ভাঙ্গুড়ায় সরিষা ফুলের সমারোহ

মেহেদী হাসান, ভাঙ্গুড়া

পৌষের সকালে শিশির ভেজা ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়ানো হলুদ ফুলের সমারোহ। সরিষা ফুলের হলুদ রঙে ভরে উঠেছে ফসলের মাঠ। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে প্রকৃতির রূপ বৈচিত্র্য। সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য পাল্টে দিয়েছে দেশের উত্তরের জেলা পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ সরিষার মাঠে একদিকে চলছে মধু সংগ্রহ অন্যদিকে প্রকৃতি-প্রেমিকদের আনাগোনা।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গত বছরের চেয়ে এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় প্রান্তিক চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসসূত্রে জানা গেছে, কৃষি অফিসের কর্মকর্তাগণ কৃষকের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করায় কৃষকরা বর্ষা চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ অঞ্চলের প্রান্তিক চাষিরা একই জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছে। কৃষি বিভাগ প্রতিনিয়ত কৃষকের সরিষা ক্ষেত দেখে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। সরিষা একটি লাভ জনক ফসল। সরিষার ফলন ঘরে তোলার সঙ্গেই আবারও একই জমিতেই কৃষকরা বোরো চাষ করবেন। সরিষা বিক্রি করে কৃষকেরা বোরো আবাদের জন্য স্বল্প খরচ ও কম পরিশ্রমেই সরিষার জমিতে ইরি-বোরো আবাদ হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হওয়ায় সরিষা চাষাবাদ এ অঞ্চলে দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দেওয়াসহ সরিষার ভালো দামের আশায়ও করছেন ওই সব প্রান্তিক চাষিরা।

উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের বড়পুকুরিয়া গ্রামের কৃষক আবুল কালাম জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে  তিনি এবছর ৪ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষার চাষাবাদ করেছেন। গাছে গাছে প্রচুর পরিমাণে ফুল ধরায় আশানুরূপ ফলন হবে বলে মনে করছেন তিনি। ফলন ভাল দেখায় আশা বিঘা প্রতি ৫ থেকে ৬ মন করে সরিষা ঘরে তুলবেন বলে আশা করছেন এই কৃষক।

একই উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের কৃষক শিরু মিয়া ও বকুল মিয়া বলেন, তারা প্রত্যেকেই জমিতে সরিষার চাষাবাদ করেছেন। প্রতি বছরেই জমিগুলোতে সরিষার চাষাবাদ অল্প খরচেই লাভবান হন। বর্ষা চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জমিতেই কম খরচে সরিষার আবাদ করে থাকেন। সরিষা বিক্রির টাকা দিয়ে তারা ইরি-বোরোর চাষাবাদ খরচ মেটানো সম্ভব হয় বলে জানান চাষিরা। তবে এবছর সরিষার ফলন ভাল দেখায় হাসি ফুটেছে ওই ভাঙ্গুড়ায় শতশত চাষিদের।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. শারমিন জাহান বলেন, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ বছর উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে বিভিন্ন অঞ্চলে ও মোট ৬৫০০ হেক্টর জমিতে চাষিরা সরিষার চাষাবাদ করেছে। সরিষা চাষাবাদের জন্য ৪৫০০ জন কৃষকদের মাঝে বিনা মূল্যে সরিষার বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও কৃষি বিভাগ সব সময় কৃষকের মাঠে মাঠে গিয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আশা করছি চাষিরা সরিষা চাষে লাভবান হবে।

প্রলয় ডেস্ক/আ

Recent Posts

২০ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদের মতামত জানাবে বিএনপি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রণীত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর চূড়ান্ত খসড়া পর্যালোচনা করে আগামী ২০ আগস্টের…

52 minutes ago

মারা গেলেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ক্রিকেটার সিম্পসন

জমিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক টেস্ট অধিনায়ক এবং প্রথম পূর্ণকালীন কোচ বব সিম্পসন। ৮৯ বছর বয়সে সিডনিতে…

2 hours ago

গাজাবাসীদের জোরপূর্বক স্থানান্তরের প্রস্তুতি

ইসরায়েল গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে অধিবাসীদের দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। শনিবার (১৬ আগস্ট) ইসরায়েলি…

2 hours ago

না ফেরার দেশে কারা সহকারী মহাপরিদর্শক আবু তালেব

অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মো. আবু তালেব আর নেই। রোববার (১৭ আগস্ট) ভোরে হঠাৎ অসুস্থ…

3 hours ago

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের জামিন শুনানি অক্টোবরে

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ…

3 hours ago

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চার আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ঘোষণা

মনোযোগ ফেরাতে বিদেশি কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের ব্রিফ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। রোববার (১৭ আগস্ট)…

3 hours ago

This website uses cookies.