রবিউল ইসলাম, লালমনিরহাট
লালমনিরহাট সদরে বড়বাড়ী কলেজ মাঠে, ‘বউ জামাই’ মেলায় চলছে পিঠা উৎসব। গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বিজয়ের মাসে চলছে বউ জামাই মেলায় বিভিন্ন স্বাদের পিঠার উৎসব। লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ী শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গনে ১৫ দিনব্যাপী বউ-জামাই মেলা ও পিঠা মেলার উদ্বোধন করেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির (রংপুর) বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক,ও জেলা বিএনপি’র সভাপতি, ও সাবেক মন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।
১৬ ডিসেম্বর সকাল থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে আগামীকাল ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ মেলার প্রথম দিন থেকেই উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। প্রতিদিন দুপুর থেকেই জেলার বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি আশপাশের জেলা থেকেও পিঠা প্রেমীরা এ পিঠা উৎসবে আসছেন। বিকেলের পর থেকে পিঠার স্বাদ গ্রহণে ব্যস্ত থাকেন পিঠা প্রেমীরা। গরম গরম তেলে ভাজা আর ধোয়া উড়ানো পিঠার স্বাদ নিতে স্টলে স্টলে ভিড় জমান তারা। যাদের ঐতিহ্যগতভাবে পিঠা তৈরির দক্ষতা রয়েছে তারাই মূলত এবার বিভিন্ন পিঠার স্টল দিয়েছেন । উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার ভিন্ন ভিন্ন ধরনের আদি পিঠার স্থান রয়েছে স্টলগুলোতে। এ পিঠাগুলোর এলাকাভেদে রয়েছে বিভিন্ন নাম। এখানে এমন কিছু পিঠা আছে যা সারাদেশেই প্রসিদ্ধ এবং জনপ্রিয়।
এবারের পিঠা মেলায় পাওয়া যাচ্ছে জামাই পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, তেল পিঠা, নারিকেল পিঠা, দুধ পিঠা, পুলি পিঠা, চিতই পিঠা, দুধ চিতই,গুরি পিঠা, ভাঁপা পিঠা, ঝাল পিঠা, ছাঁচ পিঠা, চুটকি পিঠা, চাপড়ি পিঠা, চাঁদ পিঠা, পাতা পিঠা, মালাই পিঠা, মুঠি পিঠা, কুলশি পিঠা, কাটা পিঠা, কলা পিঠা, খেজুরের পিঠা, ক্ষীর কুলি পিঠা, গোকুল পিঠা, গোলাপ ফুল পিঠা, লবঙ্গ লতিকা পিঠা, রসফুল পিঠা, জামদানি পিঠা, হাঁড়ি পিঠা, ঝালপোয়া পিঠা, ঝুরি পিঠা, ঝিনুক পিঠা, সূর্যমুখী পিঠা, নকশি পিঠা, নারকেলে ভাজা পুলি পিঠা, নারকেলের সেদ্ধ পুলি পিঠা, তেজপাতা পিঠা, তেলপোয়া পিঠা, দুধরাজ পিঠা, ফুল ঝুরি পিঠা, ফুল পিঠা, বিবিয়ানা পিঠা ও সেমাই পিঠা। নানা ধরনের আদি পিঠার পসরা নিয়ে বসেছেন পিঠা তৈরির শিল্পীরা।
সন্ধ্যায় লাইটের বিভিন্ন আলোর ঝলকানিতে গরম গরম ধোয়া ওঠা পিঠা উপভোগ করেন আগত পিঠাপ্রেমীরা।
মেলার অপরপ্রান্তে রয়েছে শিশুদের বিনোদনের জন্য ট্রেন, দোলনা, নাগরদোলা, জাম্পিং প্যাড, যাদু প্রদর্শনও মোটরসাইকেল কারের আকর্ষণীয় সার্কাস খেলা। মাঠজুড়ে বসেছে ফুসকা-চটপটিসহ কসমেটিকস, ইলেকট্রিক্যাল সরঞ্জাম, আসবাব, টেক্সটাইল, যন্ত্রপাতি, ইমিটেশন জুয়েলারি, পাটজাত দ্রব্য, তৈজসপত্র, গৃহস্থলিতে ব্যবহারের বিভিন্ন পণ্য, স্টেশনারি, প্লাস্টিক পণ্য, মেলামাইন, খাদ্যসামগ্রী, টয়লেট্রিজ, প্রক্রিয়াজাত খাবার, হস্তশিল্প, গৃহসজ্জা মিলসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রির আমেজ। মেলায় পোশাকের স্টলগুলোতে মেয়েদের থ্রি-পিস, শাড়ি, ওড়না, চাদর ও ছোটদের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। মেলার উত্তর পাশে যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় মাছের স্টল। যেখানে চলছে মাছের প্রদর্শনী ও বিক্রি। আগত দর্শনার্থীরা এগুলো দেখে মেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে কিনছে বিভিন্ন জাতের মাছ।
কুড়িগ্রাম থেকে আসা আশিক (২৫) বলেন, মিডিয়ায় এ মেলার খবর দেখে বউ সন্তানসহ এখানে এসেছি। মেলায় এসে দেখি এখান সব ধরনের কেনাকাটা করা যাচ্ছে ।
একদিকে বসেছে মৎস্য মেলা অন্যদিকে বসেছে পিঠার মেলা। আর এমেলার প্রধান গেটে দেখলাম লেখা বউ জামাই ও মৎস্য মেলা । এক মেলার ভিতরেই সব কিছু পেয়ে যাচ্ছি জন্য ভালোই লাগছে ।
এখন সব ধরনের টুকটাক কেনাকাটা করে বাসায় যাচ্ছি ।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ী বাজারের বাশে থেকে মেলায় এসেছে বদিয়ার রহমান বিপুল (৩৪) ও তার বন্ধুরা। তারা কয়েকজন পিঠা খাচ্ছিলেন। তারা বলেন, বাসায় তো আমরা কম বেশি সবাই পিঠা তৈরি করে খাই। কিন্তু এ পিঠা মেলায় এসে বন্ধুদের নিয়ে পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা।
(২) বছরের শিশু রওজাতুল জান্নাত তার বাবা-মার সঙ্গে ঘুরতে এসেছেন পিঠা মেলায়।
তিনি বলেন, মেলায় এসে অনেক মজা করেছি। এখানে সবকিছুই পাওয়া যাচ্ছে। বাবা-মাসহ অনেক মজা করে পিটাও খেলাম। প্রতিবছর যদি এ এলাকায় এমন আয়োজন হতো তাহলে আমাদের জন্য মাঝেমধ্যে একটু ঘুরতে আসতে সুবিধা হতো।
লালমনিরহাট সদরের বড়বাড়ী এলাকার পিঠার কারিগর সামিউল (৩২) বলেন, আমাদের পিঠা স্টলে বিক্রি মোটামুটি ভালই। তবে মেলা চলবে ১৫ দিন। মেলা কর্তৃপক্ষ যদি একটু সময় বাড়িয়ে দিতেন তাহলে আরো ভালো হতো। প্রথম কয়েকদিন মেলায় লোক সমাগম খুব বেশি ছিল না।
কিন্তু বর্তমানে পিঠা প্রেমীদের উপচে পড়া ভিড়ে বেচাকেনা বেশি হচ্ছে।
মেলা আয়োজক কমিটির আহবায়ক এবিএম ফারুক সিদ্দিকী ও সদস্য সচিব নাজমুল হুদা লিমন, মিজানুর রহমান লাবলু জাতীয় দৈনিক প্রলয়কফ ’কে জানান, গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বউ-জামাই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। বউ জামাই মেলায় থাকছে ‘পিঠা উৎসব’ ও ‘মৎস্য মেলা’। এখানে বিভিন্ন পিঠার স্টলের, পাশাপাশি রয়েছে বড় বড় মাছের স্টলসহ হরেক রকমের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকান। সব মিলিয়ে এ মাঠে প্রায় ১৫০টি দোকান রয়েছে। মেলার পাশাপাশি গ্রাম বাংলার বিভিন্ন ঐতিহ্যকে উপস্থাপন করা হচ্ছে । এছাড়াও নতুন প্রজন্ম বিলুপ্ত প্রায় অনেক প্রজাতির মাছ ও পিঠার সঙ্গে পরিচিত হতে পারছে। সব মিলিয়ে গ্রাম-বাংলার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতেই এ ব্যতিক্রমী মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রণীত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর চূড়ান্ত খসড়া পর্যালোচনা করে আগামী ২০ আগস্টের…
জমিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক টেস্ট অধিনায়ক এবং প্রথম পূর্ণকালীন কোচ বব সিম্পসন। ৮৯ বছর বয়সে সিডনিতে…
ইসরায়েল গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে অধিবাসীদের দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। শনিবার (১৬ আগস্ট) ইসরায়েলি…
অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মো. আবু তালেব আর নেই। রোববার (১৭ আগস্ট) ভোরে হঠাৎ অসুস্থ…
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ…
মনোযোগ ফেরাতে বিদেশি কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের ব্রিফ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। রোববার (১৭ আগস্ট)…
This website uses cookies.