মিঠাপুকুরে গড়ে উঠেছে ৪ শতাধিক অবৈধ করাতকল

- আপডেট সময় : ০৪:৪৩:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪
- / ৮০ বার পড়া হয়েছে
মিঠাপুকুর সংবাদদাতা
নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মিঠাপুকুরের যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ করাতকল। উপজেলার ১৭ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন ব্যস্ততম সড়কের পাশে এবং ঘন জন বসতিপূর্ণ এলাকায় যত্রতত্র গড়ে ওঠা এসব অবৈধ করাতকলে নির্বিচারে চেরাই করা হচ্ছে নানা প্রজাতির গাছ। এতে একদিকে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে জলবায়ু, অন্যদিকে দূষিত হচ্ছে সামাজিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশ।
জানা গেছে, এসব করাত কলের (ছ,মিল) র, কোনো সরকারি অনুমোদন বা লাইসেন্স না থাকায় সরকারও বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আইন অমান্য করে গড়ে ওঠা এসব করাত কলের মালিকের বিরুদ্ধে রহস্য জনক করনে নেয়া হচ্ছে না কোনো আইনগত পদক্ষেপ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বনবিভাগের নীতিমালা (সংরক্ষিত আইন) অমান্য করে রংপুরের মিঠাপুকুরে গড়ে ওঠেছে ৪ শতাধিক অবৈধ করাতকল। এর মধ্যে মাত্র ৮/১০ টি করাত কলের লাইসেন্স বা সরকারি অনুমোদন রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, বন বিভাগের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ওইসব করাত কলের মালিকের কাছ থেকে নিয়মিত মোটা অংকের মাসোহারা নিয়ে থাকেন। অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা
করাতকলের কারণে নীরব পল্লী অঞ্চলেও শব্দ দূষণের শিকার হচ্ছে পরিবেশ। সেই সাথে কাঠের গুঁড়া বাতাসে ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে জনসাধারণ। সড়কের পাশে গড়ে ওঠা বেশির ভাগ করাতকলের জন্য বহন করে নিয়ে আসা গাছের গুঁড়ি লোড-আন লোডিংয়ের সময় যানবাহন চলাচল ও পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কের পাশে ফেলে রাখা হচ্ছে বড় বড় গাছের গুঁড়ি। এতে দুর্ঘটনায় পড়ছে অনেক যানবাহন।
উপজেলার একাধিক করাতকল মালিক জানান, উপজেলা পর্যায়ে করাতকল তদরকির জন্য কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। তারা বলেন, বৈধ কোনো অনুমোদন না থাকলেও সরকারের নিষিদ্ধ কোনো গাছ এখানে কাটা হয় না। তবে করাত কলের অনুমতিপত্র পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করে করাত কলের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। শাল্টিগোপালপুর বনবিভাগ সূত্র জানায়, উপজেলায় প্রায় ৪ শতাধিক করাত কল রয়েছে। এসব করাত কলের মধ্যে ৮/১০টি টি করাত কলের লাইসেন্স রয়েছে। আর ৫২ টি করাতকল লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে।
আরও পড়ুন:
- মিঠাপুকুরে আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক
- ফুলবাড়ীর জলাশয়গুলোতে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কচুরিপানা, নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের
- পটুয়াখালীতে বিম ধসে দুই শ্রমিকের মৃত্যু
মিঠাপুকুরের শাল্টিগোপাল পুর (ভারপ্রাপ্ত) রেন্জের কর্মকর্তা রুহুল আমিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলা হলে তিনি জানান, করাত কলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ইতিমধ্যে অনেক করার কল সিলগালা করা হলে ও পরবর্তী মালিকরা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই তা আবার চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র না পেলে বনবিভাগের লাইসেন্স দেয়ার কোনো এখতিয়ার নেই।
এ ব্যাপারে রংপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোল্লা মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। সচেতন এলাকাবাসী জানান, হাটবাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সড়ক-মহাসড়ক এবং জনবসতিপূর্ণ এলাকায় গড়ে ওঠা করাত কলগুলো পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। তারা আরো বলেন, নিয়মনীতি বহির্ভূতভাবেই গড়ে ওঠেছে এসব করাত কল। এরা অবাধে কাঠ চিঁড়াই করায় উজাড় হচ্ছে বনঞ্চল। পরিবেশ অধিদফতরের এসব অবৈধ করাত কলের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে মনে করেন।,
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন বিট জানান, আমাদের নিজস্ব কোনো ম্যাজিস্ট্রেট নেই। তাই জেলা প্রশাসনের সহায়তায় আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হয়। খুব দ্রুত জেলা প্রশাসনের সহায়তায় আবারো অবৈধ করাত কলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।