ঢাকা ০৪:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

টিকটক বানাতে ডেকে গণধর্ষণের পর জোরপূর্বক নগ্ন ভিডিও ধারণ, ইউপি সদস্যের ছেলেসহ আটক ৬

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:০৪:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১৩৬১ বার পড়া হয়েছে

মারিয়া ইসলাম, প্রতিবেদক

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় এক তরুনীকে গণধর্ষনের পর জোরপূর্বক ওই তরুনী ও যুবকের নগ্ন ভিডিও ধারনের অভিযোগে এক মেম্বারের ছেলেসহ ৬ জন যবককে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার গভীররাতে উপজেলার চুমুরদী ইউনিয়নের বাবলাতলা গ্রাম থেকে আটক করা হয় অভিযুক্তদের। এসময় মেম্বারের ছেলের মোবাইলে ধারণ করা নগ্নভিডিও ফুঁটেজগুলি জব্দ করা হয়। ভুক্তভোগী ওই তরুণীও থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোকসেদুর রহমান জানান, ওই তরুণী অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত ৬ যুবককে আটক করা হয়েছে।
ওসি আরও জানায়, তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন তারা। এতে ধর্ষণের দুইটি মামলা ও পর্ণগ্রাফি আইনে একটি মামলার প্রস্তুতী চলছে। তবে, আটককৃত যুবকদের পরিচয় যাচাই বাছাই চলছে। আইনগত প্রকৃয়া শেষে এক প্রেস রিলিজে বিস্তারিত জানানো হবে।

পুুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বাবলাতলা গ্রামের স্থানীয় আকরাম খাঁন নামের এক টিকটকার ও ভিডিও ক্রিয়েটর ভুক্তভোগি ওই তরুণীকে (২০) একটি নতুন টিকটক ভিডিও তৈরীর জন্য বোয়ালমারী উপজেলা থেকে ভাঙ্গায় ডেকে আনা হয়। এতে আকরামের সহযোগি ছিলেন মধুখালী উপজেলার জুয়েল মোল্লা ও অজ্ঞাত আরও এক যুবক। এরপর গত ৩১ ডিসেম্বর উপজেলার ঘারুয়া গ্রামে জনৈক এক বাড়ির মালিকের বসতঘরে আটকে রেখে ওই তরুনীকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রথম দফায় ধর্ষণ করে আকরাম হোসেন।

এরপর সেখান থেকে ওই তরুনীকে আকরাম ও তাঁর সহযোগী দুই যুবক গতকাল ৩ জানুয়ারী উপজেলার বাবলাতলা বাজার সংলগ্ন একটি ভাড়াবাসায় ওঠে। সেই বাড়ির মালিককে আকরাম ভুক্তভোগী ওই তরুণীকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বাসা ভাড়া নেয়। এরপরও বিষয়টি স্থানীয়দের সন্দেহ হলে চুমুরদী ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ আনারুদ্দিন ও তাঁর ছেলে ছাইদুল মোল্লাসহ তাদের আরও ৫/৭ সহযোগীরা আকরামসহ ওই তরুনীকে বসতঘরে আটকে রাখে। ভুক্তভোগী ওই তরুনীর বরাত দিয়ে পুলিশ আরও জানায়, এরপর রাত সাড়ে ১২ টার পর থেকে প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী ইউপি সদস্যের ছেলে ছাইদুলসহ তাঁর সহযোগী ৫/৬ জন যুবক ওই তরুণী ও আকরামকে বিবস্র করে বেধড়ক মারপিট চালায় এবং বিভিন্ন অশ্লীল অঙ্গ-ভঙ্গিতে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। এক পর্যায়ে, ওই তরুনীর অশ্লিল ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইল ও মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন ইউপি সদস্যের ছেলে ও তাঁর সহযোগীরা। পরবর্তিতে তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে কিছু টাকাও দেয় আকরাম ও তাঁর সহযোগীরা। এরপর ভিডিও’র ভয় দেখিয়ে আরও মোটা অংকের অর্থ দাবি করে সেখান থেকে চলে যায় ছাইদুল ও তাঁর সহযোগিরা। পুলিশ আরও জানায়, ওই রাতেই ওই তরুণীকে দুই দফায় ধর্ষণ করে আকরাম ও তাঁর সহযোগী জুয়েল মোল্লা। পরর্তিতে এ ঘটনার বিষয়টি থানা পুলিশ জানতে পারলে গভীররাতে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগী ও তরুণীসহ ৬জন যুবককে আটক করে পুলিশ।

এ বিষয়ে চুমুরদী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনারুদ্দিন মোল্লা জানায়, ঘটনাটি জানাজানি হলে প্রথমে স্থানীয় শালিসের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হয়। তাঁর ছেলের মোবাইলে অশ্লিল ভিডিও ধারণের বিষয়ে জানতে চাইলে, সে বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হন নি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

টিকটক বানাতে ডেকে গণধর্ষণের পর জোরপূর্বক নগ্ন ভিডিও ধারণ, ইউপি সদস্যের ছেলেসহ আটক ৬

আপডেট সময় : ০৭:০৪:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫

মারিয়া ইসলাম, প্রতিবেদক

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় এক তরুনীকে গণধর্ষনের পর জোরপূর্বক ওই তরুনী ও যুবকের নগ্ন ভিডিও ধারনের অভিযোগে এক মেম্বারের ছেলেসহ ৬ জন যবককে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার গভীররাতে উপজেলার চুমুরদী ইউনিয়নের বাবলাতলা গ্রাম থেকে আটক করা হয় অভিযুক্তদের। এসময় মেম্বারের ছেলের মোবাইলে ধারণ করা নগ্নভিডিও ফুঁটেজগুলি জব্দ করা হয়। ভুক্তভোগী ওই তরুণীও থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোকসেদুর রহমান জানান, ওই তরুণী অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত ৬ যুবককে আটক করা হয়েছে।
ওসি আরও জানায়, তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন তারা। এতে ধর্ষণের দুইটি মামলা ও পর্ণগ্রাফি আইনে একটি মামলার প্রস্তুতী চলছে। তবে, আটককৃত যুবকদের পরিচয় যাচাই বাছাই চলছে। আইনগত প্রকৃয়া শেষে এক প্রেস রিলিজে বিস্তারিত জানানো হবে।

পুুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বাবলাতলা গ্রামের স্থানীয় আকরাম খাঁন নামের এক টিকটকার ও ভিডিও ক্রিয়েটর ভুক্তভোগি ওই তরুণীকে (২০) একটি নতুন টিকটক ভিডিও তৈরীর জন্য বোয়ালমারী উপজেলা থেকে ভাঙ্গায় ডেকে আনা হয়। এতে আকরামের সহযোগি ছিলেন মধুখালী উপজেলার জুয়েল মোল্লা ও অজ্ঞাত আরও এক যুবক। এরপর গত ৩১ ডিসেম্বর উপজেলার ঘারুয়া গ্রামে জনৈক এক বাড়ির মালিকের বসতঘরে আটকে রেখে ওই তরুনীকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রথম দফায় ধর্ষণ করে আকরাম হোসেন।

এরপর সেখান থেকে ওই তরুনীকে আকরাম ও তাঁর সহযোগী দুই যুবক গতকাল ৩ জানুয়ারী উপজেলার বাবলাতলা বাজার সংলগ্ন একটি ভাড়াবাসায় ওঠে। সেই বাড়ির মালিককে আকরাম ভুক্তভোগী ওই তরুণীকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বাসা ভাড়া নেয়। এরপরও বিষয়টি স্থানীয়দের সন্দেহ হলে চুমুরদী ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ আনারুদ্দিন ও তাঁর ছেলে ছাইদুল মোল্লাসহ তাদের আরও ৫/৭ সহযোগীরা আকরামসহ ওই তরুনীকে বসতঘরে আটকে রাখে। ভুক্তভোগী ওই তরুনীর বরাত দিয়ে পুলিশ আরও জানায়, এরপর রাত সাড়ে ১২ টার পর থেকে প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী ইউপি সদস্যের ছেলে ছাইদুলসহ তাঁর সহযোগী ৫/৬ জন যুবক ওই তরুণী ও আকরামকে বিবস্র করে বেধড়ক মারপিট চালায় এবং বিভিন্ন অশ্লীল অঙ্গ-ভঙ্গিতে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। এক পর্যায়ে, ওই তরুনীর অশ্লিল ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইল ও মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন ইউপি সদস্যের ছেলে ও তাঁর সহযোগীরা। পরবর্তিতে তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে কিছু টাকাও দেয় আকরাম ও তাঁর সহযোগীরা। এরপর ভিডিও’র ভয় দেখিয়ে আরও মোটা অংকের অর্থ দাবি করে সেখান থেকে চলে যায় ছাইদুল ও তাঁর সহযোগিরা। পুলিশ আরও জানায়, ওই রাতেই ওই তরুণীকে দুই দফায় ধর্ষণ করে আকরাম ও তাঁর সহযোগী জুয়েল মোল্লা। পরর্তিতে এ ঘটনার বিষয়টি থানা পুলিশ জানতে পারলে গভীররাতে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগী ও তরুণীসহ ৬জন যুবককে আটক করে পুলিশ।

এ বিষয়ে চুমুরদী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনারুদ্দিন মোল্লা জানায়, ঘটনাটি জানাজানি হলে প্রথমে স্থানীয় শালিসের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হয়। তাঁর ছেলের মোবাইলে অশ্লিল ভিডিও ধারণের বিষয়ে জানতে চাইলে, সে বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হন নি।