ঢাকা ০৯:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মীরসরাইয়ে অভিজ্ঞতার সনদ জালিয়াতি করে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের অভিযোগ

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:১৩:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১৮৮ বার পড়া হয়েছে

মীরসরাই সংবাদদাতা

চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার মিঠাছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামসেদ আলমের বিরুদ্ধে অভিজ্ঞতার সনদ জালিয়াতি করে অবৈধ পথে প্রধান শিক্ষক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনায় জানা যায়, জামসেদ আলম শিক্ষক -কর্মচারীদের তথ্য ছক (এমপিও) অনুযায়ী ১লা সেপ্টেম্বর ২০০৯ সালে প্রথম এম পি ও ভুক্ত হয়। এর পর ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ সালে তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হোন। তৎকালীন প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে নানা ধরনের মিথ্যা অভিযোগ ও চাপের মুখে এমদাদুল হককে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হন কামরুল হাসান। পরবর্তীতে চলে বলে কৌশলে জামসেদ আলম প্রধান শিক্ষক হন।

তৎকালীন সভাপতি উপজেলা আওয়ামী’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ দিদারের মিঠাছড়া উচ্চ বিদ্যালয় প্যাডে স্বাক্ষরিত অভিজ্ঞতা সনদে দেখা যায় ১ মার্চ ২০০৮ সালে জামসেদ আলমের শারীরিক শিক্ষা পদে যোগদান ও ১ মে ২০০৮ সালে এমপিও তারিখ দেখানো হয়। যা দুই ধরনের তথ্য ছক দেখা যায়।

অপরদিকে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হকের স্বাক্ষরিত মিঠাছড়া উচ্চ বিদ্যালয় প্যাডে গত ৬ জুন ২০২০ইং অভিজ্ঞতা সনদ অনুযায়ী তিনি উক্ত বিদ্যালয়ে গত ২০০৫-২০০৯ তিনি সহকারী শিক্ষক শারীরিক শিক্ষা, (ইনডেক্স নাম্বার ১০৩৯১৩০) পদে যোগদান করেন এবং ১-০৯-২০০৯ইং তারিখে এমপিওভুক্ত হয়। সেই অনুযায়ী তার ১৩ বছর ১০ মাস ২৮ দিনে জামসেদ আলম প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন। মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিধি মোতাবেক মাধ্যমিক বিদ্যালয় ইনডেক্সধারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩ বছরের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অভিজ্ঞতাসহ এমপিও ভুক্তির পরে মোট ১৫ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা বাধ্যতামুলক। যা জামসেদ আলমের নেই।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে এমদাদুল হক বলেন, আমি যতটুকু জানি উনি জামশেদ সাহেবের জন্য আমি যে অভিজ্ঞতা সনদ দিয়েছি সেটা অনুযায়ী ১-০৯-২০০৯ইং তারিখে এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। সেই অনুযায়ী আমি আমার প্যাডে সেটা উল্লেখ অভিজ্ঞতা সনদ দিয়েছি।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক জামসেদ আলমের কাছে জানতে চাইলে, তিনি তার প্রধান শিক্ষক হওয়ার যে ১৫ বছর হয়নি এ বিষয়ে তিনি জানান, আমি ১-০৯-২০০৯ এমপিওভুক্ত হই। কিন্তু শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ হওয়ার প্রায় ৫-৬ মাস পর এমপিওভুক্ত হই। আমি যে বাড়তি টাকাটা আসছিলো তা সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিয়েছি।

এই ব্যাপারে আওয়ামীলীগ নেতা স্কুল কমিটির তৎকালীন সভাপতি সাইফুল্লাহ দিদারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও উনি ফোন রিসিভ করেননি।

উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির খান বলেন, মিঠাছড়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক জামশেদ আলমের ১ বছর ১-২ মাস কমের বিষয়টি আমরা তার নিয়োগ এর পরে জানতে পেরেছি। আমরা তখন ঝামেলা থাকায় কাগজ পত্র গুলো সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করা সম্ভব হয়নি। পরে বিষয়টি জানতে পেরে উনার কাছে জানানোর পর উনি সোনালী ব্যাংকের পে-অর্ডার মাধ্যমে টাকা ফেরত দিয়েছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা অফিসার উত্তম খীসা বলেন, মিঠাছড়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি আসলে ম্যানেজিং কমিটি দেখবে। এই বিষয়ে আমার কোন কমেন্ট নেই।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

মীরসরাইয়ে অভিজ্ঞতার সনদ জালিয়াতি করে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৬:১৩:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

মীরসরাই সংবাদদাতা

চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার মিঠাছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামসেদ আলমের বিরুদ্ধে অভিজ্ঞতার সনদ জালিয়াতি করে অবৈধ পথে প্রধান শিক্ষক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনায় জানা যায়, জামসেদ আলম শিক্ষক -কর্মচারীদের তথ্য ছক (এমপিও) অনুযায়ী ১লা সেপ্টেম্বর ২০০৯ সালে প্রথম এম পি ও ভুক্ত হয়। এর পর ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ সালে তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হোন। তৎকালীন প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে নানা ধরনের মিথ্যা অভিযোগ ও চাপের মুখে এমদাদুল হককে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হন কামরুল হাসান। পরবর্তীতে চলে বলে কৌশলে জামসেদ আলম প্রধান শিক্ষক হন।

তৎকালীন সভাপতি উপজেলা আওয়ামী’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ দিদারের মিঠাছড়া উচ্চ বিদ্যালয় প্যাডে স্বাক্ষরিত অভিজ্ঞতা সনদে দেখা যায় ১ মার্চ ২০০৮ সালে জামসেদ আলমের শারীরিক শিক্ষা পদে যোগদান ও ১ মে ২০০৮ সালে এমপিও তারিখ দেখানো হয়। যা দুই ধরনের তথ্য ছক দেখা যায়।

অপরদিকে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হকের স্বাক্ষরিত মিঠাছড়া উচ্চ বিদ্যালয় প্যাডে গত ৬ জুন ২০২০ইং অভিজ্ঞতা সনদ অনুযায়ী তিনি উক্ত বিদ্যালয়ে গত ২০০৫-২০০৯ তিনি সহকারী শিক্ষক শারীরিক শিক্ষা, (ইনডেক্স নাম্বার ১০৩৯১৩০) পদে যোগদান করেন এবং ১-০৯-২০০৯ইং তারিখে এমপিওভুক্ত হয়। সেই অনুযায়ী তার ১৩ বছর ১০ মাস ২৮ দিনে জামসেদ আলম প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন। মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিধি মোতাবেক মাধ্যমিক বিদ্যালয় ইনডেক্সধারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩ বছরের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অভিজ্ঞতাসহ এমপিও ভুক্তির পরে মোট ১৫ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা বাধ্যতামুলক। যা জামসেদ আলমের নেই।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে এমদাদুল হক বলেন, আমি যতটুকু জানি উনি জামশেদ সাহেবের জন্য আমি যে অভিজ্ঞতা সনদ দিয়েছি সেটা অনুযায়ী ১-০৯-২০০৯ইং তারিখে এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। সেই অনুযায়ী আমি আমার প্যাডে সেটা উল্লেখ অভিজ্ঞতা সনদ দিয়েছি।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক জামসেদ আলমের কাছে জানতে চাইলে, তিনি তার প্রধান শিক্ষক হওয়ার যে ১৫ বছর হয়নি এ বিষয়ে তিনি জানান, আমি ১-০৯-২০০৯ এমপিওভুক্ত হই। কিন্তু শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ হওয়ার প্রায় ৫-৬ মাস পর এমপিওভুক্ত হই। আমি যে বাড়তি টাকাটা আসছিলো তা সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিয়েছি।

এই ব্যাপারে আওয়ামীলীগ নেতা স্কুল কমিটির তৎকালীন সভাপতি সাইফুল্লাহ দিদারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও উনি ফোন রিসিভ করেননি।

উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির খান বলেন, মিঠাছড়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক জামশেদ আলমের ১ বছর ১-২ মাস কমের বিষয়টি আমরা তার নিয়োগ এর পরে জানতে পেরেছি। আমরা তখন ঝামেলা থাকায় কাগজ পত্র গুলো সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করা সম্ভব হয়নি। পরে বিষয়টি জানতে পেরে উনার কাছে জানানোর পর উনি সোনালী ব্যাংকের পে-অর্ডার মাধ্যমে টাকা ফেরত দিয়েছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা অফিসার উত্তম খীসা বলেন, মিঠাছড়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি আসলে ম্যানেজিং কমিটি দেখবে। এই বিষয়ে আমার কোন কমেন্ট নেই।