এক পা হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে আরাফাত

- আপডেট সময় : ০৬:০১:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪
- / ১১৩ বার পড়া হয়েছে
পাবনা প্রতিনিধি
এক পা হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে আরাফাত নামের এক যুবক। বলছিলাম পাবনার মালিগাছা ইউনিয়নের মনোহরপুর ব্রাক স্কুল পাড়ার সিরাজুল ইসলামের ছেলে আরাফাতের কথা।
জীবিকার তাগিদে স্ত্রী সন্তান নিয়ে দীর্ঘ ৮ বছর যাবত ঢাকায় থাকতেন আরাফাত। ঢাকা উত্তরার একটি বাসার প্রাইভেটকারের ড্রাইভার হিসেবে চাকুরী করতেন তিনি। ঢাকায় চাকরি করে নিজ সংসারের ব্যয় মেটানোর পাশাপাশি গ্রামের বাড়িতেও টাকা পাঠাতেন আরাফাত। এভাবেই পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে দিন কাটছিলো তার। তবে কপালে বেশিদিন সুখ সইলো না আরাফাতের।
গত ১৮ জুলাই ঢাকার উত্তরায় ছাত্র আন্দোলনে পুলিশ গুলি চালালে বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হন আরাফাত। গুলিবিদ্ধ হওয়ার তিন দিন পর কাটতে হয় পা। গুলিবিদ্ধ হয়ে পা হারানোর পর থেকে তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। একসময় দুই ভাই, বাবা-মা, স্ত্রী ও এক সন্তানের সংসার পরিচালনার দায়িত্ব নেয়া আরাফাত এখন নিজেই বেকার। আগের পেশায় ফিরতে না পেরে, দীর্ঘ এক মাস চিকিৎসা শেষে ফিরে আসেন নিজ গ্রাম মনোহরপুরে।
সরেজমিনে গিয়ে আরাফাতের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে পা হারানোর পর থেকে আর কোন কাজ করতে পারছেন না তিনি। পারছেন না স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে। এখন জরুরী কোন প্রয়োজনে স্ক্র্যাচের সাহায্যে চলাচল করতে হয় তাকে। আরাফাত জানান, এক পা নিয়ে তিনি আর আগের পেশায় ফিরে যেতে পারবেন না। তাই সরকারের কাছে স্থায়ী কোন কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জোড় দাবি জানান তিনি।
কথা হয় আরাফাতের স্ত্রী তানজিলা খাতুনের সাথে তিনি জানান, স্বামী সন্তান নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল তাদের। কিন্তু ১৮ জুলাই আন্দোলনে পায়ে গুলি লেগে পঙ্গুত্ববরণ করেন স্বামী। সংসারে একমাত্র উপার্জনকারি ব্যক্তির আয় বন্ধ হওয়ায় এখন টাকার অভাবে সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়েছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, নিজেদের আবদার মেটানো তো দূরের কথা, টাকার অভাবে ছেলেকে স্কুলেও দিতে পারছেন না তারা। এই অসহায়ত্ব থেকে মুক্তি পেতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার থেকে শুধু আর্থিক সাহায্য নয়, কর্মসংস্থানের দাবি জানান তার স্ত্রী।
ছেলের এক পা হারিয়ে বেকার হয়ে যাওয়ায় এখন কিভাবে সংসার চলবে তাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরেছেন আরাফাতের মা কমেলা বেগম।
এদিকে পা হারানো আরাফাতকে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান ও সামাজিক সুরক্ষা সেবার আওতায় আনা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন পাবনা জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রাশেদুল কবীর।