পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সহ পার্শ্ববর্তী জেলা জুড়ে নতুন ভাইরাস

সমরেশ রায় ও শম্পা দাস, কলকাতা

সোমবার (৪ঠা নভেম্বর) এই মুহূর্তে সারা জেলা ও পার্শ্ববর্তী জেলা জুড়ে এক নতুন ভাইরাসের এপিডেমিক চলছে, রেসপিরেটরী সিনসিটিয়াল ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে ছোট ছোট শিশুরা। ডাক্তারি ভাষায় বলা হচ্ছে আরএস ভি, প্রধানত এক বছরে নিচে শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। এই ভাইরাস ঘটিত রোগের ফলে, মূলত বাচ্চার জ্বর কাশি দেখা দিচ্ছে। আর এই অস্বাভাবিকভাবে কাশি চলবে ২০ থেকে ৩০ বার, কিছুটা স্বস্তি পেলেও আবারো কিছুক্ষণ পর এই অস্বাভাবিক কাশি চলতে থাকে, বাচ্চার রীতিমতো অসুস্থ হয়ে পড়ে, এর ফলে চিকিৎসকরা শিশুকে অক্সিজেন পর্যন্ত দিতে বাধ্য হচ্ছে। মূলত শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা থাকছে, আর এই ভাইরাস ঘটিত রোগের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে।

এই মুহূর্তে পূর্ব পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, ঝাড়গ্রাম জেলায় আরএস ভি প্রকোপ লক্ষ্য করা গেছে, বিভিন্ন জায়গায় প্রাথমিক চিকিৎসা করার পর সুস্থ না হওয়ার ফলে কোলাঘাটের একটি বেসরকারি শিশু হাসপাতালে গত কয়েকদিন ধরে ৫০ টি রোগীর দেখা মিলেছে। তবে এই মুহূর্তে দশটি বাচ্চা চিকিৎসাধীন রয়েছে। শিশু চিকিৎসক ডাক্তার প্রবীর ভৌমিক জানান, এই সময় আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে, এই সময় এই ভাইরাস ঘটিত সমস্যা দেখা দিচ্ছে, সারা রাজ্যে প্রকোপ বাড়ছে, তবে এ বছর এই আরএস ভি প্রকোপ সব থেকে বেশি বলে জানান শিশু চিকিৎসক ডাক্তার প্রবীর ভৌমিক।

সারা মাসে শিশু চিকিৎসালয় প্রায় ৫০ জন আরএসভি আক্রান্ত শিশু ভর্তি হয়েছিলেন। এখনো ১০ জন শিশু এই রোগ নিয়ে ভর্তি আছে। কয়েকজনের অবস্থা খুব খারাপ। ওই শিশুদের জন্য ভেন্টিলেশন এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে, এই রোগ বাড়ির বড়দের কাছ থেকে পাচ্ছে। এটা নিউমোনিয়া রোগ নয়, এটা হল শিশুদের ক্ষুদ্র শ্বাস নালীর প্রদাহ, এইগুলি খুব সরু, তাই শ্বাস ও প্রশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হয়।

এই ভাইরাসের কোন ওষুধ নাই, তাই দামী দামী এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে শিশুর ক্ষতি করছে, অতিরিক্ত প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিয়ে বিপদ ডেকে আনছে বলে মন্তব্য করেন শিশু চিকিৎসক প্রবীর বাবু, তিনি আরো জানান, পি সি আর এর মাধ্যমে এই রোগ শিশুর কফ থেকে টেস্ট করে ধরা যায়, অনেক বাচ্চাদের এটা অনেকদিন ধরে আক্রমণ হওয়ায় ফুসফুসে ক্ষতি করে, ঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে জীবন হানির ভয় থাকে। বাড়িতে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া চিকিৎসা করলে বিপদ হতে পারে।

আরও পড়ুন:

বেশি কান্নাকাটি করলে শ্বাস ও প্রশ্বাসের গতি আরো বেড়ে যাবে, সেদিকে সঠিক নজর দিতে হবে ,অনেক সময় এক্সরে করে দেখে নেওয়া ভালো, বাড়ির লোকজন করোনা কালে যেভাবে হাত ধোয়া ও মাক্স পোড়া, বাইরে থেকে এসে ভালো করে হ্যান্ডওয়াশ করা, সর্দি কাশি হলে নিজেকে ছোট শিশুদের থেকে দূরে সরিয়ে রাখা বিশেষ প্রয়োজন।

এই ভাইরাসের কোন ভ্যাকসিন নেই ও ঔষধ নেই। তাই অতিরিক্ত সতর্কতা দরকার বলে জানান কোলাঘাটের বিশিষ্ট শিশু চিকিৎসক ডাক্তার প্রবীর ভৌমিক। এবং শিশুদের প্রতি নজর রাখতে হবে।

প্রলয় ডেস্ক

Recent Posts

ত্রিশালে অসহায় পরিবারের কাকরুল গাছের বাগান কেটে দেওয়ার অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বীরমপুর ভাটিপাড়া এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সূয্যত…

1 hour ago

আইসিইউতে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল, দেখার কেউ নেই

এফ এম সিফাত হাসান, শেরপুর হাসপাতালে অসুস্থ মানুষ যায় ভালো চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার জন্য।…

2 hours ago

চিলমারীর অসহায় রফিকুল পরিবারের পাশে চার সাংবাদিক

নুর মোহাম্মদ (রোকন), ভ্রাম্যমাণ এই দৃশ্য কোনো কল্পনা নয়, একেবারেই বাস্তব। কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট…

2 hours ago

ময়মনসিংহে স্টেশন রোডে অবৈধ হকার উচ্ছেদ

সুমন ভট্টাচার্য, ময়মনসিংহ যানজট নিরসনে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে দেড়শ দোকান উচ্ছেদ। ময়মনসিংহ নগরীর স্টেশন রোডে…

2 hours ago

রাজবাড়ীতে অচল খাল সচল ও জলাবদ্ধতা নিরসনে কৃষক সমিতির বিক্ষোভ

রাজবাড়ী সংবাদদাতা অচল খাল সচল করে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে রাজবাড়ীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ কৃষক…

4 hours ago

ময়মনসিংহ জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

সুমন ভট্টাচার্য, ময়মনসিংহ ময়মনসিংহ জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১৭ আগস্ট)…

4 hours ago

This website uses cookies.