ভোলা সদর, প্রতিনিধি
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ভোলা সদর থানার আওতাধীন ৭ নং শিবপুর ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মাওলানা শিহাব উদ্দিন এর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা নুরুল্লাহ এর সঞ্চালনায় গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ভোলা জেলা উত্তর এর সভাপতি মাওলানা আতাউর রহমান মমতাজি। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, আজ আমরা দীর্ঘ ১৬ বছর পর জালিমের কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছি। আজ এই গণসমাবেশ প্রাকৃতিক প্রতিকূল আবহাওয়া মধ্যেও বৃষ্টিতে অপেক্ষা করে জনগণের গণ সমাবেশ জন সমুদ্রে পরিনত হয়েছে। এটাই প্রমাণ করেছে মানুষ স্বৈরাচারের কারাগার থেকে বের হয়ে মুক্ত বাতাসে নিজেদের মত প্রকাশ করতে সক্ষম হচ্ছে।
গত ৫ আগস্ট’২৪ বৈষম্য বিরুধী ছাত্র আন্দোলনে মাধ্যমে জুলাই ২০২৪ বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। এই আন্দোলন মূলত শুরু হয়েছে কোটা সংস্করণ আন্দোলনের নামে ১লা জুলাই থেকে। কোটা সংস্করণ আন্দোলন ছাত্রদের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন নামে শুরু হয় পহেলা জুলাই থেকে শুরু করে ৫ আগস্ট’২৪ স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের মাধ্যমে হাজারো ছাত্র-জনতার শহীদের বিনিময়ে আমরা দ্বিতীয়বারের মতো পেয়েছি স্বাধীনতা।
এই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কে কেন্দ্র করে ১৪ জুলাই স্বৈরাচারী হাসিনা গত ভবন থেকে একটি বিতর্কিত বক্তব্য দেন, “মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা চাকরি পাবেনা, রাজাকারের নাতিপুতিরা চাকরি পাবে” শুধু এই একটি বক্তব্যের কারণে বৈষম্য বিরুধী ছাত্র আন্দোলন গণআন্দোলনের রূপ নেয়। জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে রাত বারোটার পরে সেই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সেই প্রতিবাদ মিছিলের স্লোগান ছিল “আমি কে তুমি কে রাজাকার রাজাকার কে বলেছে কে বলেছে স্বৈরাচার স্বৈরাচার”। এই স্লোগানের পরপরই ছাত্র জনতা পুষে উঠলে সমগ্র বাংলাদেশে আরো এই আন্দোলন ভয়াবহ রূপ নেয়।
১৬ই জুলাই ২০২৪ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আবু সাঈদ কে পুলিশের নির্মমভাবে পুলিশ গুলির মাধ্যমে শহীদ করা হয় । তারপরই সারাদেশ আরো এই আন্দোলন দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলে এবং ১৭,১৮ ও ১৯শে জুলাই সৈরাচরী হাসিনা সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিলে জনগণের প্রতিরোধের মুখে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে ক্রমান্বয়ে একমাত্র একটি ইসলামি দল জুলাই’২৪ বৈষম্য বিরুধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের সাথে দলীয় ব্যানারে একত্রতা পোষণ করে। বাংলার জনতা কে ছাত্রদের পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য ঐতিহাসিক ভাষণ পেশ করেন বঙ্গবীর পীর সাহেব চরমোনাই। সেই দিন ১৯ শে জুলাই পীর সাহেব চরমোনাই বাইতুল মোকাররম এর উত্তর গেটে ভাষণে বলেছিলেন, এই নরপিচাশ তুই কেন আমার ছাত্রের বুকে গুলি করে আমার ছেলেকে হত্যা করেছ। এবং তারপরে জাতির উদ্দেশ্য আহ্বান জানিয়ে সকল অভিভাবক ও জনসাধারণকে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে আহ্বান করেন।
একই দিনে ১৯শে জুলাই পীর সাহেব চরমোনাইর আহব্বানে সমগ্র বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদসহ অনুষ্ঠিত হয়। তারপর থেকে শুরু করে দীর্ঘ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন পীর সাহেব চরমোনাই। ৪ ও ৫ আগস্ট ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর নায়েবে আমিরের নেতৃত্বে সরাসরি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ছাত্রদের সাথে একত্রতা পোষণ করে রাজপথে ছিল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিম।
৪ তারিখ ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল থেকে ৫ তারিখ ঢাকা বঙ্গভবন ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সেটা ছাত্রদের গেরাও কর্মসূচি লং মার্চের অংশ হিসেবে। ৫ আগস্ট সকাল দশটায় সর্বপ্রথম ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমিরের নেতৃত্বে কারফিউকে ভঙ্গ করে ৮ থেকে ১০ লক্ষ মুজাহিদ বাহিনী নিয়ে বঙ্গভবন ঘেরাও কর্মসূচি অংশগ্রহণ করেন। এবং সকাল সাড়ে ১১ টায় সেখানে পৌছানোর পূর্বেই স্বৈরাচারী হাসিনা দেশ ত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান।
৫ তারিখের পর আমরা কি দেখতে পেলাম, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পালানোর পরপরই আর আওয়ামীলীগ দেশের কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমরা বুঝতে পারলাম বাংলাদেশের শুধু একজনের আওয়ামী লীগ সে হলো স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা। সরাসরি হাসিনার মত আগামীতে আমরা কোন সরকার দেখতে চাই না। এবং যারা স্বৈরাচারী হাসিনার পতনের পরপরই সকল জায়গায় দখলদারিত্বের রাজত্ব কায়েম করেছেন তাদের বিরুদ্ধে বলেন, তারা যেন এই স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীতে বাংলাদেশকে সুখি, সমৃদ্ধ একটি কল্যান রাষ্ট্র গড়ার জন্য রাজনীতিতে আসে।
তিনি আরো বলেন,ভোলা বাসি হলো প্রকৃত দেশপ্রেমী সেটা প্রমাণ করেছে বৈষম্য বিরুধী ছাত্র আন্দোলনে সবচাইতে বেশি শহীদের যে জেলা অবস্থান সেই জেলা হল ভোলা জেলা। এই জলায় মোট ৪৬ জন ছাত্র আন্দোলনে শাহাদাত বরণ করেছেন যা সমগ্র দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। এই শহীদদের থেকে শপথ নিয়ে বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ কল্যাণমুখী রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য অবদান সর্বোচ্চ থাকবে,ইনশাআল্লাহ।
আরো বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচাইতে সোনালি ইতিহাস হল মুসলমানদের। রাসূল সাল্লাল্লাহু ইসলামের পর থেকে পরবর্তী চার খলিফার খেলাফত ব্যবস্থা ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে সবচাইতে সর্বোত্তম শাসন ব্যবস্থা। সে দীর্ঘ ২৪ বছরের ইতিহাস এখনো মুসলিম জাতিকে মনে করিয়ে দেয় যে পৃথিবীতে একমাত্র শান্তির শাসনব্যবস্থা হল ইসলামী শাসন ব্যবস্থা। আর এই বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে একমাত্র সমাধান হলো ইসলামী শাসন ব্যবস্থা। সে শাসন ব্যবস্থা কায়েমের লক্ষ্যে আমাদের সকলের কাছে ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। আগামীতে ইসলামকে ক্ষমতায় আনতে হবে তার ফলেই আমরা একটি ইসলামী সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারে।
প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে বলেন, ছাত্র জনতার কোন বিপ্লব সংঘটিত কোন হত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদেরকে নির্বাচন অযোগ্য ঘোষণা করা, সংখ্যাানুপাতিক (PR) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রবর্তনের দাবি এবং ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামী সমাজ ভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি পেশ করেন।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ভোলা সদর ১ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ভোলা জেলা উত্তর শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা ওবায়েদুর রহমান বিন মোস্তফা।
প্রধান বক্তা তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের ভোলায় বিপুল পরিমাণ গ্যাস রয়েছে, যার মাধ্যমে ভোলায় বিভিন্ন শিল্প কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে ভোলায় কলকারখানা করবার জন্য প্রস্তাব ও এসেছিল কিন্তু কিছু চাঁদাবাজদের কারণে তারা কল খারাপ কানা গুলো করতে পারছে না আমরা প্রশাসনকে বলবো ঐ সমস্ত চাঁদাবাজদের কে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়ার জন্য, এরই সাথে সরকারকে বলবো আমাদের ভোলা থেকে গ্যাস নিতে হলে ভোলা বরিশাল ব্রিজ করে দিতে হবে অন্যথায় বলার মানুষ ভোলার গ্যাস কোথাও নিতে দিবেনা। তিনি বলেন পীর সাহেব চরমোনাইয়ের নেতৃত্বে ভোলা বরিশাল বিরিজের কাজ শুরু করার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করছি ইনশাল্লাহ দ্রুত সময়ের মধ্যেই তার দৃশ্যমান হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন ভোলা জেলা উত্তরের, সেক্রেটারি মাওলানা তরিকুল ইসলাম তারেক, জয়েন্ট সেক্রেটারি মুফতি আব্দুল মোমিন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন ভোলা জেলা উত্তরের, জয়েন সেক্রেটারি মাওলানা আনোয়ার হোসেন, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম ভোলা জেলা উত্তরের সভাপতি মাওলানা আব্দুর রহমান চৌধুরী, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ ভোলা জেলা উত্তরের সভাপতি মাওলানা শোয়াইব আহমদ ফরিদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ভোলা জেলা উত্তর শাখার সভাপতি মুহাম্মাদ আবু জাফর, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ভোলা জেলা উত্তরের সাবেক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এইচএম আল আমিন সহ থানা ও ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
কুড়িগ্রাম জেলা উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন পরিষদ কমিটি গঠিত হয়েছে। ৬১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে অধ্যাপক শফিকুল…
অভ্যুত্থানের ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত পুলিশ অফিসারদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করতে লিগ্যাল নোটিশ…
পাবনা সংবাদদাতা উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পাবনায় পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে গেছে তিন…
জাকির হোসেন (বাবলু), দুর্গাপুর রাজশাহীর দুর্গাপুরে বন্যার পানিতে ডুবে গেছে কৃষকের স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নে রোপণ…
শাকুর মাহমুদ চৌধুরী, উখিয়া নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকালে এক মিয়ানমার নাগরিক (আরাকান আর্মির…
উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সোমবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর…
This website uses cookies.