ঢাকা ০১:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

নওগাঁয় গুলিবিদ্ধ বিএনপি কর্মীকে দেখতে আসেনি কেউ

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:০৯:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১০৪ বার পড়া হয়েছে

নওগাঁয় গুলিবিদ্ধ বিএনপি কর্মীকে দেখতে আসেনি কেউ। ফাইল ছবি

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের অমৃতপুর গ্রামের মৃত-আব্দুল লতিফ মন্ডলের ছেলে মোকাব্বের হোসেন। তিনি পেশায় একজন কৃষক ও ছোট ব্যবসায়ী। স্ত্রীর চাকরীর সুবাদে মাঝে মাঝে বগুড়ায় স্ত্রীর কাছে যান কৃষক মোকাব্বের। মোকাব্বের দুই মেয়ে সন্তানের জনক। বড় মেয়ে ফাতেমাতুজ জোহরা মৌ এর বয়স ৭ বছর আর ছোট মেয়ের সাদিয়া আশরাফী জান্নাত এর বয়স ১ বছর। তার সুস্থ্যতা তার পরিবারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

মোকাব্বের বলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫আগস্ট বিবেকের তাড়নায় রাজপথে বের হই। তাছাড়া আমি বিএনপি রাজনীতির সাথে ও জড়িত। ওদিন দুপুরে বগুড়া মাটিডালী মোড়ে পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে সাধারণ মানুষদের মারছিলো। এমন ঘটনা দেখে আমি অন্য বিক্ষুদ্ধ সাধারণ মানুষদের সঙ্গে যোগ দিয়ে পুলিশদের ঘেরাও করার চেস্টা করি। তখন পুলিশ পালাতে গিয়ে এলোপাতাড়ী ভাবে ফাঁকা রাবার বুলেট ছোড়ে। এই সময় প্রায় ৫০টিরও বেশি রাবার বুলেট আমার শরীরে প্রবেশ করে।

এমতাবস্থায় ২/৩ জন আমাকে উদ্ধার করে পাশের হাসপাতালে নিলে সেখানে কোন চিকিৎসক না থাকায় পরে অন্য একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে ও চিকিৎসা প্রদান না করলে বাসায় একজন মেডিকেল শিক্ষার্থীর সহায়তায় অর্ধেক গুলি শরীরের ভিতর থেকে বের করতে পারলেও শরীরের অনেক গভীরে থাকা গুলি গুলো এখনোও পর্যন্ত বের করা সম্ভব হয়নি। ১মাস ধরে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছি এখনো ঠিকমত চলাফেরা করতে পারিনা তবে আমার আক্ষেপ অন্য দল বা আমি যে দল করি, (বিএনপি) এখন পর্যন্ত দলের একজন লোক ও আমাকে দেখতে এলোনা বা আমার কোন খোজঁ খবর নিলনা তাহলে মানুষ কিভাবে দলে কাজ করবে।

নওগাঁয় গুলিবিদ্ধ বিএনপি কর্মীকে দেখতে আসেনি কেউ
নওগাঁয় গুলিবিদ্ধ বিএনপি কর্মীকে দেখতে আসেনি কেউ। ফাইল ছবি

মেডিকেল শিক্ষার্থী সিয়াম হোসেন বলেন, যতটুকু সম্ভব গুলি গুলো বের করার চেষ্টা করেছি, এখন একজন বিশেজ্ঞ সার্জনের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসার দ্বারা শরীরে থাকা বাকি গুলিগুলো বের করতে হবে। যদি দ্রুত উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তাহলে আগামীতে তিনি ব্যথা, যন্ত্রনা ও অন্যান্য নানা সমস্যার কারণে স্বাভাবিক চলাচল করতে পারবেন না।

এদিকে তার স্ত্রী হোমায়রা বলেন গত এক মাসের বেশি সময় ধরে চিকিৎসা ব্যয় চালাতে পারলেও বর্তমানে চিকিৎসার খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছে তার পরিবার।যদি সরকারি ভাবে আর্থিক সহযোগিতা কিংবা উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তাহলে ধীরে ধীরে চিকিৎসার অভাবে আমার স্বামী পঙ্গত্ব বরণ করবে। তাই সরকারি ভাবে চিকিৎসা সহায়তা কামনা করছি।

তার মেয়ে মৌ (৭) বলেন আমার বাবা গুলি খেয়ে ১ মাস যাবৎ বিছানায় পড়ে আছে আমাকে বেড়াতে নিয়ে যেতে পাড়েনা বাবাকে কেউ দেখতে আসেনা সরকারের কাছে আমার বাবার সুচিকিৎসা কামনা করছি। এলাকাবাসী বলেন, সেদিনের ঘটনায় মোকাব্বেরের মতো যত মানুষ আহত হয়েছেন সরকারি ভাবে তাদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করা উচিত।

নিউজটি শেয়ার করুন

নওগাঁয় গুলিবিদ্ধ বিএনপি কর্মীকে দেখতে আসেনি কেউ

আপডেট সময় : ০২:০৯:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের অমৃতপুর গ্রামের মৃত-আব্দুল লতিফ মন্ডলের ছেলে মোকাব্বের হোসেন। তিনি পেশায় একজন কৃষক ও ছোট ব্যবসায়ী। স্ত্রীর চাকরীর সুবাদে মাঝে মাঝে বগুড়ায় স্ত্রীর কাছে যান কৃষক মোকাব্বের। মোকাব্বের দুই মেয়ে সন্তানের জনক। বড় মেয়ে ফাতেমাতুজ জোহরা মৌ এর বয়স ৭ বছর আর ছোট মেয়ের সাদিয়া আশরাফী জান্নাত এর বয়স ১ বছর। তার সুস্থ্যতা তার পরিবারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

মোকাব্বের বলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫আগস্ট বিবেকের তাড়নায় রাজপথে বের হই। তাছাড়া আমি বিএনপি রাজনীতির সাথে ও জড়িত। ওদিন দুপুরে বগুড়া মাটিডালী মোড়ে পুলিশ নির্বিচারে গুলি করে সাধারণ মানুষদের মারছিলো। এমন ঘটনা দেখে আমি অন্য বিক্ষুদ্ধ সাধারণ মানুষদের সঙ্গে যোগ দিয়ে পুলিশদের ঘেরাও করার চেস্টা করি। তখন পুলিশ পালাতে গিয়ে এলোপাতাড়ী ভাবে ফাঁকা রাবার বুলেট ছোড়ে। এই সময় প্রায় ৫০টিরও বেশি রাবার বুলেট আমার শরীরে প্রবেশ করে।

এমতাবস্থায় ২/৩ জন আমাকে উদ্ধার করে পাশের হাসপাতালে নিলে সেখানে কোন চিকিৎসক না থাকায় পরে অন্য একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে ও চিকিৎসা প্রদান না করলে বাসায় একজন মেডিকেল শিক্ষার্থীর সহায়তায় অর্ধেক গুলি শরীরের ভিতর থেকে বের করতে পারলেও শরীরের অনেক গভীরে থাকা গুলি গুলো এখনোও পর্যন্ত বের করা সম্ভব হয়নি। ১মাস ধরে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছি এখনো ঠিকমত চলাফেরা করতে পারিনা তবে আমার আক্ষেপ অন্য দল বা আমি যে দল করি, (বিএনপি) এখন পর্যন্ত দলের একজন লোক ও আমাকে দেখতে এলোনা বা আমার কোন খোজঁ খবর নিলনা তাহলে মানুষ কিভাবে দলে কাজ করবে।

নওগাঁয় গুলিবিদ্ধ বিএনপি কর্মীকে দেখতে আসেনি কেউ
নওগাঁয় গুলিবিদ্ধ বিএনপি কর্মীকে দেখতে আসেনি কেউ। ফাইল ছবি

মেডিকেল শিক্ষার্থী সিয়াম হোসেন বলেন, যতটুকু সম্ভব গুলি গুলো বের করার চেষ্টা করেছি, এখন একজন বিশেজ্ঞ সার্জনের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসার দ্বারা শরীরে থাকা বাকি গুলিগুলো বের করতে হবে। যদি দ্রুত উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তাহলে আগামীতে তিনি ব্যথা, যন্ত্রনা ও অন্যান্য নানা সমস্যার কারণে স্বাভাবিক চলাচল করতে পারবেন না।

এদিকে তার স্ত্রী হোমায়রা বলেন গত এক মাসের বেশি সময় ধরে চিকিৎসা ব্যয় চালাতে পারলেও বর্তমানে চিকিৎসার খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছে তার পরিবার।যদি সরকারি ভাবে আর্থিক সহযোগিতা কিংবা উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তাহলে ধীরে ধীরে চিকিৎসার অভাবে আমার স্বামী পঙ্গত্ব বরণ করবে। তাই সরকারি ভাবে চিকিৎসা সহায়তা কামনা করছি।

তার মেয়ে মৌ (৭) বলেন আমার বাবা গুলি খেয়ে ১ মাস যাবৎ বিছানায় পড়ে আছে আমাকে বেড়াতে নিয়ে যেতে পাড়েনা বাবাকে কেউ দেখতে আসেনা সরকারের কাছে আমার বাবার সুচিকিৎসা কামনা করছি। এলাকাবাসী বলেন, সেদিনের ঘটনায় মোকাব্বেরের মতো যত মানুষ আহত হয়েছেন সরকারি ভাবে তাদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করা উচিত।