ঢাকা ০৪:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সৈয়দপুরে পুলিশ পরিচয়ে বিকাশে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:০৯:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৪৩ বার পড়া হয়েছে

শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী

নীলফামারীর সৈয়দপুরে পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মিথ্যে খবর দিয়ে বিকাশ নাম্বারে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। গত কয়েকদিন ধরে চক্র সক্রিয় কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। চক্রটি মূলত ব্যবসায়ীদের টার্গেট করছে বেশি। বিশেষ করে যাদের টিনএজ ছেলে, ভাতিজা, ভাগিনা অর্থাৎ নিকটজন আছে।

এই চক্রের খপ্পরে পড়ে ইতোমধ্যে অনেকেই হয়রানি ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এর মধ্যে গত বুধবার একজন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তারপরও থামেনি প্রতারকদের কর্মকাণ্ড। ফলে শহরজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। হ্যালো, আপনি কি হৃদয়ের বাবা বলছেন? জ্বি। আপনার ছেলে মোটর সাইকেল এক্সিডেন্ট করে একটা বাচ্চাকে গুরুতর আহত করেছে। আপনার ছেলেও কিছুটা আহত। এলাকাবাসী তাকে আটক করে রেখেছে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। পরিস্থিতি উত্তপ্ত তবে আপনার ছেলে আমাদের হেফাজতে আছে। আপনি কে বলছেন? আমি পুলিশের এসআই। ঘটনাটা কোথায় ঘটেছে? সৈয়দপুর থিমপার্কের কাছে। আমি তাহলে এখনই সেখানে আসছি। না না আপনি আসবেন না। এখানকার লোকজন খুবই উত্তেজিত হয়ে আছে। আপনি আসলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তাই না এসে আহত বাচ্চাটার অভিভাবক ও এলাকাবাসীর দাবি অনুযায়ী ২০ হাজার টাকা দ্রুত বিকাশে পাঠিয়ে দেন। আমরা টাকাটা দিয়ে আপনার ছেলেকে নিয়ে থানায় যাবো। সেখান থেকে তাকে আপনি নিয়ে যাবেন। এখন আর কথা না বাড়িয়ে তারাতাড়ি টাকা বিকাশ করেন। বিকাশ নং ০১৯৬২৪০৯৩৯৯।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধা ৬ টায় ০১৯৪২৭১৭১৬৭ নম্বর মোবাইল ফোন থেকে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের ফারুক প্রিন্টার্সের মালিক সাংবাদিক এম ওমর ফারুকের মুঠোফোন নং ০১৭১৬৮৮৪৬৭১ তে কল করে উপরোক্ত কথোপকথন করা হয়েছে। একই নম্বর থেকে কল করে শহরের শহীদ সামসুল হক সড়কের কামাল হার্ডওয়্যার স্টোরের মালিক ও শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কের সিটি ইলেকট্রনিক দোকান মালিককেও একইভাবে বলা হয়েছে। এমন ইমোশনাল কথা ও ঘটনার প্রেক্ষিতে গুরুত্ব বিবেচনা ও ছেলের সমুহ বিপদ দেখে কামাল হার্ডওয়্যার স্টোরের মালিক মো. কামাল ৫ হাজার টাকা বিকাশও করেছেন। কিন্তু উল্লেখিত কারোই মোটর সাইকেল এক্সিডেন্টের কোন ঘটনাই ঘটেনি। এমন কৌশলে পুলিশ পরিচয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র।

মো. কামাল বলেন, বেলা ৩ টা ৫০ মিনিটে আমার মোবাইল নম্বর ০১৭৪০৯৪৯০৫৬ তে একটা কল আসে। ০১৯৪২৭১৭১৬৭ নম্বরের মোবাইল থেকে করা ওই কলে জনৈক অজ্ঞাত ব্যক্তি নিজেকে সৈয়দপুর থানার পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বলেন, আপনার ভাতিজা মো. রিশাদ সৈয়দপুর থিম পার্কের কাছে মোটর সাইকেলে ছোট বাচ্চার সাথে এক্সিডেন্ট করেছে। পাশ থেকে আরেকজন বলেন আপনার ভাতিজাকে পায়ে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছি। এখন যার সাথে এক্সিডেন্ট হয়েছে তাকে ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এসময় আমি ঘটনাস্থলে যেতে চাইলে তারা বলে না আপনি আসলে গন্ডগোল হবে। তাই না এসে দ্রুত ০১৯৬২৪০৯৩৯৯ নম্বরে বিকাশ করে টাকা পাঠিয়ে দেন। এতে আমার কাছে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় ৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেই। এর পর ওই নম্বরে আবার ফোন করলে তা বন্ধ পাই। ঘটনার আকস্মিকতায় হতবিহ্বল হয়ে টাকাটা পাঠিয়েছি। পরে পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারি ভাতিজার এক্সিডেন্টের কোন ঘটনাই ঘটেনি। এতে বুঝতে পারি আমার সরলতার সুযোগে নিজেকে ভুয়া পুলিশ পরিচয় দিয়ে প্রতারণামুলকভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এব্যাপারে আমি থানায় জিডি করেছি।

সিটি ইলেকট্রনিক দোকানের মালিক আনোয়ার হোসেন আন্নু বলেন, বুধবার বিকাল পৌনে ৪ টার দিকে আমাকেও একই নাম্বার থেকে কল দিয়ে বলা হয় আমার ছেলে আলভি মোটর সাইকেল এক্সিডেন্ট করে একটা বাচ্চাকে আহত করেছে এবং লোকজন তাঁকে আটকে রেখেছে। এখন বিপদ থেকে রেহাই পেতে ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তা দ্রুত পাঠানোর জন্য ০১৯৬২৪০৯৩৯৯ বিকাশ নাম্বার দেয়। ঘটনাস্থলে যেতে চাইলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে তাই তারা নিষেধ করে এবং পাশ থেকে আহত ছেলের আর্তনাদ উহ, ইস শব্দ শোনায়। এতে ছেলের বিপদ চিন্তা করে আমি বিকাশ করতে উদ্ধত হই। কিন্তু আমার সাথে থাকা একজন বিষয়টি প্রতারণা আঁচ করতে পেরে যাচাই করার কথা বলে। তখন আমি বাড়িতে কল করে নিশ্চিত হই ছেলে বাড়িতে আছে এবং এমন কোন ঘটনা ঘটেনি।

তিনি আরও বলেন, পরে ওই দুইটা মেবাইল নম্বরে কল করলে বন্ধ পাওয়া যায়। একবার কল ঢুকলে রিসিভ করে বলেন,  টাকা পাঠিয়ে দেন। তখন কৌশল করে আমি বলি আধা ঘণ্টা দেরি হবে। এতে সে বলে, আপনি এতবড় ব্যবসায়ী। অথচ ছেলের বিপদ জেনেও মাত্র ২০ হাজার টাকা দিতে গড়িমসি করছেন। আপনার দোকান থেকে খরচ করেছি বলেইতো এই উপকার করতে আপনাকে খবর দিয়েছি। কিন্তু আপনি বিশ্বাস করছেন না। বেশ মোবাইলটা আমার ছেলেকে দেন, ওর সাথে কথা বলি। তখন মাদার চোদ বলে গালি দিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

তিনি বলেন, ট্রু কলার নামে এপস্ দিয়ে কল দিলে নম্বরটা ভাই ভাই ফার্মেসী দেখায়। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানটি কোন জায়গার তা জানা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এটাও নিশ্চিত হতে পারবে। তাছাড়া ওদের কথায় এটুকু বোঝা গেছে যে, এটা একটা চক্র এবং সৈয়দপুরেরই। তা না হলে তারা আমাদের সম্পর্কে এতো বিস্তারিত তথ্য কিভাবে জানে? পুলিশের উচিত বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে দেখা। নয়তো এর সাথে পুলিশ জড়িত থাকার ধারণা জনমনে দৃঢ় হবে।

সাংবাদিক এম ওমর ফারুক বলেন, কিছু দিন আগে আমার একমাত্র ছোট ভাই মোটর সাইকেল এক্সিডেন্ট করে মারা গেছে। কাল ছেলের এক্সিডেন্টের খবর শুনে খুবই বিচলিত হয়ে পড়ি এবং টাকা দিতে প্রস্তুত হই। কিন্তু সাংবাদিক জাকিরের পরামর্শে বিষয়টা নিয়ে ভেবে প্রতারণা হিসেবে নিশ্চিত হই এবং টাকা পাঠানো থেকে বিরত থাকি। কিন্তু এঘটনায় ওই কয়েক মিনিট অত্যন্ত দুশ্চিন্তার মধ্যে কেটেছে। এতে চরম হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এভাবে যে কতজনকে হয়রানি করেছে আর কতজনই যে অর্থ খুইয়েছেন তা ভাবনার ব্যাপার।

এব্যাপারে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফইম উদ্দিন বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম। গতকালই এসেছি। লিখিত অভিযোগ বিষয়ে জানিনা। তবে এখন অনেকেই মোবাইল ফোনে অনেক ক্রাইম করছে। পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণার এই অভিযোগ বিষয়ে উল্লেখিত মোবাইল নম্বরটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

সৈয়দপুরে পুলিশ পরিচয়ে বিকাশে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র

আপডেট সময় : ০৩:০৯:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী

নীলফামারীর সৈয়দপুরে পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মিথ্যে খবর দিয়ে বিকাশ নাম্বারে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। গত কয়েকদিন ধরে চক্র সক্রিয় কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। চক্রটি মূলত ব্যবসায়ীদের টার্গেট করছে বেশি। বিশেষ করে যাদের টিনএজ ছেলে, ভাতিজা, ভাগিনা অর্থাৎ নিকটজন আছে।

এই চক্রের খপ্পরে পড়ে ইতোমধ্যে অনেকেই হয়রানি ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এর মধ্যে গত বুধবার একজন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তারপরও থামেনি প্রতারকদের কর্মকাণ্ড। ফলে শহরজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। হ্যালো, আপনি কি হৃদয়ের বাবা বলছেন? জ্বি। আপনার ছেলে মোটর সাইকেল এক্সিডেন্ট করে একটা বাচ্চাকে গুরুতর আহত করেছে। আপনার ছেলেও কিছুটা আহত। এলাকাবাসী তাকে আটক করে রেখেছে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। পরিস্থিতি উত্তপ্ত তবে আপনার ছেলে আমাদের হেফাজতে আছে। আপনি কে বলছেন? আমি পুলিশের এসআই। ঘটনাটা কোথায় ঘটেছে? সৈয়দপুর থিমপার্কের কাছে। আমি তাহলে এখনই সেখানে আসছি। না না আপনি আসবেন না। এখানকার লোকজন খুবই উত্তেজিত হয়ে আছে। আপনি আসলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তাই না এসে আহত বাচ্চাটার অভিভাবক ও এলাকাবাসীর দাবি অনুযায়ী ২০ হাজার টাকা দ্রুত বিকাশে পাঠিয়ে দেন। আমরা টাকাটা দিয়ে আপনার ছেলেকে নিয়ে থানায় যাবো। সেখান থেকে তাকে আপনি নিয়ে যাবেন। এখন আর কথা না বাড়িয়ে তারাতাড়ি টাকা বিকাশ করেন। বিকাশ নং ০১৯৬২৪০৯৩৯৯।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধা ৬ টায় ০১৯৪২৭১৭১৬৭ নম্বর মোবাইল ফোন থেকে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের ফারুক প্রিন্টার্সের মালিক সাংবাদিক এম ওমর ফারুকের মুঠোফোন নং ০১৭১৬৮৮৪৬৭১ তে কল করে উপরোক্ত কথোপকথন করা হয়েছে। একই নম্বর থেকে কল করে শহরের শহীদ সামসুল হক সড়কের কামাল হার্ডওয়্যার স্টোরের মালিক ও শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কের সিটি ইলেকট্রনিক দোকান মালিককেও একইভাবে বলা হয়েছে। এমন ইমোশনাল কথা ও ঘটনার প্রেক্ষিতে গুরুত্ব বিবেচনা ও ছেলের সমুহ বিপদ দেখে কামাল হার্ডওয়্যার স্টোরের মালিক মো. কামাল ৫ হাজার টাকা বিকাশও করেছেন। কিন্তু উল্লেখিত কারোই মোটর সাইকেল এক্সিডেন্টের কোন ঘটনাই ঘটেনি। এমন কৌশলে পুলিশ পরিচয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র।

মো. কামাল বলেন, বেলা ৩ টা ৫০ মিনিটে আমার মোবাইল নম্বর ০১৭৪০৯৪৯০৫৬ তে একটা কল আসে। ০১৯৪২৭১৭১৬৭ নম্বরের মোবাইল থেকে করা ওই কলে জনৈক অজ্ঞাত ব্যক্তি নিজেকে সৈয়দপুর থানার পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বলেন, আপনার ভাতিজা মো. রিশাদ সৈয়দপুর থিম পার্কের কাছে মোটর সাইকেলে ছোট বাচ্চার সাথে এক্সিডেন্ট করেছে। পাশ থেকে আরেকজন বলেন আপনার ভাতিজাকে পায়ে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছি। এখন যার সাথে এক্সিডেন্ট হয়েছে তাকে ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এসময় আমি ঘটনাস্থলে যেতে চাইলে তারা বলে না আপনি আসলে গন্ডগোল হবে। তাই না এসে দ্রুত ০১৯৬২৪০৯৩৯৯ নম্বরে বিকাশ করে টাকা পাঠিয়ে দেন। এতে আমার কাছে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় ৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেই। এর পর ওই নম্বরে আবার ফোন করলে তা বন্ধ পাই। ঘটনার আকস্মিকতায় হতবিহ্বল হয়ে টাকাটা পাঠিয়েছি। পরে পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারি ভাতিজার এক্সিডেন্টের কোন ঘটনাই ঘটেনি। এতে বুঝতে পারি আমার সরলতার সুযোগে নিজেকে ভুয়া পুলিশ পরিচয় দিয়ে প্রতারণামুলকভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এব্যাপারে আমি থানায় জিডি করেছি।

সিটি ইলেকট্রনিক দোকানের মালিক আনোয়ার হোসেন আন্নু বলেন, বুধবার বিকাল পৌনে ৪ টার দিকে আমাকেও একই নাম্বার থেকে কল দিয়ে বলা হয় আমার ছেলে আলভি মোটর সাইকেল এক্সিডেন্ট করে একটা বাচ্চাকে আহত করেছে এবং লোকজন তাঁকে আটকে রেখেছে। এখন বিপদ থেকে রেহাই পেতে ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তা দ্রুত পাঠানোর জন্য ০১৯৬২৪০৯৩৯৯ বিকাশ নাম্বার দেয়। ঘটনাস্থলে যেতে চাইলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে তাই তারা নিষেধ করে এবং পাশ থেকে আহত ছেলের আর্তনাদ উহ, ইস শব্দ শোনায়। এতে ছেলের বিপদ চিন্তা করে আমি বিকাশ করতে উদ্ধত হই। কিন্তু আমার সাথে থাকা একজন বিষয়টি প্রতারণা আঁচ করতে পেরে যাচাই করার কথা বলে। তখন আমি বাড়িতে কল করে নিশ্চিত হই ছেলে বাড়িতে আছে এবং এমন কোন ঘটনা ঘটেনি।

তিনি আরও বলেন, পরে ওই দুইটা মেবাইল নম্বরে কল করলে বন্ধ পাওয়া যায়। একবার কল ঢুকলে রিসিভ করে বলেন,  টাকা পাঠিয়ে দেন। তখন কৌশল করে আমি বলি আধা ঘণ্টা দেরি হবে। এতে সে বলে, আপনি এতবড় ব্যবসায়ী। অথচ ছেলের বিপদ জেনেও মাত্র ২০ হাজার টাকা দিতে গড়িমসি করছেন। আপনার দোকান থেকে খরচ করেছি বলেইতো এই উপকার করতে আপনাকে খবর দিয়েছি। কিন্তু আপনি বিশ্বাস করছেন না। বেশ মোবাইলটা আমার ছেলেকে দেন, ওর সাথে কথা বলি। তখন মাদার চোদ বলে গালি দিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

তিনি বলেন, ট্রু কলার নামে এপস্ দিয়ে কল দিলে নম্বরটা ভাই ভাই ফার্মেসী দেখায়। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানটি কোন জায়গার তা জানা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এটাও নিশ্চিত হতে পারবে। তাছাড়া ওদের কথায় এটুকু বোঝা গেছে যে, এটা একটা চক্র এবং সৈয়দপুরেরই। তা না হলে তারা আমাদের সম্পর্কে এতো বিস্তারিত তথ্য কিভাবে জানে? পুলিশের উচিত বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে দেখা। নয়তো এর সাথে পুলিশ জড়িত থাকার ধারণা জনমনে দৃঢ় হবে।

সাংবাদিক এম ওমর ফারুক বলেন, কিছু দিন আগে আমার একমাত্র ছোট ভাই মোটর সাইকেল এক্সিডেন্ট করে মারা গেছে। কাল ছেলের এক্সিডেন্টের খবর শুনে খুবই বিচলিত হয়ে পড়ি এবং টাকা দিতে প্রস্তুত হই। কিন্তু সাংবাদিক জাকিরের পরামর্শে বিষয়টা নিয়ে ভেবে প্রতারণা হিসেবে নিশ্চিত হই এবং টাকা পাঠানো থেকে বিরত থাকি। কিন্তু এঘটনায় ওই কয়েক মিনিট অত্যন্ত দুশ্চিন্তার মধ্যে কেটেছে। এতে চরম হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এভাবে যে কতজনকে হয়রানি করেছে আর কতজনই যে অর্থ খুইয়েছেন তা ভাবনার ব্যাপার।

এব্যাপারে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফইম উদ্দিন বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম। গতকালই এসেছি। লিখিত অভিযোগ বিষয়ে জানিনা। তবে এখন অনেকেই মোবাইল ফোনে অনেক ক্রাইম করছে। পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণার এই অভিযোগ বিষয়ে উল্লেখিত মোবাইল নম্বরটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।