দুমকিতে ধর্ষণের অভিযোগে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

- আপডেট সময় : ০৬:১৭:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
- / ৩৩৯ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
পটুয়াখালীর দুমকিতে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন জুয়েলসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুমকির শ্রীরামপুর এলাকার আমির হোসেনের কন্যা শামিমা সুলতানা বাদী হয়ে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে পিটিশন দায়ের করেন। পিটিশন নং-২০৭/২০২৫। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে পটুয়াখালী সদর থানায় ২৯ মার্চ মামলাটি রেকর্ডভুক্ত হয়। মামলা নং-৬১।
মামলায় দুমকি গ্রামের আলমগীর হোসেনের পুত্র সাদ্দাম হোসেন ছাড়াও আসামী করা হয় বিএনপি নেতা জাহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক দেলোয়ার , যুবদল নেতা ও সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম, যুবদল নেতা জসীম উদ্দিনকে। মামলার এজাহার ও স্থানীয়সূত্রে জানাযায়, মামলার বাদী শামীমা সুলতানার স্বামী একজন প্রবাসী। স্বামী প্রবাসে থাকায় সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছিলেন শামীমা। শামীমার বাসায় মাঝে মধ্যে যাতায়াত করতেন এক সময়ের সহপাঠি সাদ্দাম হোসেন জুয়েল। যাতায়াতের সুবাধে সহপাঠির সম্পর্ক রূপ নেয় সম্পর্কে। তাদের দুজনের একান্তে কাটানো সময়ের কিছু ছবি ও ভিডিও গোপনে ধারন কওে রাখেন জুয়েল। এরপর থেকে শুরু হয় ব্লাকমেইলিং। ব্লাকমেইলিং এর মাধ্যমে প্রবাসী স্বামীর পাঠানো টাকা পয়সা হাতিয়ে নেন।
একপর্যায়ে বিয়ের আশ্বাসে শামীমা সুলতানাকে দিয়ে তার প্রবাসী স্বামীকে ডিভোর্স করান। শামীমাকে নিয়ে আঃ কাদের মিয়ার সুরমা টাওয়ারের ৩য় তালার পশ্চিম পার্শ্বে ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়ে স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস শুরু করেন। সুরমা টাওয়ারের ৩য় তালায় ৩ মাস ভাড়াটিয়া থাকার পর কাজী পাড়ায় মৃধা প্লাজায় ৪ মাস বসবাস করেন। এসময়ে তাদের মেলামেশার ছবি ও ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে রাখতো জুয়েল। স্বামী স্ত্রী হিসেবে ৭ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর শামীমা জানতে পারেন , আসলে তাদের বিয়েটাই হয়নি। বিয়ের নামে তার কাছ থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিয়েছেন সাদ্দাম হোসেন।
এতদিন সে তাকে ধর্ষন করেছেন। এরপর শামীমা স্ত্রীর দাবী নিয়ে সাদ্দামের বাড়িতে গেলে তাকে আটকিয়ে মারধর করাসহ তার কাছ থেকে জোরপূর্বক ৩ টি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। বিএনপি নেতা জাহিদুল, যুবদল নেতা জসিম উদ্দিন , যুবদল নেতা ও সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক দেলোয়ার হোসেন শামীমা আটকিয়ে রেখে তাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে তার কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন। পরবর্তীতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে থানায় মামলা করতে না দিলে শামীমা আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি রেকর্ডভুক্ত হয়।
এবিষয়ে শামীমা সুলতানা বলেন, সাদ্দাম বিয়ের নামে আমার সাথে প্রতারণা করেছে। মিথ্যা বলে আমার টাকা পয়সা অলংকার আত্মসাৎ করেছে। স্ত্রী পরিচয়ে আমাকে দীর্ঘদিন মেলামেশা হয়েছে এবং সেগুলো ভিডিও ধারণ করে রেখেছে। আমার অধিকার চাইতে গেলে অন্যান্য আসামীরা আমাকে মারধর করে আমার কাছ থেকে জোর পূর্বক ৩ টি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ায় আমি মামলা দায়ের করি।
মামলা দায়েরের পর থেকে ক্রমাগত হুমকি প্রদানের পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করে আসছে। এ অবস্থায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি। আমি প্রশাসন ও আদালতের কাছে আমার ও পরিবারের নিরাপত্তার পাশাপাশি ন্যায় বিচার চাই। এবিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন জুয়েল এর ব্যবহৃত নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে নাম্বারটি বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। আর বাদীকে হুমকির বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।