রাজধানী ঢাকা যেন এখন প্রতিদিনের আন্দোলনের শহর। নানা দাবিদাওয়া নিয়ে নিয়মিতই রাস্তায় নামছে ছাত্র, শিক্ষক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন। ফলে অচল হয়ে পড়ছে শহরের প্রধান সড়কগুলো, সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট আর জনদুর্ভোগ।
গত বছর ‘জুলাই আন্দোলনের’ মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে। এরপর থেকেই ঢাকার রাজপথে একের পর এক আন্দোলন চলে আসছে।
সম্প্রতি ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করে। ইসলামি দলগুলোরও এতে সমর্থন ছিল। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে যমুনা ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে পর্যন্ত। এরপর সরকার আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, বিচার কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত।
একই সময়ে নার্সিং শিক্ষার্থীরা ডিগ্রি স্নাতক সমতুল্য করার দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করে। পাশাপাশি কাকরাইল মোড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবাসন ভাতা বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভ করে।
এছাড়া চলমান রয়েছে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনসহ আরও নানা কর্মসূচি।
ফলে নগরবাসীর জীবন হয়ে উঠেছে দুঃসহ। অফিসগামী, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স কিংবা দিনমজুর—সবার পথেই বাধা আন্দোলনের কারণে। মানুষ বলছে, আন্দোলন হোক, কিন্তু রাস্তা বন্ধ করে জনভোগান্তি নয়।
চাকরিজীবী আব্দুল হামিদ বলেন, “প্রতিদিন কোথাও না কোথাও রাস্তা বন্ধ থাকে। সময়মতো অফিসে পৌঁছাতে পারছি না, নোটিশও পেয়েছি। চাকরি হারাতে বসেছি।”
বাসচালক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “গাড়ি চালানোই দায় হয়ে পড়েছে। সারা দিন বসে থাকতে হয়, রোজগার হয় না।”
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার সড়ক অবরোধ না করার অনুরোধ জানানো হলেও আন্দোলনকারীরা তাতে কর্ণপাত করছেন না। বরং তারা মনে করছেন, যত অচলাবস্থা হবে, দাবি আদায়ের পথ তত সহজ হবে।