ঢাকা ০৩:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

গাজীপুরে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে চলছে মাদক কারবার, নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ স্থানীয় প্রশাসন

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৫:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫
  • / ৪০৫ বার পড়া হয়েছে

আনোয়ার হোসেন, নিজস্ব সংবাদদাতা

অভিনব কৌশলে বিভিন্ন পথে গাজীপুরে আসছে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। এককথায় মাদকই এখন গাজীপুরের অন্যতম প্রধান সমস্যা, যা পাওয়া যাচ্ছে হাত বাড়ালেই।
বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করে শত শত মাদক ব্যবসায়ীরা গ্রেফতার হলেও বর্তমানে এসব অপরাধীরা জামিনে বেরিয়ে আবারো মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। তবে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ৫ই আগস্টের পর থেকে মাদক ব্যবসায়ীদের বেচা-বিক্রি অপেন সিক্রেট।

পুলিশের জনবল সংকট ও কিছুটা নিস্ক্রিয়তার কারণে প্রকাশ্যে বা গোপনে আবারো বাড়ছে মাদক মাদক কারবার। যার ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে চুরি, ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধ। ঐতিহ্যবাহী শহর গাজীপুরের এক সময় বেশ সুনাম থাকলেও বর্তমানে নানা সমস্যায় তা প্রায় হারাতে বসেছে। সবসময় গাজীপুর মহানগরীর জন্য অন্যতম একটি বড় সমস্যা হলো মাদক। যার ভয়াল থাবা থেকে মুক্তি পাচ্ছে না কিশোর-যুবক থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও। এ অবস্থায় সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়ছে অভিভাবকরা। যদিও পুলিশ কমিশনার হিসেবে ডাঃ নাজমুল করিম খানের যোগদানের পর শহর জুড়ে মাদকের ভয়াবহতা রোধে নানা পদক্ষেপ নেয়া হলেও থানা পুলিশের আরো তৎপরতা বৃদ্ধিসহ মাদক নির্মুলে কার্যকরী পদক্ষেপ দৃশ্যমান হয় নি।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, মহানগরীর সদর থানার মাদকের হাট হিসেবে খ্যাত লক্ষীপুরা, বিলাসপুর ও ছায়াবীথি এলাকায় মাদক কারবারিরা সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছে। যার ফলে পুলিশ অভিযানে গেলে আগেই জেনে যায় কারবারিরা। এমনকি পুলিশ অভিযানে গিয়ে মাদক কারবারিদের সিসি ক্যামেরার কারণে তাদের বিভিন্ন চক্রান্তের শিকার হয়ে বিপাকে পড়েছে অনেকেই। এছাড়াও এই কারবারিদের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে তাদেরকে গোপনে সহায়তা করে থাকে কতিপয় অসৎ পুলিশ ও হলুদ সাংবাদিকরা।

সম্প্রতি গত শনিবার (২২ মার্চ) মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি চৌকস টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লক্ষীপুরা এলাকায় অভিযানে যায়। এসময় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ফারুকের ছেলে সায়েলের দেহ স্থানীয় লোকজনের সামনে তল্লাশী করে হালকা গোলাপী রংয়ের ৫০ (পঞ্চাশ) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। এরপর নিয়মিত মামলা রুজুসহ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত সায়েল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রুজু হওয়া ৫টি মামলা ও অপহরণ ও চাঁদাবাজির অপরাধে ১ টি মামলার আসামী।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, লক্ষীপুরা এলাকার মাদক সম্রাজ্ঞী তাহমিনা, মাদক ব্যবসায়ী হারুন, তার স্ত্রী আশা, তাদের ছেলে কনক এবং ফারুক তার ছেলেরা হল সায়েল, শুভ, সুমন এদের পরিবারটির দীর্ঘদিন যাবত মাদক কারবার করছে। তাদের কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ ও জিম্মি পুরো এলাকাবাসী। মাদক ব্যবসা বন্ধের জন্য কেউ প্রতিবাদ করলেই হামলার শিকার হতে হয়। এমনকি পুলিশ তাদেরকে মাদকসহ গ্রেফতার করলে পুলিশের প্রতি ক্ষীপ্ত হয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা বিভাগীয় অভিযোগ দাখিল করে থাকে। এর ফলে অভিযানে থাকা পুলিশ সদস্যদের বিপাকে পড়তে হয়। যার কারণে মাদক নির্মুল করা সম্ভব হচ্ছে না। এই মাদক ব্যবসায়ীদের একাধিক মাদক মামলা থাকা স্বত্ত্বেও বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা এই মাদকের ব্যবসা।

এবিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অপরাধ উত্তর বিভাগের ডিসি মোঃ রবিউল ইসলাম জানান, মাদক নির্মুলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মাদকের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজীপুরে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে চলছে মাদক কারবার, নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ স্থানীয় প্রশাসন

আপডেট সময় : ০৭:৩৫:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

আনোয়ার হোসেন, নিজস্ব সংবাদদাতা

অভিনব কৌশলে বিভিন্ন পথে গাজীপুরে আসছে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। এককথায় মাদকই এখন গাজীপুরের অন্যতম প্রধান সমস্যা, যা পাওয়া যাচ্ছে হাত বাড়ালেই।
বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করে শত শত মাদক ব্যবসায়ীরা গ্রেফতার হলেও বর্তমানে এসব অপরাধীরা জামিনে বেরিয়ে আবারো মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। তবে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ৫ই আগস্টের পর থেকে মাদক ব্যবসায়ীদের বেচা-বিক্রি অপেন সিক্রেট।

পুলিশের জনবল সংকট ও কিছুটা নিস্ক্রিয়তার কারণে প্রকাশ্যে বা গোপনে আবারো বাড়ছে মাদক মাদক কারবার। যার ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে চুরি, ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধ। ঐতিহ্যবাহী শহর গাজীপুরের এক সময় বেশ সুনাম থাকলেও বর্তমানে নানা সমস্যায় তা প্রায় হারাতে বসেছে। সবসময় গাজীপুর মহানগরীর জন্য অন্যতম একটি বড় সমস্যা হলো মাদক। যার ভয়াল থাবা থেকে মুক্তি পাচ্ছে না কিশোর-যুবক থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও। এ অবস্থায় সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়ছে অভিভাবকরা। যদিও পুলিশ কমিশনার হিসেবে ডাঃ নাজমুল করিম খানের যোগদানের পর শহর জুড়ে মাদকের ভয়াবহতা রোধে নানা পদক্ষেপ নেয়া হলেও থানা পুলিশের আরো তৎপরতা বৃদ্ধিসহ মাদক নির্মুলে কার্যকরী পদক্ষেপ দৃশ্যমান হয় নি।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, মহানগরীর সদর থানার মাদকের হাট হিসেবে খ্যাত লক্ষীপুরা, বিলাসপুর ও ছায়াবীথি এলাকায় মাদক কারবারিরা সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছে। যার ফলে পুলিশ অভিযানে গেলে আগেই জেনে যায় কারবারিরা। এমনকি পুলিশ অভিযানে গিয়ে মাদক কারবারিদের সিসি ক্যামেরার কারণে তাদের বিভিন্ন চক্রান্তের শিকার হয়ে বিপাকে পড়েছে অনেকেই। এছাড়াও এই কারবারিদের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে তাদেরকে গোপনে সহায়তা করে থাকে কতিপয় অসৎ পুলিশ ও হলুদ সাংবাদিকরা।

সম্প্রতি গত শনিবার (২২ মার্চ) মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি চৌকস টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লক্ষীপুরা এলাকায় অভিযানে যায়। এসময় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ফারুকের ছেলে সায়েলের দেহ স্থানীয় লোকজনের সামনে তল্লাশী করে হালকা গোলাপী রংয়ের ৫০ (পঞ্চাশ) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। এরপর নিয়মিত মামলা রুজুসহ আইনগত প্রক্রিয়া শেষে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত সায়েল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রুজু হওয়া ৫টি মামলা ও অপহরণ ও চাঁদাবাজির অপরাধে ১ টি মামলার আসামী।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, লক্ষীপুরা এলাকার মাদক সম্রাজ্ঞী তাহমিনা, মাদক ব্যবসায়ী হারুন, তার স্ত্রী আশা, তাদের ছেলে কনক এবং ফারুক তার ছেলেরা হল সায়েল, শুভ, সুমন এদের পরিবারটির দীর্ঘদিন যাবত মাদক কারবার করছে। তাদের কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ ও জিম্মি পুরো এলাকাবাসী। মাদক ব্যবসা বন্ধের জন্য কেউ প্রতিবাদ করলেই হামলার শিকার হতে হয়। এমনকি পুলিশ তাদেরকে মাদকসহ গ্রেফতার করলে পুলিশের প্রতি ক্ষীপ্ত হয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা বিভাগীয় অভিযোগ দাখিল করে থাকে। এর ফলে অভিযানে থাকা পুলিশ সদস্যদের বিপাকে পড়তে হয়। যার কারণে মাদক নির্মুল করা সম্ভব হচ্ছে না। এই মাদক ব্যবসায়ীদের একাধিক মাদক মামলা থাকা স্বত্ত্বেও বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা এই মাদকের ব্যবসা।

এবিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অপরাধ উত্তর বিভাগের ডিসি মোঃ রবিউল ইসলাম জানান, মাদক নির্মুলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মাদকের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।