ঢাকা ১১:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফের সক্রিয় ভুয়া দুদক, দিচ্ছে ফোন-তলবি নোটিশ

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:০৪:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৯৮ বার পড়া হয়েছে

ফের সক্রিয় ভুয়া দুদক, দিচ্ছে ফোন-তলবি নোটিশ। ছবি অনলাইন সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে নিজেকে দুদকের সহকারী পরিচালক পরিচয় দিয়ে এভাবেই পরিকল্পনা কমিশনের এক কর্মকর্তাকে দেখা করতে বলেন মো. আশরাফুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি। হ্যালো, জি, কে বলছেন?, ‘আপনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আপনার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামছে। বিষয়টা সেটেলমেন্ট করতে পারি। আপনি দেখা করেন আমার সাথে।’

গত ১৮ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ফয়সাল কবীরকে মোবাইলে ফোন দেন আশরাফুজ্জামান। পরে হোয়াটসঅ্যাপে কবীরের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন তিনি।

আশরাফুজ্জামানের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে দেওয়া ছবিটি দুদকের গাজীপুর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বায়োজিদুর রহমানের। দুদকের লোগো সংবলিত একটি প্ল্যাকার্ডের সামনে দাঁড়িয়ে তোলা ছবিটি দেখে মনে হতেই পারে ছবির হোয়াটসঅ্যাপের ব্যক্তিটি দুদক কর্মকর্তা। তবে বায়োজিদুর রহমানের দাবি, এটি তার নম্বর নয়। ফেসবুক থেকে তার ছবি সংগ্রহ করে বিভিন্ন প্রভাবশালী ও সরকারি কর্মকর্তাকে ফোন দিচ্ছে প্রতারক চক্র, যারা ভুয়া দুদক নামেই পরিচিত।

ফোনে এভাবে বলা হয়, আপনার নামে তদন্ত শুরু করলে চাকরি থাকবে না। আপনি চাইলে আমরা আলাদা বসে এটা সমাধান করতে পারি। এইভাবে প্রতারকটি আমার কাছে টাকা চায়।-ভুক্তভোগী ফয়সাল কবীর, শুধু কর্মকর্তাদের ছবি ব্যবহার করা নয়; দুদকের সিল, লোগো ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তলবি নোটিশও পাঠানো হচ্ছে সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছে।

গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের শতাধিক মন্ত্রী, এমপি, আমলা আর সুবিধাভোগী ভিআইপি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। ক্ষমতার পালাবদলে দুদকের ঢালাও অনুসন্ধানের সুযোগ নিচ্ছে প্রতারক চক্রটি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করছেন।

বায়োজিদুর রহমান বলেন, ‘আমার ছবি ব্যবহার করে অনেক বড় বড় জায়গায় ফোন দিচ্ছে। আমি দুদককে বিষয়টি জানিয়েছি, পাশাপাশি থানায় জিডি করেছি। বিষয়টি খুবই বিব্রতকর।’

ফের সক্রিয় ভুয়া দুদক, দিচ্ছে ফোন-তলবি নোটিশফের সক্রিয় ভুয়া দুদক, দিচ্ছে ফোন-তলবি নোটিশ। ছবি অনলাইন সংগৃহীত

ভুয়া দুদক কর্মকর্তার ফোন পাওয়া ফয়সাল কবীর বলেন, ‘ছবি দেখে, কথা শুনে মনে হয়েছে দুদকের কর্মকর্তা। পরে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, দুদকের কোনো কর্মকর্তা এভাবে ফোন দেন না। ফোনে এভাবে বলা হয়, আপনার নামে তদন্ত শুরু করলে, আপনার চাকরি থাকবে না। আপনি চাইলে আমরা আলাদা বসে এটা সমাধান করতে পারি। এইভাবে প্রতারকটি আমার কাছে টাকা চায়।’ গত ১০ সেপ্টেম্বর নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোকারম হোসেনকে দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়।

৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওই বিবরণী দাখিল করতে বলা হয় একটি তলবের নোটিশে। নোটিশটি পাঠানো হয় মোকারম হোসেনের মুঠোফোন নম্বরে। ১১ সেপ্টেম্বর একইভাবে ময়মনসিংহের ফুলপুর পৌরসভার সচিব মো. আবদুল মোতালেব ও পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. জাকিরুল ইসলামকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে চিঠি পাঠানো হয়। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তিনটি তলবের নোটিশই ভুয়া।

জানা গেছে, এই তিন কর্মকর্তার নামে অনুসন্ধান শুরুই করেনি দুদক। আইন ও বিধি অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হওয়ার পর তার সম্পদ বিবরণী চাইতে পারে দুদক। দুদকের আসল তলবের নোটিশের মতো নোটিশ দেওয়া হয়েছে তাদের। যেখানে স্বাক্ষরকারী ছিলেন উপ-পরিচালক গোলাম মোস্তফা। তবে দুদকের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গোলাম মোস্তফা নামে কেউ নেই সংস্থাটিতে।

ভুক্তভোগী জাকিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে মুঠোফোন নম্বর ও ঠিকানা সংগ্রহ করে আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে এই চিঠি পাঠানো হয়। পরে গোলাম মোস্তফা নামের একজন আমাকে ফোন করেন। পল্লী উন্নয়ন, দুদকসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হই, এটা ভুয়া দুদক। একইভাবে আরও অন্তত এক ডজন কর্মকর্তাকে এ ধরনের চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি।’

আরও পড়ুন: পোশাক খাতে অস্থিরতা কাটিয়ে কাজে ফিরছে শ্রমিকরা

জামিনে বের হয়ে প্রতারকরা আবার অপকর্মে জড়িয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ বা অনুসন্ধানে দুদকের কর্মকর্তারা কাউকে ফোন দেন না। কেউ এমন ফোন পেলে দুদকে কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন।-দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন

দুদকের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুদকের নাম ব্যবহার করে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে একাধিক চক্র। এর আগেও প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে বিভিন্ন চক্রের সদস্যরা। দুদকের ওয়েবসাইট থেকে বা বিভিন্ন উপায়ে তারা তলবের নোটিশ সংগ্রহ করেন। পুরোনো এসব নোটিশ কম্পিউটারে এডিট করে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের পাঠান।

এছাড়া দুদক কর্মকর্তাদের ফেসবুকের আইডি ব্যবহার করেন এসব চক্র। অনুসন্ধান বন্ধ করা, মামলা ঠেকানোর প্রলোভন দিয়ে ৮০ হাজার থেকে তিন লাখ টাকা করে বিভিন্নজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। গত বছরের ১৪ আগস্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ রকম একটি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা সংস্থার লালবাগ বিভাগ।

আরও পড়ুন: কুড়িগ্রাম ক্যাসিনা সম্রাট মাইনুল আটক

তারা হলেন- মো. সেলিম ওরফে তানভীর ইসলাম ওরফে শফিকুর রহমান, মো. সোহাগ পাটোয়ারী, আব্দুল হাই সোহাগ ও মো. আজমীর হোসেন। তাদের কাছ থেকে সাতটি মোবাইল, ১০টি সিম, বাংলা টিভি, ৭১ টিভির কর্ডলেস মাউথ পিস, পত্রিকা, মানবাধিকার কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সাতটি ভুয়া আইডি কার্ড, দুদক কর্তৃক বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানের ১২টি প্রতিবেদন এবং বিভিন্ন ব্যক্তির ফোন নম্বর লেখা তিনটি নোটবুক জব্দ করা হয়।

আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে বজ্রপাতে নিহত ৩, শিশুসহ আহত ৯ জন

চলতি বছরের মার্চ মাসে ভুয়া দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, জামিনে বের হয়ে প্রতারকরা আবার অপকর্মে জড়িয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ বা অনুসন্ধানে দুদকের কর্মকর্তারা কাউকে ফোন দেন না। কেউ এমন ফোন পেলে দুদকে কিংবা আইনশৃঙখলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ফের সক্রিয় ভুয়া দুদক, দিচ্ছে ফোন-তলবি নোটিশ

আপডেট সময় : ০২:০৪:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে নিজেকে দুদকের সহকারী পরিচালক পরিচয় দিয়ে এভাবেই পরিকল্পনা কমিশনের এক কর্মকর্তাকে দেখা করতে বলেন মো. আশরাফুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি। হ্যালো, জি, কে বলছেন?, ‘আপনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আপনার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামছে। বিষয়টা সেটেলমেন্ট করতে পারি। আপনি দেখা করেন আমার সাথে।’

গত ১৮ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ফয়সাল কবীরকে মোবাইলে ফোন দেন আশরাফুজ্জামান। পরে হোয়াটসঅ্যাপে কবীরের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন তিনি।

আশরাফুজ্জামানের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে দেওয়া ছবিটি দুদকের গাজীপুর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বায়োজিদুর রহমানের। দুদকের লোগো সংবলিত একটি প্ল্যাকার্ডের সামনে দাঁড়িয়ে তোলা ছবিটি দেখে মনে হতেই পারে ছবির হোয়াটসঅ্যাপের ব্যক্তিটি দুদক কর্মকর্তা। তবে বায়োজিদুর রহমানের দাবি, এটি তার নম্বর নয়। ফেসবুক থেকে তার ছবি সংগ্রহ করে বিভিন্ন প্রভাবশালী ও সরকারি কর্মকর্তাকে ফোন দিচ্ছে প্রতারক চক্র, যারা ভুয়া দুদক নামেই পরিচিত।

ফোনে এভাবে বলা হয়, আপনার নামে তদন্ত শুরু করলে চাকরি থাকবে না। আপনি চাইলে আমরা আলাদা বসে এটা সমাধান করতে পারি। এইভাবে প্রতারকটি আমার কাছে টাকা চায়।-ভুক্তভোগী ফয়সাল কবীর, শুধু কর্মকর্তাদের ছবি ব্যবহার করা নয়; দুদকের সিল, লোগো ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া তলবি নোটিশও পাঠানো হচ্ছে সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছে।

গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের শতাধিক মন্ত্রী, এমপি, আমলা আর সুবিধাভোগী ভিআইপি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। ক্ষমতার পালাবদলে দুদকের ঢালাও অনুসন্ধানের সুযোগ নিচ্ছে প্রতারক চক্রটি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করছেন।

বায়োজিদুর রহমান বলেন, ‘আমার ছবি ব্যবহার করে অনেক বড় বড় জায়গায় ফোন দিচ্ছে। আমি দুদককে বিষয়টি জানিয়েছি, পাশাপাশি থানায় জিডি করেছি। বিষয়টি খুবই বিব্রতকর।’

ফের সক্রিয় ভুয়া দুদক, দিচ্ছে ফোন-তলবি নোটিশফের সক্রিয় ভুয়া দুদক, দিচ্ছে ফোন-তলবি নোটিশ। ছবি অনলাইন সংগৃহীত

ভুয়া দুদক কর্মকর্তার ফোন পাওয়া ফয়সাল কবীর বলেন, ‘ছবি দেখে, কথা শুনে মনে হয়েছে দুদকের কর্মকর্তা। পরে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, দুদকের কোনো কর্মকর্তা এভাবে ফোন দেন না। ফোনে এভাবে বলা হয়, আপনার নামে তদন্ত শুরু করলে, আপনার চাকরি থাকবে না। আপনি চাইলে আমরা আলাদা বসে এটা সমাধান করতে পারি। এইভাবে প্রতারকটি আমার কাছে টাকা চায়।’ গত ১০ সেপ্টেম্বর নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোকারম হোসেনকে দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়।

৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওই বিবরণী দাখিল করতে বলা হয় একটি তলবের নোটিশে। নোটিশটি পাঠানো হয় মোকারম হোসেনের মুঠোফোন নম্বরে। ১১ সেপ্টেম্বর একইভাবে ময়মনসিংহের ফুলপুর পৌরসভার সচিব মো. আবদুল মোতালেব ও পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. জাকিরুল ইসলামকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে চিঠি পাঠানো হয়। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তিনটি তলবের নোটিশই ভুয়া।

জানা গেছে, এই তিন কর্মকর্তার নামে অনুসন্ধান শুরুই করেনি দুদক। আইন ও বিধি অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হওয়ার পর তার সম্পদ বিবরণী চাইতে পারে দুদক। দুদকের আসল তলবের নোটিশের মতো নোটিশ দেওয়া হয়েছে তাদের। যেখানে স্বাক্ষরকারী ছিলেন উপ-পরিচালক গোলাম মোস্তফা। তবে দুদকের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গোলাম মোস্তফা নামে কেউ নেই সংস্থাটিতে।

ভুক্তভোগী জাকিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে মুঠোফোন নম্বর ও ঠিকানা সংগ্রহ করে আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে এই চিঠি পাঠানো হয়। পরে গোলাম মোস্তফা নামের একজন আমাকে ফোন করেন। পল্লী উন্নয়ন, দুদকসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হই, এটা ভুয়া দুদক। একইভাবে আরও অন্তত এক ডজন কর্মকর্তাকে এ ধরনের চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি।’

আরও পড়ুন: পোশাক খাতে অস্থিরতা কাটিয়ে কাজে ফিরছে শ্রমিকরা

জামিনে বের হয়ে প্রতারকরা আবার অপকর্মে জড়িয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ বা অনুসন্ধানে দুদকের কর্মকর্তারা কাউকে ফোন দেন না। কেউ এমন ফোন পেলে দুদকে কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন।-দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন

দুদকের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুদকের নাম ব্যবহার করে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে একাধিক চক্র। এর আগেও প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে বিভিন্ন চক্রের সদস্যরা। দুদকের ওয়েবসাইট থেকে বা বিভিন্ন উপায়ে তারা তলবের নোটিশ সংগ্রহ করেন। পুরোনো এসব নোটিশ কম্পিউটারে এডিট করে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের পাঠান।

এছাড়া দুদক কর্মকর্তাদের ফেসবুকের আইডি ব্যবহার করেন এসব চক্র। অনুসন্ধান বন্ধ করা, মামলা ঠেকানোর প্রলোভন দিয়ে ৮০ হাজার থেকে তিন লাখ টাকা করে বিভিন্নজনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। গত বছরের ১৪ আগস্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ রকম একটি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা সংস্থার লালবাগ বিভাগ।

আরও পড়ুন: কুড়িগ্রাম ক্যাসিনা সম্রাট মাইনুল আটক

তারা হলেন- মো. সেলিম ওরফে তানভীর ইসলাম ওরফে শফিকুর রহমান, মো. সোহাগ পাটোয়ারী, আব্দুল হাই সোহাগ ও মো. আজমীর হোসেন। তাদের কাছ থেকে সাতটি মোবাইল, ১০টি সিম, বাংলা টিভি, ৭১ টিভির কর্ডলেস মাউথ পিস, পত্রিকা, মানবাধিকার কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সাতটি ভুয়া আইডি কার্ড, দুদক কর্তৃক বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানের ১২টি প্রতিবেদন এবং বিভিন্ন ব্যক্তির ফোন নম্বর লেখা তিনটি নোটবুক জব্দ করা হয়।

আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে বজ্রপাতে নিহত ৩, শিশুসহ আহত ৯ জন

চলতি বছরের মার্চ মাসে ভুয়া দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, জামিনে বের হয়ে প্রতারকরা আবার অপকর্মে জড়িয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ বা অনুসন্ধানে দুদকের কর্মকর্তারা কাউকে ফোন দেন না। কেউ এমন ফোন পেলে দুদকে কিংবা আইনশৃঙখলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন।