ঢাকা ১২:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নবীনগরে নামজারি ও দোকানঘর বন্দোবস্ত করে দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:২১:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
  • / ১৬৬ বার পড়া হয়েছে

মোঃ আক্তারুজ্জামান, সংবাদদাতা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা নুরুল আমিন এর বিরুদ্ধে নামজারি ও সরকারি খাস ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়ার নাম করে (২৯ লক্ষ) ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে গত (সোমবার) ভুক্তভোগী কয়েকজন ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলে অভিযোগের কপি নবীনগর রিপোর্টার্স ক্লাবে সাংবাদিকদের দেওয়া হয়। এবিষয়ে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা নুরুল আমিনের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। অভিযুক্ত ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা হলেন-মো.নুরুল আমিন, তিনি গত (৫ই আগস্ট) সরকার পতনের পর থেকে উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত ছিলেন। সে ২০২৫ সালের (২৯ মে) বদলি হয়ে উপজেলার কাইতলা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগদান করেন। অভিযোগকারীরা হলেন- সলিমগঞ্জ বাজারের কসমেটিক্স ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম মিয়া,মেডিসিন ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া, ইলেকট্রিশিয়ান ব্যবসায়ী হেলাল মিয়া,নিলখী গ্রামে মোঃ অপু মিয়া,আমির হোসেন,ফল ব্যবসায়ী জসিম মিয়া,কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান,টাইলস ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন, হারিছুল হক, সাদেকুর রহমান (নাঈম), শহিদুল ইসলাম (সাঈদ),সলিমগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী আলী হোসেন, ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে,ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা নুরুল আমিন সলিমগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত থাকাকালীন নামজারি ও দোকান ঘর বন্দোবস্ত করে দেয়ার নাম করে ১২ব্যক্তির কাছ থেকে পৃথকভাবে মোট (২৯ লক্ষ) ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।

কিন্তু কথা মতো কাজ করে দিতে না পারায় ভুক্তভোগী ১২ জনের মধ্যে তিনজন ব্যক্তি ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগকারীদের মধ্যে সলিমগঞ্জ বাজারের কসমেটিক্স ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম বলেন, সলিমগঞ্জ ভূমি অফিসের নায়েব নূরুল আমীন আমার কাছ থেকে আমার জমির দাগ নম্বর সংশোধন এবং বাজারের দোকান ঘর তৈরির অনুমতি এনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নগদ (সাড়ে ১১লক্ষ টাকা) হাতিয়ে নিয়েছেন। আমার কাছে উপযুক্ত স্বাক্ষীও প্রমান আছে। ৪ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও এখনো পর্যন্ত কোনো রকম কার্যক্রম করে দেয় নাই,আমি আমার টাকাও ফেরত পায়নি।

এখন শুনতেছি তিনি সলিমগঞ্জ থেকে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। আমি নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। একই কথা বলেন বাজারের মেডিসিন ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া। তিনি জানান- বাজারে সরকারি খাস ভূমি লিজ বন্দোবস্ত করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমার থেকে (৭লক্ষ টাকা )নিয়েছেন নায়েব নুরুল আমিন। এর প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী (কর্মকর্তার) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

একই ভাবে সাদেকুর রহমান (নাঈম)এর কাছ থেকে সলিমগঞ্জ বাজারে খাস ভূমি (ভিট) বন্দোবস্ত করে দেওয়ার নাম করে (২লক্ষ টাকা),বাজারের ইলেকট্রিশিয়ান ব্যবসায়ী হেলাল মিয়ার কাছ থেকে (১ লক্ষ টাকা),নিলখী গ্রামের মোঃ অপু মিয়ার কাছ থেকে (৫০ হাজার টাকা),সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড্ডা গ্রামের শহিদুল ইসলাম (সাঈদ) এর কাছ থেকে(৩ লক্ষ) ১৫ হাজার টাকা,সলিমগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী আলী হোসেন কাছ থেকে (১ লক্ষ) ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। অপরদিকে একই ভাবে নামজারি করে দেওয়ার কথা বলে,দলিল লেখক হারিছুল হক এর কাছ থেকে (২ লক্ষ টাকা),সলিমগঞ্জ ইউনিয়ন নিলখী গ্রামের আমির হোসেন এর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা, সলিমগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীনের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা, সলিমগঞ্জ বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান এর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা, ফল ব্যবসায়ী জসিম মিয়ার কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা, এভাবে ১২ জনের কাছ থেকে মোট ২৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা আত্মসাত করেছেন তিনি।

এবিষয়ে ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা নুরুল আমিনের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিব চৌধুরী বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি এসিল্যান্ড তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

নবীনগরে নামজারি ও দোকানঘর বন্দোবস্ত করে দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৫:২১:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

মোঃ আক্তারুজ্জামান, সংবাদদাতা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা নুরুল আমিন এর বিরুদ্ধে নামজারি ও সরকারি খাস ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়ার নাম করে (২৯ লক্ষ) ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে গত (সোমবার) ভুক্তভোগী কয়েকজন ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলে অভিযোগের কপি নবীনগর রিপোর্টার্স ক্লাবে সাংবাদিকদের দেওয়া হয়। এবিষয়ে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা নুরুল আমিনের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। অভিযুক্ত ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা হলেন-মো.নুরুল আমিন, তিনি গত (৫ই আগস্ট) সরকার পতনের পর থেকে উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত ছিলেন। সে ২০২৫ সালের (২৯ মে) বদলি হয়ে উপজেলার কাইতলা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগদান করেন। অভিযোগকারীরা হলেন- সলিমগঞ্জ বাজারের কসমেটিক্স ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম মিয়া,মেডিসিন ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া, ইলেকট্রিশিয়ান ব্যবসায়ী হেলাল মিয়া,নিলখী গ্রামে মোঃ অপু মিয়া,আমির হোসেন,ফল ব্যবসায়ী জসিম মিয়া,কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান,টাইলস ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন, হারিছুল হক, সাদেকুর রহমান (নাঈম), শহিদুল ইসলাম (সাঈদ),সলিমগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী আলী হোসেন, ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে,ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা নুরুল আমিন সলিমগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত থাকাকালীন নামজারি ও দোকান ঘর বন্দোবস্ত করে দেয়ার নাম করে ১২ব্যক্তির কাছ থেকে পৃথকভাবে মোট (২৯ লক্ষ) ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।

কিন্তু কথা মতো কাজ করে দিতে না পারায় ভুক্তভোগী ১২ জনের মধ্যে তিনজন ব্যক্তি ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগকারীদের মধ্যে সলিমগঞ্জ বাজারের কসমেটিক্স ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম বলেন, সলিমগঞ্জ ভূমি অফিসের নায়েব নূরুল আমীন আমার কাছ থেকে আমার জমির দাগ নম্বর সংশোধন এবং বাজারের দোকান ঘর তৈরির অনুমতি এনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নগদ (সাড়ে ১১লক্ষ টাকা) হাতিয়ে নিয়েছেন। আমার কাছে উপযুক্ত স্বাক্ষীও প্রমান আছে। ৪ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও এখনো পর্যন্ত কোনো রকম কার্যক্রম করে দেয় নাই,আমি আমার টাকাও ফেরত পায়নি।

এখন শুনতেছি তিনি সলিমগঞ্জ থেকে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। আমি নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। একই কথা বলেন বাজারের মেডিসিন ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া। তিনি জানান- বাজারে সরকারি খাস ভূমি লিজ বন্দোবস্ত করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমার থেকে (৭লক্ষ টাকা )নিয়েছেন নায়েব নুরুল আমিন। এর প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী (কর্মকর্তার) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

একই ভাবে সাদেকুর রহমান (নাঈম)এর কাছ থেকে সলিমগঞ্জ বাজারে খাস ভূমি (ভিট) বন্দোবস্ত করে দেওয়ার নাম করে (২লক্ষ টাকা),বাজারের ইলেকট্রিশিয়ান ব্যবসায়ী হেলাল মিয়ার কাছ থেকে (১ লক্ষ টাকা),নিলখী গ্রামের মোঃ অপু মিয়ার কাছ থেকে (৫০ হাজার টাকা),সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড্ডা গ্রামের শহিদুল ইসলাম (সাঈদ) এর কাছ থেকে(৩ লক্ষ) ১৫ হাজার টাকা,সলিমগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী আলী হোসেন কাছ থেকে (১ লক্ষ) ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। অপরদিকে একই ভাবে নামজারি করে দেওয়ার কথা বলে,দলিল লেখক হারিছুল হক এর কাছ থেকে (২ লক্ষ টাকা),সলিমগঞ্জ ইউনিয়ন নিলখী গ্রামের আমির হোসেন এর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা, সলিমগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীনের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা, সলিমগঞ্জ বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান এর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা, ফল ব্যবসায়ী জসিম মিয়ার কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা, এভাবে ১২ জনের কাছ থেকে মোট ২৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা আত্মসাত করেছেন তিনি।

এবিষয়ে ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা নুরুল আমিনের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিব চৌধুরী বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি এসিল্যান্ড তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।