চট্টগ্রামে সিডিএ’র অনুমোদন ছাড়াই ব্যবসায়ীর জায়গা দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ

- আপডেট সময় : ০৭:১৯:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫
- / ১৪৫ বার পড়া হয়েছে
চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন পাঠানটুলিস্থ কাপুরিয়াপাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী স ম আলতাফ হোসেনের (৫৪) নালার জায়গা জোরপূর্বক দখল করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষের (সিডিএ) প্লানিং ছাড়াই বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে তারই (স ম আলতাফ) সহোদর শাহাদাত হোসেনের (৬২) বিরুদ্ধে।
গত ১৮ এপ্রিল স ম আলতাফ হোসেনের পৈতৃকসূত্রে পাওয়া নালার জায়গায় জোরপূর্বক বহুতল ভবন নির্মাণ কাজে বাধা দিতে গেলে শাহাদাত হোসেন ও তার ছেলে মো: শাহাজামান রাজীব (৪০) স ম আলতাফ হোসেনকে অতর্কিত হামলা করে৷ এক পর্যায়ে তাকে লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এতে করে আলতাফ হোসেনের মাথায় গুরুতর আঘাত পেলে তিনি ঘটিনার দিনই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) ভর্তি হন।
এ ঘটনার পর চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে ২৪ এপ্রিল পর স ম আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে ডবল মুরিং থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এছাড়াও এর আগে ২০ এপ্রিল তিনি চট্টগ্রাম চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটা ফৌজদারি মামলা দায়ের করেন যার সি, আর নং- ৭৬৩/২০২৫ ইং (ডবল মুরিং থানা)।
মামলা ও অভিযোগসূত্রে জানা যায়, বিদাদী শাহাদাত হোসেন জোরপূর্বক স ম আলতাফ হোসেনের নালার জায়গা জোরপূর্বক দখল করে বহুতল ভবনের নির্মাণাধীন কাজ চালিয়ে যাওয়ায় আলতাফ হোসেন তাকে নালার জায়গা কাজ না করার জন্য একাধিকবার অনুরোধ করেন। কিন্তু শাহাদাত হোসেন সন্ত্রাসী, ফখলবাজ, ভূমিদস্যু হওয়ায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সর্বদা আলতাফ হোসেন ও তার পরিবারের উপর জুলুম, অন্যায়, নির্যাতন করে আসছে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষের (সিডিএ) অনুমোদন ছাড়াই জোরপূর্বক দখল করে অবৈধভাবে ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে গত ১৩ এপ্রিল চউক বরাবর একটা আবেদন করেন। এরপর চউক আলতাফ হোসেন আবেদনকে আমলে নিয়ে ২৪ এপ্রিল বিরোধীয় জমিতে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে একটি নোটিশ ইস্যু করে। নোটিশের একটি অনুলিপি ডবল মুরিং থানায় প্রেরণ করে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) উল্লেখিত জায়গায় চউক কতৃক পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিমার্ণ কাজ বন্ধ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করে।
কিন্তু চউকের নির্দেশ অমান্য করে ও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অদৃশ্য ক্ষমতা বলে দেদারসে ভবন নির্মাণের কাজে চালিয়ে যাচ্ছে শাহাদাত হোসেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী স ম আলতাফ হোসেন জানান, আমি একজন সহজ সরল ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ব্যবসায়ী। শাহাদাত হোসেন জোরপূর্বক ইজমালি নালা দখল করে অবৈধভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করছে। আমি বাধা দিতে গেলেই আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দেয়। গত ১৮ এপ্রিল জোরপূর্বক ভবন নির্মাণের কাজে বাধা দিতে গেলে আমাকে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে শাহাদাত ও তার ছেলে রাজীব আমার উপর হামলা চালিয়ে আমার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এই নালা দিয়ে আমার বাসার পানি ড্রেনে যায়। এ নালা বন্ধ হলে গেলে আমার বাসা থেকে ড্রেনে পানি যেতে পারবে না। সে (শাহাদাত) জবর-দখল করে আমার মালিকানাধীন নালায় সিডিএ’র প্লানিং ছাড়াই বহুতল ভবনে নির্মাণ করে চলছে।
আমার জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণ যাতে ভবন নির্মাণ কিরতে না পারে সেজন্য আমি বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস, চউক চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শাহাদাত হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটা আমাদের এজমালি সম্পত্তি। এই নালার অর্ধেক আমার আর অর্ধেক স ম আলতাফ হোসেনের হলেও সে পুরো নালা একাই ভোগ করতে চায়। আমি আমার ভাগের জায়গায় ভবন নির্মাণ করছি। আর সিডিএ ৪ ফুট রাস্তা না থাকলে অনুমোদন দিবে না। কিন্তু আমার বাসার ৪ ফুট রাস্তা দেওয়ার মতো জায়গা নাই তাই আমি এভাবেই ভবন নির্মাণ করতেছি।
এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষের অথোরাইজড অফিসার-২ তানজিব হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হয় নি।
এ বিষয়ে জানতে ডবল মুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মো: রফিক আহমেদ জানান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষ থেকে একটা নোটিশ দেওয়া হয়েছিলো আমরা সেই নোটিশের রিপোর্ট চউক বরাবর পাঠিয়ে দিয়েছি। এরপর যদি ওই জায়গা নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিবো।