ঢাকা ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রে মেডিকেয়ার জালিয়াতিতে ২ জন গ্রেফতার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:০৫:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
  • / ৪ বার পড়া হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্রে ২২৭ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মেডিকেয়ার জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে দুই ব্যক্তি আইনি বিপর্যয়ে পড়েছেন। গতকাল গ্রেফতার হওয়া সাইয়েদ মুরতুজা কাবলাজাদা (৩৪), আরলিংটন হাইটস, ইলিনয় এবং সাইয়েদ মেহেদী হুসাইন (৩২), ক্যারল স্ট্রিম, ইলিনয়ের বাসিন্দা।

তারা তাদের কথিত মেডিকেল ল্যাবরেটরির মাধ্যমে মেডিকেয়ার থেকে প্রতারণামূলকভাবে বিপুল অর্থ আদায় করেছেন বলে অভিযোগ করেছে মার্কিন বিচার বিভাগ।

অভিযোগপত্র অনুযায়ী, কাবলাজাদা ও হুসাইন পরিকল্পিতভাবে বিদেশি নাগরিকদের ভুয়া মালিক হিসেবে ব্যবহার করেছেন যাতে এই ল্যাবরেটরিগুলো মেডিকেয়ার এর কাছে কোভিড-১৯ পরীক্ষার নামে ভুয়া দাবি দাখিল করে অর্থ আদায় করতে পারে।

অভিযোগে আরও বলা হয়, এই ভুয়া মালিকদের এমনভাবে বসানো হয়েছিল যাতে তদন্ত শুরু হলে তারা দেশ ছেড়ে পালাতে পারে। বিচার বিভাগের অপরাধ বিভাগ প্রধান ম্যাথিউ আর. গ্যালিওটি বলেন, ‘অভিযোগ অনুযায়ী, আসামিরা একাধিক ল্যাবে ভুয়া মালিক নিযুক্ত করে ২০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি ভুয়া দাবি মেডিকেয়ার এ দাখিল করেছে কোভিড-১৯ পরীক্ষার নামে।’

অথচ তারা এসব কিট অনেক সময় সরবরাহই করেননি। বরং মৃতসহ এমন বহু ব্যক্তির নামেও দাবি দাখিল করেছে, যারা আদৌ পরীক্ষার অনুরোধ করেননি। এই জালিয়াতির পরিমাণ অবিশ্বাস্য।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে অভিযুক্তদের পরিচালিত ল্যাবরেটরিগুলো মেডিকেয়ার এর কাছে মোট ২২৭ মিলিয়ন ডলারের বিল দাখিল করেছে, যার মধ্যে প্রায় ১৩৬ মিলিয়ন ডলার পরিশোধও করা হয়েছে।

বর্তমানে কাবলাজাদা ও হুসাইনের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যসেবা জালিয়াতির চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। এই গুরুতর প্রতারণার জবাবে, এফবিআই-এর শিকাগো ফিল্ড অফিস এবং স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের মহাপরিদর্শক কার্যালয় ( এইচএইচএস-ওআইজি) সক্রিয়ভাবে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

এফবিআই-এর শিকাগো অফিসের বিশেষ এজেন্ট ডগলাস এস. ডিপোডেস্টা বলেন, ‘এই তদন্তে যে বিস্ময়কর মাত্রার জালিয়াতি প্রকাশ পেয়েছে তা মেডিকেয়ারসহ আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার প্রতি চরম অবহেলার নিদর্শন এবং এতে সব রোগীর নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে।’

মেডিকেয়ার, সেন্টারস ফর মেডিকেয়ার অ্যান্ড মেডিকেড সার্ভিসেস (সিএমএস) এবং এইচএইচএস এর পরিদর্শক দপ্তর এই ধরনের জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করছে।

তবে এই মুহূর্তে কাবলাজাদা ও হুসাইনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো এখনো আদালতে প্রমাণিত হয়নি। একজন ব্যক্তিকে আদালতে সন্দেহাতীতভাবে দোষী প্রমাণিত না করা পর্যন্ত তিনি আইনের চোখে নির্দোষ। এই মামলাটি পরিচালনা করছেন বিচার বিভাগের অপরাধ বিভাগের জালিয়াতি শাখার ট্রায়াল অ্যাটর্নি আন্দ্রেস কিউ আলমেন্দারেজ, সহায়তা করছেন ইলিনয়ের উত্তর জেলা থেকে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইউএস অ্যাটর্নি জাসমিনা ভাইজোভিচ।

 

 

প্রলয়/তাসনিম তুবা 

নিউজটি শেয়ার করুন

ই-পেপার

যুক্তরাষ্ট্রে মেডিকেয়ার জালিয়াতিতে ২ জন গ্রেফতার

আপডেট সময় : ১২:০৫:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে ২২৭ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মেডিকেয়ার জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে দুই ব্যক্তি আইনি বিপর্যয়ে পড়েছেন। গতকাল গ্রেফতার হওয়া সাইয়েদ মুরতুজা কাবলাজাদা (৩৪), আরলিংটন হাইটস, ইলিনয় এবং সাইয়েদ মেহেদী হুসাইন (৩২), ক্যারল স্ট্রিম, ইলিনয়ের বাসিন্দা।

তারা তাদের কথিত মেডিকেল ল্যাবরেটরির মাধ্যমে মেডিকেয়ার থেকে প্রতারণামূলকভাবে বিপুল অর্থ আদায় করেছেন বলে অভিযোগ করেছে মার্কিন বিচার বিভাগ।

অভিযোগপত্র অনুযায়ী, কাবলাজাদা ও হুসাইন পরিকল্পিতভাবে বিদেশি নাগরিকদের ভুয়া মালিক হিসেবে ব্যবহার করেছেন যাতে এই ল্যাবরেটরিগুলো মেডিকেয়ার এর কাছে কোভিড-১৯ পরীক্ষার নামে ভুয়া দাবি দাখিল করে অর্থ আদায় করতে পারে।

অভিযোগে আরও বলা হয়, এই ভুয়া মালিকদের এমনভাবে বসানো হয়েছিল যাতে তদন্ত শুরু হলে তারা দেশ ছেড়ে পালাতে পারে। বিচার বিভাগের অপরাধ বিভাগ প্রধান ম্যাথিউ আর. গ্যালিওটি বলেন, ‘অভিযোগ অনুযায়ী, আসামিরা একাধিক ল্যাবে ভুয়া মালিক নিযুক্ত করে ২০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি ভুয়া দাবি মেডিকেয়ার এ দাখিল করেছে কোভিড-১৯ পরীক্ষার নামে।’

অথচ তারা এসব কিট অনেক সময় সরবরাহই করেননি। বরং মৃতসহ এমন বহু ব্যক্তির নামেও দাবি দাখিল করেছে, যারা আদৌ পরীক্ষার অনুরোধ করেননি। এই জালিয়াতির পরিমাণ অবিশ্বাস্য।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে অভিযুক্তদের পরিচালিত ল্যাবরেটরিগুলো মেডিকেয়ার এর কাছে মোট ২২৭ মিলিয়ন ডলারের বিল দাখিল করেছে, যার মধ্যে প্রায় ১৩৬ মিলিয়ন ডলার পরিশোধও করা হয়েছে।

বর্তমানে কাবলাজাদা ও হুসাইনের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যসেবা জালিয়াতির চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। এই গুরুতর প্রতারণার জবাবে, এফবিআই-এর শিকাগো ফিল্ড অফিস এবং স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের মহাপরিদর্শক কার্যালয় ( এইচএইচএস-ওআইজি) সক্রিয়ভাবে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

এফবিআই-এর শিকাগো অফিসের বিশেষ এজেন্ট ডগলাস এস. ডিপোডেস্টা বলেন, ‘এই তদন্তে যে বিস্ময়কর মাত্রার জালিয়াতি প্রকাশ পেয়েছে তা মেডিকেয়ারসহ আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার প্রতি চরম অবহেলার নিদর্শন এবং এতে সব রোগীর নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে।’

মেডিকেয়ার, সেন্টারস ফর মেডিকেয়ার অ্যান্ড মেডিকেড সার্ভিসেস (সিএমএস) এবং এইচএইচএস এর পরিদর্শক দপ্তর এই ধরনের জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করছে।

তবে এই মুহূর্তে কাবলাজাদা ও হুসাইনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো এখনো আদালতে প্রমাণিত হয়নি। একজন ব্যক্তিকে আদালতে সন্দেহাতীতভাবে দোষী প্রমাণিত না করা পর্যন্ত তিনি আইনের চোখে নির্দোষ। এই মামলাটি পরিচালনা করছেন বিচার বিভাগের অপরাধ বিভাগের জালিয়াতি শাখার ট্রায়াল অ্যাটর্নি আন্দ্রেস কিউ আলমেন্দারেজ, সহায়তা করছেন ইলিনয়ের উত্তর জেলা থেকে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইউএস অ্যাটর্নি জাসমিনা ভাইজোভিচ।

 

 

প্রলয়/তাসনিম তুবা