ঢাকা ০৪:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দৈনিক প্রলয়ে সংবাদ প্রকাশের পর মাটিকাটা বন্ধ : ১ লাখ টাকা জরিমানা করলেন ইউএনও

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:১২:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১৬৮ বার পড়া হয়েছে

হারিছ আহমেদ, সংবাদদাতা

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর বুশারকান্দা এলাকায় ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রির সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের।

বিষয়টি জানারপর দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয় করিমগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার ।

প্রকাশ্যে মাটি কাটার ফলে স্থানীয় কৃষকরা দুশ্চিন্তা পড়লে বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দৈনিক প্রলয়ে “কিশোরগঞ্জে ফসলি জমিতে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব, কৃষকদের কপালে ভাঁজ” শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হয়।

এ সংবাদ প্রকাশের সূত্র ধরে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন কিশোরগঞ্জে করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকালে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ১৫ (১) ধারা অনুযায়ী ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায় উপজেলার নিয়ামতপুর বুশাকান্দা একটি ফসলি মাঠে ফসল উঠিয়ে অবৈধভাবে এক্সকাভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে মাটি কেটে সেই মাটি ১৫-২০ ট্রাক্ট দিয়ে মাটি পাঠানো হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন ইট ভাটায়। এতে করে জমির শ্রেণী পরিবর্তন হয়ে এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হচ্ছে ডোবা ও পুকুর। এছাড়া ফসিল জমির টপ সেয়েল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি গ্রামবাসীর চলাচলের রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, জমি না দিয়ে কোনো লাভ নেই। আশপাশের মাটি কেটে ফেলা হচ্ছে। আমাদের জমি মনিই নষ্ট হয়ে যাবে। কিছুদিন পর বাধ্য হয়ে আমার ফসিল জমির শ্রেণী পরিবর্তন করতে হবে। জমির পাশে যদি ভেকু দিয়ে ৮-১০ ফুট কেটে নেয়। পাশের জমি এমনই ভেঙে যাবে। আগামী পাঁচ বছর পরে এই মাঠে চাষের কোনো জমি থাকবে না। প্রতিদিন যেখানে মাটি কাটা হচ্ছে। শুধু তাই নয় ইটভাটার ট্রাক্ট রাস্তা দিয়ে চলাচল করার কারণে রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। দশ বছর রাস্তার টেকসই থাকলে এখন তা দুই বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে করিমগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুকশেদুল হক দৈনিক প্রলয়’র প্রতিবেদক কে বলেন, ফসলি জমির মাটি কাটার ফলে একদিকে যেমন কৃষি জমির পরিমাণ দিন দিন কমে আসছে, অন্যদিকে খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। জমির উপরিভাগের চার থেকে ছয় ইঞ্চি (টপ সয়েল) গভীরের মাটিতেই মূল পুষ্টিগুণ থাকে। মূলত মাটির এই স্তরে ফসল উৎপাদিত হয়। মাটির এই স্তর কেটে নেওয়ায় জমির উর্বরাশক্তি নষ্ট হয়। এজন্য অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করেও কাঙ্খিত ফলন পাওয়া যায় না। তা ছাড়া কৃষিজমি ওপরের এ টপ সয়েল হারিয়ে ফেললে তা স্বাভাবিক হতে প্রায় ১০-১২ বছর লাগে।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি ২৫) দৈনিক প্রলয়ে প্রকাশিত সংবাদ

নিউজটি শেয়ার করুন

দৈনিক প্রলয়ে সংবাদ প্রকাশের পর মাটিকাটা বন্ধ : ১ লাখ টাকা জরিমানা করলেন ইউএনও

আপডেট সময় : ০৯:১২:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

হারিছ আহমেদ, সংবাদদাতা

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর বুশারকান্দা এলাকায় ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রির সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের।

বিষয়টি জানারপর দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয় করিমগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার ।

প্রকাশ্যে মাটি কাটার ফলে স্থানীয় কৃষকরা দুশ্চিন্তা পড়লে বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দৈনিক প্রলয়ে “কিশোরগঞ্জে ফসলি জমিতে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব, কৃষকদের কপালে ভাঁজ” শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হয়।

এ সংবাদ প্রকাশের সূত্র ধরে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন কিশোরগঞ্জে করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকালে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ১৫ (১) ধারা অনুযায়ী ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায় উপজেলার নিয়ামতপুর বুশাকান্দা একটি ফসলি মাঠে ফসল উঠিয়ে অবৈধভাবে এক্সকাভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে মাটি কেটে সেই মাটি ১৫-২০ ট্রাক্ট দিয়ে মাটি পাঠানো হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন ইট ভাটায়। এতে করে জমির শ্রেণী পরিবর্তন হয়ে এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হচ্ছে ডোবা ও পুকুর। এছাড়া ফসিল জমির টপ সেয়েল নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি গ্রামবাসীর চলাচলের রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, জমি না দিয়ে কোনো লাভ নেই। আশপাশের মাটি কেটে ফেলা হচ্ছে। আমাদের জমি মনিই নষ্ট হয়ে যাবে। কিছুদিন পর বাধ্য হয়ে আমার ফসিল জমির শ্রেণী পরিবর্তন করতে হবে। জমির পাশে যদি ভেকু দিয়ে ৮-১০ ফুট কেটে নেয়। পাশের জমি এমনই ভেঙে যাবে। আগামী পাঁচ বছর পরে এই মাঠে চাষের কোনো জমি থাকবে না। প্রতিদিন যেখানে মাটি কাটা হচ্ছে। শুধু তাই নয় ইটভাটার ট্রাক্ট রাস্তা দিয়ে চলাচল করার কারণে রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। দশ বছর রাস্তার টেকসই থাকলে এখন তা দুই বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে করিমগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুকশেদুল হক দৈনিক প্রলয়’র প্রতিবেদক কে বলেন, ফসলি জমির মাটি কাটার ফলে একদিকে যেমন কৃষি জমির পরিমাণ দিন দিন কমে আসছে, অন্যদিকে খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। জমির উপরিভাগের চার থেকে ছয় ইঞ্চি (টপ সয়েল) গভীরের মাটিতেই মূল পুষ্টিগুণ থাকে। মূলত মাটির এই স্তরে ফসল উৎপাদিত হয়। মাটির এই স্তর কেটে নেওয়ায় জমির উর্বরাশক্তি নষ্ট হয়। এজন্য অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করেও কাঙ্খিত ফলন পাওয়া যায় না। তা ছাড়া কৃষিজমি ওপরের এ টপ সয়েল হারিয়ে ফেললে তা স্বাভাবিক হতে প্রায় ১০-১২ বছর লাগে।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি ২৫) দৈনিক প্রলয়ে প্রকাশিত সংবাদ