন্তু পাঠানো এতই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল যে, ছাত্ররা কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়। নামমাত্র ডাক্তারের সহযোগিতায় দুদিন চিকিৎসা নিয়ে চলে আসে দেশের বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার হিড়িমদিয়া গ্রামে।
দিনমজুর জাহাঙ্গীর আলম মানবেতর জীবন থেকে পরিত্রাণ পেতে সরকারি-বেসরকারি সহায়তাসহ মানবিক সংগঠনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার লতিফুল কবির লিমন বলেন, ‘স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক ডা. মাহবুব আফাজ ও চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মনজুর আহম্মেদ ভুট্টোর সহযোগিতায় জাহাঙ্গীর আলম ভর্তি হয় ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। টানা ৫ দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর বাড়ি ফিরে যান জাহাঙ্গীর। যথোপযুক্ত চিকিৎসা না হওয়ায় গুলি খাওয়া পায়ে পচন ধরার সম্ভাবনা রয়েছে। উন্নত চিকিৎসা করার প্রয়োজন।’
পল্লী চিকিৎসক ডা. মাহবুব আফাজ বলেন, উন্নত চিকিৎসা ও গুলি খাওয়া পায়ের ক্ষত না শুকালেও একমাত্র উপার্জনক্ষম জাহাঙ্গীর আলমের পরিবারে নেমে আসে তীব্র দৈন্যতা।
ভেড়ামারার হিড়িমদিয়া গ্রামের খয়মুদ্দিন মন্ডলের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের ৩ সন্তানের বাবা। বাবা-মা, স্ত্রী সন্তান নিয়ে বিপাকে জাহাঙ্গীর আলমের সংসার। এখনও পর্যন্ত কোনো মানবিক সংগঠন ও সরকারি কোনো আর্থিক সহযোগিতা পাননি আন্দোলনের এই দিনমজুর সৈনিক।
গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে ১৫ রাউন্ড তাজা গুলিসহ একটি বিদেশী রিভলবার উদ্ধার করেছে টঙ্গী পূর্ব থানা…
নিজস্ব সংবাদদাতা ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বীরমপুর ভাটিপাড়া এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সূয্যত…
এফ এম সিফাত হাসান, শেরপুর হাসপাতালে অসুস্থ মানুষ যায় ভালো চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার জন্য।…
নুর মোহাম্মদ (রোকন), ভ্রাম্যমাণ এই দৃশ্য কোনো কল্পনা নয়, একেবারেই বাস্তব। কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট…
সুমন ভট্টাচার্য, ময়মনসিংহ যানজট নিরসনে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে দেড়শ দোকান উচ্ছেদ। ময়মনসিংহ নগরীর স্টেশন রোডে…
রাজবাড়ী সংবাদদাতা অচল খাল সচল করে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে রাজবাড়ীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ কৃষক…
This website uses cookies.