ঢাকা ০২:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জমির সীমানা প্রাচীর নির্ধারণ সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ত্রিশালে ঘর ভাঙচুরের অভিযোগ

মোমিন তালুকদার
  • আপডেট সময় : ০৪:৫৬:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫
  • / ১৮৭ বার পড়া হয়েছে

ময়মনসিংহের ত্রিশালে আদালতের নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে জমি সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ঘর ভাঙচুর ও মালামাল বিনষ্টের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ত্রিশাল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ভোক্তভোগী পরিবার।

জানা গেছে, উপজেলার বাগান গ্রামের মৃত নূরুল ইসলামের ছেলে ফারুখ আহমেদ (৫৭) ও মৃত খেসাল উদ্দিনের ছেলে আঃ রাজ্জাক (৫৮) গংদের সহিত জমিজমার সীমানা প্রাচীর নির্ধারণ সংক্রান্ত বিরোধের জেরে উভয়ের মধ্যে কলরহ চলে আসছে দীর্ঘদিন যাবৎ। এরই প্রেক্ষিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে গত সোমবার (২ জুন) সকাল আনুমানিক ৮টার সময় আঃ রাজ্জাক গংরা ফারুখ আহমেদের ভোগ দখলকৃত জমিতে ঘর ভাঙচুর ও মালামাল বিনষ্ট করে মালামাল নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীরা ত্রিশাল থানায় অবগত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ফারুখ আহমেদ বাদী হয়ে ৯ জনকে অভিযুক্ত করে গত সোমবার রাতে ত্রিশাল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন যাবত বিভিন্ন বিষয়সহ সম্পত্তির সীমানা নিয়া বিরোধ চলে আসছে অভিযুক্তদের সাথে। এমনকি পাশাপাশি বাড়ি হওয়া অভিযুক্তরা প্রায় বাড়িতে এসে ঝামেলা করে থাকে এবং আদালতের নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে গত সোমবার সকাল ৮টার সময় বসত বাড়িতে প্রবেশ করে অভিযুক্তরা বসত ঘরের টিনের বেড়া ও ঘরে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্র সহ অন্যান্য মালামাল ভাঙচুর করে। এ সময় অর্থ সহ অনেক মালামাল নিয়ে যায়।

ভোক্তভোগী মোছা. নূরুন্নাহার জানায়, এ জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও আমাদের ঘর বাড়ি ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে। ঘরের ভিতর অনেক টাকার সম্পদ ছিল সব নষ্ট করে ফেলেছে। এখানে অনেক খড় ছিল সেগুলোও নিয়ে গেছে।

ভোক্তভোগী শাহরিয়ার ইমন বলেন, সকালে তারা আমাকে বলে ঘরের মধ্যে যা জিনিসপত্র আছে সব কিছু নিয়ে যাওয়ার জন্য তানা হলে সব কিছু নিয়ে যাবে, কিছুই দিবে না। আমি জানাই আদালতে আমরা মামলা করেছি। আদালত থেকে এই জমির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। আদালত থেকে যদি আপনাদের রায় দেয় আমরা জমি বুঝিয়ে দিবো বললেও কিন্তু আমার কোনো কথা শোনেনি। এক পর্যায়ে তারা ভাঙচুর করতে আরম্ভ করলে আমি অপারগ হয়ে ৯৯৯ এ কল দিয়ে থানায় জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন।

স্থানীয় মো. শেখ মিরাজ জানায়, এই জমি নিয়ে এর আগেও একাধিক সালিশ হলেও মীমাংসা হয়নি। থানায়ও এ নিয়ে সালিশ হলেও মীমাংসা হয়নি। এ জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা শুনি নাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুন স্থানীয় বৃদ্ধা বলেন, ফারুখের জমি জোড় করে নেওয়ার লাই¹ার রাজ্জাকরা উইট্টা পাইরা লাগছে। ফারুখরা কি আর করবো, কিল-গোতা খাইয়া খাইয়া ঘুরতেছে। ফারুখের লোকজন নাই, হেগর তো অনেক মানুষ আছে।

ভোক্তভোগী ফারুখ আহমেদ বলেন, বসত বাড়ির সীমা নিয়ে বিরোধের কারণে একের পর এক অন্যায় অত্যাচার করে আসতেছে। স্থানীয় মীমাংসা ও আদালতের নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে সোমবার (২ জুন) সকালে আঃ রাজ্জাকরা লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা করে ঘরের টিনের বেড়া ও ঘরে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্র সহ অন্যান্য মালামাল ভাঙচুর করে ঘরে থাকা টাকা পয়সা নিয়ে যায়।

অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম জানায়, আমাদের এই জায়গা পরিষ্কার করে আমরা পাঁচ ভাইয়ে ঘর নির্মাণ করবো। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা পরিষ্কার করতে গেলে তারা থানা থেকে পুলিশ নিয়ে আসে।

ত্রিশাল থানার এ.এস.আই আউয়াল জানান, আমরা ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। ত্রিশাল থানার ওসি (তদন্ত) মো. মোবারক হোসেন জানান, এ ঘটনায় সোমবার রাতে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

প্রলয়/তাসনিম তুবা 

নিউজটি শেয়ার করুন

ই-পেপার

জমির সীমানা প্রাচীর নির্ধারণ সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ত্রিশালে ঘর ভাঙচুরের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৪:৫৬:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫

ময়মনসিংহের ত্রিশালে আদালতের নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে জমি সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ঘর ভাঙচুর ও মালামাল বিনষ্টের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ত্রিশাল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ভোক্তভোগী পরিবার।

জানা গেছে, উপজেলার বাগান গ্রামের মৃত নূরুল ইসলামের ছেলে ফারুখ আহমেদ (৫৭) ও মৃত খেসাল উদ্দিনের ছেলে আঃ রাজ্জাক (৫৮) গংদের সহিত জমিজমার সীমানা প্রাচীর নির্ধারণ সংক্রান্ত বিরোধের জেরে উভয়ের মধ্যে কলরহ চলে আসছে দীর্ঘদিন যাবৎ। এরই প্রেক্ষিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে গত সোমবার (২ জুন) সকাল আনুমানিক ৮টার সময় আঃ রাজ্জাক গংরা ফারুখ আহমেদের ভোগ দখলকৃত জমিতে ঘর ভাঙচুর ও মালামাল বিনষ্ট করে মালামাল নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীরা ত্রিশাল থানায় অবগত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ফারুখ আহমেদ বাদী হয়ে ৯ জনকে অভিযুক্ত করে গত সোমবার রাতে ত্রিশাল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন যাবত বিভিন্ন বিষয়সহ সম্পত্তির সীমানা নিয়া বিরোধ চলে আসছে অভিযুক্তদের সাথে। এমনকি পাশাপাশি বাড়ি হওয়া অভিযুক্তরা প্রায় বাড়িতে এসে ঝামেলা করে থাকে এবং আদালতের নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে গত সোমবার সকাল ৮টার সময় বসত বাড়িতে প্রবেশ করে অভিযুক্তরা বসত ঘরের টিনের বেড়া ও ঘরে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্র সহ অন্যান্য মালামাল ভাঙচুর করে। এ সময় অর্থ সহ অনেক মালামাল নিয়ে যায়।

ভোক্তভোগী মোছা. নূরুন্নাহার জানায়, এ জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও আমাদের ঘর বাড়ি ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে। ঘরের ভিতর অনেক টাকার সম্পদ ছিল সব নষ্ট করে ফেলেছে। এখানে অনেক খড় ছিল সেগুলোও নিয়ে গেছে।

ভোক্তভোগী শাহরিয়ার ইমন বলেন, সকালে তারা আমাকে বলে ঘরের মধ্যে যা জিনিসপত্র আছে সব কিছু নিয়ে যাওয়ার জন্য তানা হলে সব কিছু নিয়ে যাবে, কিছুই দিবে না। আমি জানাই আদালতে আমরা মামলা করেছি। আদালত থেকে এই জমির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। আদালত থেকে যদি আপনাদের রায় দেয় আমরা জমি বুঝিয়ে দিবো বললেও কিন্তু আমার কোনো কথা শোনেনি। এক পর্যায়ে তারা ভাঙচুর করতে আরম্ভ করলে আমি অপারগ হয়ে ৯৯৯ এ কল দিয়ে থানায় জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন।

স্থানীয় মো. শেখ মিরাজ জানায়, এই জমি নিয়ে এর আগেও একাধিক সালিশ হলেও মীমাংসা হয়নি। থানায়ও এ নিয়ে সালিশ হলেও মীমাংসা হয়নি। এ জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা শুনি নাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুন স্থানীয় বৃদ্ধা বলেন, ফারুখের জমি জোড় করে নেওয়ার লাই¹ার রাজ্জাকরা উইট্টা পাইরা লাগছে। ফারুখরা কি আর করবো, কিল-গোতা খাইয়া খাইয়া ঘুরতেছে। ফারুখের লোকজন নাই, হেগর তো অনেক মানুষ আছে।

ভোক্তভোগী ফারুখ আহমেদ বলেন, বসত বাড়ির সীমা নিয়ে বিরোধের কারণে একের পর এক অন্যায় অত্যাচার করে আসতেছে। স্থানীয় মীমাংসা ও আদালতের নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে সোমবার (২ জুন) সকালে আঃ রাজ্জাকরা লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা করে ঘরের টিনের বেড়া ও ঘরে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্র সহ অন্যান্য মালামাল ভাঙচুর করে ঘরে থাকা টাকা পয়সা নিয়ে যায়।

অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম জানায়, আমাদের এই জায়গা পরিষ্কার করে আমরা পাঁচ ভাইয়ে ঘর নির্মাণ করবো। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা পরিষ্কার করতে গেলে তারা থানা থেকে পুলিশ নিয়ে আসে।

ত্রিশাল থানার এ.এস.আই আউয়াল জানান, আমরা ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। ত্রিশাল থানার ওসি (তদন্ত) মো. মোবারক হোসেন জানান, এ ঘটনায় সোমবার রাতে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

প্রলয়/তাসনিম তুবা