বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৭:১৫ পূর্বাহ্ন
মনিরুজ্জামান তুহিন, ইবি সংবাদদাতা
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে(ইবি) দেশব্যাপী নারীদের ওপর সহিংসতা, নিপীড়ন, ধর্ষণ, অনলাইনে হেনস্তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবনতি ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইবি শাখা।
সোমবার (১০ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে দুপুর ১২ টায় এ মানববন্ধন করেন তারা। এসময় চলমান ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে না পারলে সরকারের পদত্যাগ দাবি জানান নেতাকর্মীরা।
এসময় জান্নাতুল আফরিনা শাপলা নামের এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, আমরা দেশের সব কাজে ছেলেদের পাশাপাশি থাকি। তাহলে কেন ছেলেদের দ্বারা আমরা শাসিত হবো? কেন আমরা রাস্তায় বের হতে পারি না? আমরা কি কবরে গিয়ে নিরাপদ হব? আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? আমরা আমাদের নিরাপত্তা চাই। আমরা ধর্ষকের ফাঁসি চাই। যদি ধর্ষকের ফাঁসি দিতে না-ই পারেন তাহলে আপনাদের কাজ কী?
এসময় শাখা ছাত্রদলের সদস্য রাফিজ আহমেদ বলেন, বর্তমান সরকার সংস্কারের নামে সম্পূর্ণ অরাজকতা সৃষ্টি করতেছে। তারা ব্যর্থ। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। নারী জাতি আমাদের সাথে মা, বোন, নানি, দাদি ইত্যাদি সম্মানসূচক সম্পর্ক রয়েছে। আমরা চলমান পরিস্থিতির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
শাখা ছাত্রদলের সদস্য নূর উদ্দিন বলেন, শিশু ও নারী নির্যাতনে আহাজারি দেখে আমরা প্রতিবাদে মাঠে নেমেছি। গত ৫ আগস্ট পর একটা হায়েনার দল বিভিন্নভাবে উস্কে দিচ্ছে। ব্যাংক লুট, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, নারী নির্যাতন থেকে শুরু করে এমন কোনো হীন কাজ নাই যা তারা করেনি। আমরা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পক্ষ থেকে এর নিন্দা জানাচ্ছি। নারীর নিরাপত্তার প্রশ্নে ছাত্রদল সবসময় মাঠে থাকবে।
আরো পড়ুন—
ইবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, আমাদের বোনদের কেন ধর্ষণ করা হচ্ছে? যেদিকে তাকায় সেদিকে ধর্ষণ আর ধর্ষণ। মনে হচ্ছে দেশে কোনো সরকার নাই, পতিত সরকারের সব কর্মকর্তারা প্রশাসনের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ পদে এখনো ঘাপটি মেরে আছে। তাদেরকে অতিদ্রুত চিহ্নিত করতে হবে। অন্তর্বতীকালীন সরকার সংস্কারের নামে সময় খেলাপ করা হচ্ছে, সারাদেশে লুটপাট চলছে। ইবিতেও শিক্ষক দ্বারা নারীরা হেনস্তা হয় কিন্তু তারা লোক লজ্জা ভয়ে বলতে পারে না। অনতিবিলম্ব আমরা ধর্ষক মুক্ত বাংলাদেশ চাই। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কোনো সাম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠান বা কোনো একক গোষ্ঠীর নই। এখানে সবাই যার যার নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চা করবে। কেউ বাঁধা দিতে পারবে না।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল কে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, উনি কি আইনের শাসন দেখেন না? উনি কি সারাদেশে অপকর্ম চোখে দেখেন না? সারাদেশে অপকর্মকাণ্ড অতিদ্রুত থামান, নাহলে পতিত সরকারের মতো পালিয়ে যেতে বাধ্য হবেন। এসময় তিনি ব্যর্থ সরকার হিসেবে আখ্যা দিয়ে পদত্যাগ দাবি জানান।
এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘ধর্ষকের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’ ‘আমাদের বোনের কান্না আর না আর না’, ‘বোন তোমার ভয় নাই রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘ধর্ষকের কোনো ক্ষমা নাই, দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই’, ‘তনু তানিয়া নুসরাত আছিয়া তারপর কে?’ ‘দড়ি লাগলে দড়ি নে ধর্ষকের ফাঁসি দে’, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন ইন্টিরিম জবাব দে।’ ‘সারাবাংলায় খবর দে ধর্ষকের কবর দে’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
প্রলয়/মোমিন তালুকদার