ঢাকা ১০:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
এজাহারভুক্ত সব পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার নোটিশ বন্যায় ডুবে গেছে সবজি ক্ষেত, বিপাকে কৃষক দূর্গাপুরে বন্যার পানিতে ডুবলো কৃষকের স্বপ্নের পান বরজ সীমান্তে বিজিবির অভিযানে মিয়ানমারের নাগরিকসহ আটক ২ নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ২৭৬৩৭ জন নিয়োগ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেই আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম এখন সিলেটের জেলা প্রশাসক চিকিৎসকদের দোষারোপ করে লাভ নেই, সচেতন হতে হবে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চলতি সপ্তাহেই চূড়ান্ত নির্বাচনি রোডম্যাপ প্রকাশ: ইসি সচিব ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক ধর্মকে ব্যবসার হাতিয়ার বানাচ্ছে একটি মহল: রুমিন ফারহানা

একাত্তরে গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে বলল বাংলাদেশ

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৫৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৭০ বার পড়া হয়েছে

প্রলয় ডেস্ক

একাত্তরে পাকিস্তানের তৎকালীন সশস্ত্রবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটিকে ক্ষমা চাইতে বলেছে বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) পদ্মায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে আলোচনার প্ল্যাটফর্ম ফরেন অফিস কনসালটেশন বা এফওসি বৈঠকে পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলকে একাত্তরের জন্য ক্ষমার চাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে এ কথা জানান পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন।

পররাষ্ট্রসচিব বলেন, বৈঠকে আমি পাকিস্তানের সঙ্গে বিদ্যমান ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়গুলো উত্থাপন করেছি। যেমন—আটকেপড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, অবিভাজিত সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা দেওয়া, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পাঠানো বিদেশি সাহায্যের অর্থ হস্তান্তর এবং ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন সশস্ত্রবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া।

প্রায় ১৫ বছর পর আজ ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ দেশটির পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন, আর ঢাকার পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন নেতৃত্ব দেন। দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে উভয়পক্ষের আলোচনা চলে।

অমীমাংসিত বিষয়ে বাংলাদেশের উত্থাপনে পাকিস্তানের উত্তর জানতে চাইলে জসীম উদ্দিন বলেন, তারা বলেছে এ বিষয়টি নিয়ে তারা রিমেইন এনগেজ থাকবে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে সামনের দিনে। পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বৈঠকটি নিয়মিত হওয়ার কথা। কাজেই ২০১০ সালের পর যে বৈঠকটি হলো, সেটি নিয়ে আমরা আশা করি না যে একদিনে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু তাদের দিক থেকে এ বিষয়টি নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা করার সদিচ্ছা তারা ব্যক্ত করেছে।

একাত্তরে ক্ষমার বিষয়ে পাকিস্তানের অবস্থান নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা আমাদের দিক থেকে আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি এবং কূটনীতির কাজ হচ্ছে, আমাদের অবস্থান তুলে ধরে সেটা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। এখানে বিষয়টি এমন হয় যে আমি বিষয়টি তোলার পরে তারা আলোচনার মধ্যে রাখতে চাননি। তারা বলেছে, এ নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা অব্যাহত রাখতে চান। কাজেই এই আলোচনার প্রেক্ষিতে আমি ভবিষ্যতে আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নেব, এটা হচ্ছে আমার অবস্থান।

বৈঠকে অমীমাংসিত বিষয় তোলার কারণ তুলে ধরেন পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, আমরা দুটো পয়েন্ট মাথায় রেখে এ বিষয়টি উত্থাপন করেছি। একটি হচ্ছে, দেড় দশক পর আমরা এটা নিয়ে বসলাম। কাজেই পুনরায় এই বিষয়টি তোলা উচিত। এটা তোলা উচিত, কারণ তুলেছি এটার ন্যায্যতা…। এ ছাড়া, আমরা পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলকে বলেছি, বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক যে জায়গায় দাঁড়িয়েছে, সাম্প্রতিকালে উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতার কারণে।

তিনি বলেন, সেই দিক থেকে সম্পর্ক একটি শক্তি ভিত্তিতে দাঁড় করাতে গেলে আমাদের এই অমীমাংসিত বিষয়গুলোকে মীমাংসায় আসার প্রয়োজন এবং এটা বলেছি। আমরা মনে করি, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের এখন যে সম্পর্ক, এই সময়টাতে এই বিষয়গুলো সমাধান করার জন্য উপযুক্ত সময়।

নিউজটি শেয়ার করুন

একাত্তরে গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে বলল বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ১২:৫৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

প্রলয় ডেস্ক

একাত্তরে পাকিস্তানের তৎকালীন সশস্ত্রবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটিকে ক্ষমা চাইতে বলেছে বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) পদ্মায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে আলোচনার প্ল্যাটফর্ম ফরেন অফিস কনসালটেশন বা এফওসি বৈঠকে পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলকে একাত্তরের জন্য ক্ষমার চাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে এ কথা জানান পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন।

পররাষ্ট্রসচিব বলেন, বৈঠকে আমি পাকিস্তানের সঙ্গে বিদ্যমান ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়গুলো উত্থাপন করেছি। যেমন—আটকেপড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, অবিভাজিত সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা দেওয়া, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পাঠানো বিদেশি সাহায্যের অর্থ হস্তান্তর এবং ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন সশস্ত্রবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া।

প্রায় ১৫ বছর পর আজ ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ দেশটির পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন, আর ঢাকার পক্ষে পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন নেতৃত্ব দেন। দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে উভয়পক্ষের আলোচনা চলে।

অমীমাংসিত বিষয়ে বাংলাদেশের উত্থাপনে পাকিস্তানের উত্তর জানতে চাইলে জসীম উদ্দিন বলেন, তারা বলেছে এ বিষয়টি নিয়ে তারা রিমেইন এনগেজ থাকবে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে সামনের দিনে। পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বৈঠকটি নিয়মিত হওয়ার কথা। কাজেই ২০১০ সালের পর যে বৈঠকটি হলো, সেটি নিয়ে আমরা আশা করি না যে একদিনে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু তাদের দিক থেকে এ বিষয়টি নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা করার সদিচ্ছা তারা ব্যক্ত করেছে।

একাত্তরে ক্ষমার বিষয়ে পাকিস্তানের অবস্থান নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা আমাদের দিক থেকে আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি এবং কূটনীতির কাজ হচ্ছে, আমাদের অবস্থান তুলে ধরে সেটা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। এখানে বিষয়টি এমন হয় যে আমি বিষয়টি তোলার পরে তারা আলোচনার মধ্যে রাখতে চাননি। তারা বলেছে, এ নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা অব্যাহত রাখতে চান। কাজেই এই আলোচনার প্রেক্ষিতে আমি ভবিষ্যতে আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নেব, এটা হচ্ছে আমার অবস্থান।

বৈঠকে অমীমাংসিত বিষয় তোলার কারণ তুলে ধরেন পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, আমরা দুটো পয়েন্ট মাথায় রেখে এ বিষয়টি উত্থাপন করেছি। একটি হচ্ছে, দেড় দশক পর আমরা এটা নিয়ে বসলাম। কাজেই পুনরায় এই বিষয়টি তোলা উচিত। এটা তোলা উচিত, কারণ তুলেছি এটার ন্যায্যতা…। এ ছাড়া, আমরা পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলকে বলেছি, বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক যে জায়গায় দাঁড়িয়েছে, সাম্প্রতিকালে উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতার কারণে।

তিনি বলেন, সেই দিক থেকে সম্পর্ক একটি শক্তি ভিত্তিতে দাঁড় করাতে গেলে আমাদের এই অমীমাংসিত বিষয়গুলোকে মীমাংসায় আসার প্রয়োজন এবং এটা বলেছি। আমরা মনে করি, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের এখন যে সম্পর্ক, এই সময়টাতে এই বিষয়গুলো সমাধান করার জন্য উপযুক্ত সময়।