মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা পেতে পদে পদে হয়রানী : দুর্নীতি ও অনিয়মের আঁতুড় ঘরে পরিনত

- আপডেট সময় : ০২:৫৩:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
- / ৫৮ বার পড়া হয়েছে
ফনি বাবু টপ্য, মিঠাপুকুর
রংপুরের মিঠাপুকুরের সরকারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এখন বাণিজ্যিক হাসপাতালগুলোর এজেন্ট হিসেবে রুপ নিয়েছে। একটু এদিক থেকে ও দিক হলেই সোঁজা রেফার করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা অন্যান্য বাণিজ্যিক হাসপাতালগুলোতে। মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যে ডাক্তাররা আছে তারা কী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তারগুলোর চাইতে কোন অংশে কম অভিজ্ঞ এমন প্রশ্ন জনসাধারণের মনে? নাকি কমিশনের আশায় বাণিজ্যিক মনোভাব থেকে এরকম করা হয় এমন প্রশ্নের সঠিক উত্তর খুঁজে পেতে সরেজমিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন এই প্রতিবেদক।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেন অনিয়ম দূর্নীতির আঁতুড় ঘরে পরিণত হয়েছে। উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি প্রস্তাবিত পৌরসভার নাগরিকদের চিকিৎসা সেবা গ্রহণের একমাত্র সরকারি হাসপাতাল এটি। কিন্তু, এ হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের পদে পদে হয়রানি করা হচ্ছে।
সেবাপ্রার্থীদের সাথে করা হচ্ছে জঘন্য নোংরা আচরণ। এমনকি আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে কয়েকজন রোগীর স্বজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্বয়ং জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তার নাম মাত্র চিকিৎসা সেবা দিয়ে রোগীর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন জানিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিংবা বিভিন্ন বে সরকারী হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার জন্য বলে দেন।
এদিকে, প্রতিবেদক এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়ার পর পুরোদমে অনুসন্ধানে নামে এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে শহিদুল নামক এক শ্রমিক নেতা প্রতিবেদককে জানান, সম্প্রতি প্রস্তাবিত পৌরসভা এলাকার শঠিবাড়িতে একটি মারামারির ঘটনায় এবি পার্টির এক নেতা ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়। পরে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে রংপুরের একটি বেসরকারী হাসপাতালে গিয়ে অপারেশন করাতে বলেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। তাদের কথা মতো বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে সেখানকার ডাক্তারের মাধ্যমে অপারেশন দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যে ¶তস্থানে পচন ধরে। বর্তমানে সে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
প্রকৃতপক্ষে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাইভেট সেবা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন হাসপাতালের এজেন্ট হিসেবেই কাজ করছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের এমন কর্মকান্ডের নিন্দা জানাচ্ছি। অপরদিকে মিঠাপুকুর নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জামায়াত নেতা বলেন, গত কিছুদিন আগে এক আত্মীয়ের এপেন্ডিসাইটিসের কারণে তীব্র ব্যথা উঠলে দ্রুত মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর কোন ধরনের পরী¶া-নিরী¶া ছাড়াই একের পর এক ইনজেকশন পুষ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তার শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটলে কোন প্রকার রেফার সার্টিফিকেট ছাড়াই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়।
তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তাকে রংপুরে নেওয়ার আগেই মৃত্যুবরণ করেন। তার এ মৃত্যুর পিছনে একমাত্র দায়ী মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত ডিউটিতে থাকা ডাক্তার। তারা, চিকিৎসায় অবহেলা ও রোগ না বুঝে ভূল চিকিৎসার কারণে তিনি অকালে মারা গেছেন। এদিকে, ভুক্তভোগীদের এমন অভিযোগের প্রে¶িতে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: রাশেবুল ইসলামের নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং প্রতিবেদককে সরাসরি অফিসে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান তিনি।