কোর্টবাজার স্টেশনে যানজট : ভাসমান দোকানের কারণে জনদুর্ভোগ বেড়েই চলেছে

- আপডেট সময় : ০৮:২২:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ৬৫ বার পড়া হয়েছে
শাকুর মাহমুদ চৌধুরী, উখিয়া
কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়ক উখিয়া উপজেলার ব্যস্ততম ও বহুল আলোচিত বানিজ্যিক স্টেশন কোর্টবাজার, যা স্থানীয় জনগণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাণকেন্দ্র , বর্তমানে লাগামহীন যানজট, অবৈধ পার্কিং ও ফুটপাত দখল করে ভাসমান দোকান বসানোর কারণে প্রতিদিনই ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এই স্টেশনটি উপজেলার চারটি ইউনিয়নের সংযোগস্থল হওয়ায়, ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এটি অত্যন্ত ব্যস্ত থাকে। বিশেষ করে উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে সেবায় নিয়োজিত বিভিন্ন দেশি-বিদেশি এনজিও সংস্থার গাড়ির চলাচল, ইনানী ও টেকনাফগামী পর্যটকদের গাড়ির প্রবাহ স্টেশনটির ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করছে।
কিন্তু, অবৈধভাবে সড়ক ও ফুটপাত দখল করে বসানো দোকানগুলোর কারণে সাধারণ মানুষের চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। রাস্তার এক তৃতীয়াংশ দখল করে দোকানপাট বসিয়ে ব্যবসা করা হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার, ফলমূল, বাদাম, কাপড় বিক্রির দোকান, এমনকি চুলা বসিয়ে ভাপা পিঠা ও পেঁয়াজু তৈরি করা হচ্ছে। ফলে পথচারীরা সড়ক ও ফুটপাত ব্যবহার করতে না পেরে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। একজন পথচারী, জসিম উদ্দিন বলেন, ফুটপাত দিয়েও হাঁটা যায় না, রাস্তা দিয়েও হাঁটা যায় না। সড়ক দখল করে দোকান বসিয়ে সাধারণ মানুষের চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
প্রশাসনের অবহেলাকে দায়ী করছি। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার গাড়ি চালক শাহাদাত হোসেন বলেন, সড়কের ওপর দোকান বসানোর কারণে নিয়মিত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এতে জরুরি রোগী বাহী অ্যাম্বুলেন্সও ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে আটকে থাকে। এছাড়া, সড়কের ওপর অবৈধভাবে পার্কিং করা গাড়িগুলোও যানজট সৃষ্টি করছে। আকবর আহাম্মদ নামে এক পথচারী জানান, সড়ক ও ফুটপাত দখল করে দোকান বসানোর কারণে চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কোর্টবাজারে যানজট লেগে থাকে, যা স্থানীয় জনগণের জন্য অতি কষ্টকর। ফুটপাতের এক পান ব্যবসায়ী, আঞ্জু মিয়া জানান, সড়কের দোকান বসানোর কারণে সিএনজি ও অটোরিকশা চালকদের প্রতিদিন টাকা দিতে হয়, নইলে গাড়ি পার্কিং করে রাখে। স্থানীয় কিছু জমিদারও মাসিক টাকা নিচ্ছে, যা সড়ক দখলের অন্যতম কারণ। এ ব্যাপারে কোর্টবাজার স্টেশনটির ইজারাদার মকবুল হোসাইন মিথুন বলেন, আমি মূল ইজারাদার হলেও সাব ইজারাদারগণ দোকান থেকে টাকা তোলেন। তবে, যদি কোনো অনিয়ম হয়, উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, উখিয়া কোর্টবাজার দোকান মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান জানান, এই এলাকার রোহিঙ্গা অধ্যুষিত হওয়ায়, এখানে এনজিও কর্মীরা ও চাকরিজীবীরা বেশি আসেন। কিন্তু ফুটপাত ও সড়কের ওপর দোকান বসানো অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রশাসন বহুবার অভিযান চালালেও দোকানগুলো পুনরায় বসানো হয়েছে। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশন (ভূমি) যারীন তাসনিম তাসিন জানিয়েছেন, ফুটপাত ও সড়ক দখল করে ভাসমান দোকান বসানো এবং যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ের বিষয়ে আমি ইতিমধ্যেই অবগত হয়েছি। অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, স্থানীয়দের দাবি, সড়ক ও ফুটপাত থেকে এই ভাসমান দোকান উচ্ছেদ এবং অবৈধ পার্কিং বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে তাছাড়াও আমরা দ্রুত সময়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের প্রতি জোরালো আহবান জানাচ্ছি।