ঢাকা ১০:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
এজাহারভুক্ত সব পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার নোটিশ বন্যায় ডুবে গেছে সবজি ক্ষেত, বিপাকে কৃষক দূর্গাপুরে বন্যার পানিতে ডুবলো কৃষকের স্বপ্নের পান বরজ সীমান্তে বিজিবির অভিযানে মিয়ানমারের নাগরিকসহ আটক ২ নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ২৭৬৩৭ জন নিয়োগ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেই আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম এখন সিলেটের জেলা প্রশাসক চিকিৎসকদের দোষারোপ করে লাভ নেই, সচেতন হতে হবে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চলতি সপ্তাহেই চূড়ান্ত নির্বাচনি রোডম্যাপ প্রকাশ: ইসি সচিব ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক ধর্মকে ব্যবসার হাতিয়ার বানাচ্ছে একটি মহল: রুমিন ফারহানা

ময়মনসিংহে তামাক বিরোধী সেমিনার

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:৪৮:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১০২ বার পড়া হয়েছে

সুমন ভট্টাচার্য, ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান

‘সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’ তামাকজাত পণ্যের গায়ে এই স্লোগান দেখেনি এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। তবুও অধূমপায়ী মানুষের সংখ্যা আকাশচুম্বী। এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে বুধবার (২৩ এপ্রিল) ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে তামাক বিরোধী সেমিনার ২০২৫ আয়োজিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ মোখতার হোসেন।

অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার জিয়া আহমেদ সুমন এর সঞ্চালনায় তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০২৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) বাস্তবায়নে করণীয় শীর্ষক সেমিনারে পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তামাক বিরোধী আইন ও বিধি-বিধান উপস্থাপন করেন সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোঃ আশরাফুল ইসলাম। এরপর উপস্থিত সদস্যরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেয়। পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে তামাকজাত দ্রব্য সেবন দন্ডনীয় অপরাধ। এর ব্যত্যয় হলে ৩০০টাকা অর্থদন্ড এবং পরবর্তীতে দ্বিগুণ হারে অর্থদণ্ড আরোপের বিধান রয়েছে। উপস্থিত একজন আলোচক জানান, দোকানীরা জরিমানায় ভয় পায় না, যদি জরিমানার পাশাপাশি দন্ড দেওয়া যায় তাহলে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কোনোভাবেই তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না। বিদ্যালয়ের ১০০ মিটার এলাকার মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ, কারণ সহজলভ্য বলেই স্কুলগামী উঠতি বয়সের ছেলেরা নেশায় জড়িয়ে পড়ছে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহ প্রতিনিধি বলেন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসীগুলোতে ইনজেকশন বিক্রয় বন্ধ করতে হবে। যুবসমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে মাদকের কুফল প্রচার, খেলাধুলার ব্যবস্থা করার কথাও বলেন তিনি।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক বলেন, শিডিউলভুক্ত ড্রাগ ঘুমের ওষুধ এর অতিরিক্ত ব্যবহার নেশার উদ্রেক করে এবং মৃত্যু ঘটায়। এছাড়া ইলেকট্রনিক সিগারেট হুমকির সম্মুখীন করেছে যুবসমাজকে।

প্যানেল আলোচনায় ডিআইজি ময়মনসিংহের প্রতিনিধি পুলিশ সুপার ফাল্গুনী নন্দী বলেন, চাকরির পরীক্ষায় যেভাবে ডোপ টেস্ট হয়, তেমনি তামাক টেস্ট অন্তর্ভূক্ত করা উচিৎ। এছাড়াও শুক্রবারের জুমার খুতবায় সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন, কাউন্সেলিং জরুরি।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকর্তা বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে ধূমপানের কোনো উপকারিতা নেই। মাদক স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং শারীরিক ও আর্থিক ক্ষতি করে। স্থানীয় সরকার আইনে লাইসেন্সবিহীন ভেন্ডরে মাদক বিক্রি নিষিদ্ধ।

সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার মোঃ মোখতার হোসেন বলেন, মোবাইল কোর্ট ও স্থানীয় সরকার শাখার লাইসেন্স এনফোর্সমেন্ট জোরদার করতে হবে। জনসচেতনতা তৈরি ও উৎসাহ প্রদান, সমাজে মাদকের কুফল এবং শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রছাত্রীদের উপর প্রভাব প্রচার করতে হবে। ধর্মীয় মূল্যবোধ তৈরি এবং সৃষ্টিকর্তার সাথে ওয়াদা করা ছাড়া তামাক থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। আমরা সম্মিলিতভাবে ময়মনসিংহ বিভাগকে তামাকমুক্ত রাখতে চাই।

সেমিনারে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ এবং অন্যান্য সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ময়মনসিংহে তামাক বিরোধী সেমিনার

আপডেট সময় : ০৭:৪৮:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

সুমন ভট্টাচার্য, ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান

‘সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’ তামাকজাত পণ্যের গায়ে এই স্লোগান দেখেনি এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। তবুও অধূমপায়ী মানুষের সংখ্যা আকাশচুম্বী। এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে বুধবার (২৩ এপ্রিল) ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে তামাক বিরোধী সেমিনার ২০২৫ আয়োজিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ মোখতার হোসেন।

অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার জিয়া আহমেদ সুমন এর সঞ্চালনায় তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০২৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত) বাস্তবায়নে করণীয় শীর্ষক সেমিনারে পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তামাক বিরোধী আইন ও বিধি-বিধান উপস্থাপন করেন সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোঃ আশরাফুল ইসলাম। এরপর উপস্থিত সদস্যরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেয়। পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে তামাকজাত দ্রব্য সেবন দন্ডনীয় অপরাধ। এর ব্যত্যয় হলে ৩০০টাকা অর্থদন্ড এবং পরবর্তীতে দ্বিগুণ হারে অর্থদণ্ড আরোপের বিধান রয়েছে। উপস্থিত একজন আলোচক জানান, দোকানীরা জরিমানায় ভয় পায় না, যদি জরিমানার পাশাপাশি দন্ড দেওয়া যায় তাহলে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কোনোভাবেই তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না। বিদ্যালয়ের ১০০ মিটার এলাকার মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ, কারণ সহজলভ্য বলেই স্কুলগামী উঠতি বয়সের ছেলেরা নেশায় জড়িয়ে পড়ছে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহ প্রতিনিধি বলেন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসীগুলোতে ইনজেকশন বিক্রয় বন্ধ করতে হবে। যুবসমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে মাদকের কুফল প্রচার, খেলাধুলার ব্যবস্থা করার কথাও বলেন তিনি।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক বলেন, শিডিউলভুক্ত ড্রাগ ঘুমের ওষুধ এর অতিরিক্ত ব্যবহার নেশার উদ্রেক করে এবং মৃত্যু ঘটায়। এছাড়া ইলেকট্রনিক সিগারেট হুমকির সম্মুখীন করেছে যুবসমাজকে।

প্যানেল আলোচনায় ডিআইজি ময়মনসিংহের প্রতিনিধি পুলিশ সুপার ফাল্গুনী নন্দী বলেন, চাকরির পরীক্ষায় যেভাবে ডোপ টেস্ট হয়, তেমনি তামাক টেস্ট অন্তর্ভূক্ত করা উচিৎ। এছাড়াও শুক্রবারের জুমার খুতবায় সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন, কাউন্সেলিং জরুরি।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকর্তা বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে ধূমপানের কোনো উপকারিতা নেই। মাদক স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং শারীরিক ও আর্থিক ক্ষতি করে। স্থানীয় সরকার আইনে লাইসেন্সবিহীন ভেন্ডরে মাদক বিক্রি নিষিদ্ধ।

সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার মোঃ মোখতার হোসেন বলেন, মোবাইল কোর্ট ও স্থানীয় সরকার শাখার লাইসেন্স এনফোর্সমেন্ট জোরদার করতে হবে। জনসচেতনতা তৈরি ও উৎসাহ প্রদান, সমাজে মাদকের কুফল এবং শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রছাত্রীদের উপর প্রভাব প্রচার করতে হবে। ধর্মীয় মূল্যবোধ তৈরি এবং সৃষ্টিকর্তার সাথে ওয়াদা করা ছাড়া তামাক থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। আমরা সম্মিলিতভাবে ময়মনসিংহ বিভাগকে তামাকমুক্ত রাখতে চাই।

সেমিনারে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ এবং অন্যান্য সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।