ঢাকা ১০:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চার আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ঘোষণা

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৩৬:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৩১ বার পড়া হয়েছে

মনোযোগ ফেরাতে বিদেশি কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের ব্রিফ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। রোববার (১৭ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এ ব্রিফিং পরিচালনা করেন।

এই আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীন, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, কাতার, সৌদি আরবসহ বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি অংশ নেন। মূল উদ্দেশ্য ছিল চলতি বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ, জাতিসংঘ ও কাতারের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত চারটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বিষয়ে তাদের অবহিত করা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে কক্সবাজারে ২৫ আগস্ট। শিরোনাম— *“অংশীজন সংলাপ: রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে আলোচনার জন্য প্রাপ্ত বার্তা”*। এই আয়োজন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আট বছর পূর্তির দিনকে সামনে রেখে করা হচ্ছে। এতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিতে পারেন।

২৪ থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত কক্সবাজারে বিভিন্ন কর্মসূচি থাকবে। এর মধ্যে পাঁচটি কর্ম অধিবেশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং শরণার্থীশিবির প্রদর্শনী অন্তর্ভুক্ত। আলোচনায় গুরুত্ব পাবে চারটি বিষয়:

* রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি

* শরণার্থীশিবিরে আশার সঞ্চার

* গণহত্যার জবাবদিহি নিশ্চিত করা

* টেকসই সমাধানের পথ খোঁজা

এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে আরেকটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হবে। সর্বশেষ ৬ ডিসেম্বর কাতারের দোহায় আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।

সম্মেলনগুলোতে বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আন্তর্জাতিক দূত, জাতিসংঘের সংস্থা এবং বিদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। পাশাপাশি কক্সবাজারে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিরাও সরাসরি যুক্ত হবেন।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সেই থেকে টানা আট বছর ধরে এ সংকট বহন করছে বাংলাদেশ। বর্তমানে প্রায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারসহ বিভিন্ন শিবিরে অবস্থান করছে। তবে বৈশ্বিক নানা রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ এবং মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে আন্তর্জাতিক মনোযোগ কমেছে। কয়েক বছর ধরে মানবিক সহায়তাও হ্রাস পাচ্ছে।

বাংলাদেশ সরকার মনে করছে, আসন্ন সম্মেলনগুলো রোহিঙ্গা সংকটকে আবারও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোরালোভাবে উপস্থাপন করবে এবং সমাধানের পথে নতুন অগ্রগতি আনতে সহায়ক হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চার আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ঘোষণা

আপডেট সময় : ০১:৩৬:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫

মনোযোগ ফেরাতে বিদেশি কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের ব্রিফ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। রোববার (১৭ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এ ব্রিফিং পরিচালনা করেন।

এই আয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীন, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, কাতার, সৌদি আরবসহ বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি অংশ নেন। মূল উদ্দেশ্য ছিল চলতি বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ, জাতিসংঘ ও কাতারের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত চারটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের বিষয়ে তাদের অবহিত করা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে কক্সবাজারে ২৫ আগস্ট। শিরোনাম— *“অংশীজন সংলাপ: রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে আলোচনার জন্য প্রাপ্ত বার্তা”*। এই আয়োজন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আট বছর পূর্তির দিনকে সামনে রেখে করা হচ্ছে। এতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিতে পারেন।

২৪ থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত কক্সবাজারে বিভিন্ন কর্মসূচি থাকবে। এর মধ্যে পাঁচটি কর্ম অধিবেশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং শরণার্থীশিবির প্রদর্শনী অন্তর্ভুক্ত। আলোচনায় গুরুত্ব পাবে চারটি বিষয়:

* রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি

* শরণার্থীশিবিরে আশার সঞ্চার

* গণহত্যার জবাবদিহি নিশ্চিত করা

* টেকসই সমাধানের পথ খোঁজা

এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে আরেকটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হবে। সর্বশেষ ৬ ডিসেম্বর কাতারের দোহায় আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।

সম্মেলনগুলোতে বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আন্তর্জাতিক দূত, জাতিসংঘের সংস্থা এবং বিদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। পাশাপাশি কক্সবাজারে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিরাও সরাসরি যুক্ত হবেন।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সেই থেকে টানা আট বছর ধরে এ সংকট বহন করছে বাংলাদেশ। বর্তমানে প্রায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারসহ বিভিন্ন শিবিরে অবস্থান করছে। তবে বৈশ্বিক নানা রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ এবং মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে আন্তর্জাতিক মনোযোগ কমেছে। কয়েক বছর ধরে মানবিক সহায়তাও হ্রাস পাচ্ছে।

বাংলাদেশ সরকার মনে করছে, আসন্ন সম্মেলনগুলো রোহিঙ্গা সংকটকে আবারও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোরালোভাবে উপস্থাপন করবে এবং সমাধানের পথে নতুন অগ্রগতি আনতে সহায়ক হবে।