ঢাকা ১১:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রতন সরকার স্মৃতি পদক’ পেলেন উপকূলের সাংবাদিক তারিক লিটু

কয়রা প্রতিনিধি, খুলনা
  • আপডেট সময় : ০৪:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
  • / ৩২ বার পড়া হয়েছে

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ
সাংবাদিকতা শুধু খবরের পেছনে ছোটা নয় এটি দায়িত্ব, সাহস, সময়ের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার একটি লড়াই। সেই লড়াইয়ে নিরন্তর সংগ্রাম করে, প্রান্তিক জনপদের বাস্তবতা তুলে ধরে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে নির্ভীকভাবে কলম চালিয়ে ‘চারণ সাংবাদিক রতন সরকার স্মৃতি পদক–২০২৪’ অর্জন করেছেন তরুণ সাংবাদিক তারিক লিটু।

জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে বুধবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে তারিক লিটুর হাতে এ সম্মাননা তুলে দেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)-এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা বলেন, “তারিক লিটু শুধু একজন সাংবাদিক নন, তিনি মফস্বল সাংবাদিকতার এক উজ্জ্বল প্রতিচ্ছবির সাহস, সততা ও দায়বদ্ধতার নাম।”

বর্তমানে ইংরেজি দৈনিক লিবার্টি নিউজ-এর বার্তা সম্পাদক হিসেবে কর্মরত তারিক লিটু এর আগে দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যম সমকাল, জাগো নিউজ, যায়যায়দিনসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিকতা করেছেন। তার প্রতিবেদনের মূল বিষয়বস্তু ছিল দুর্নীতি, প্রশাসনিক অনিয়ম, পরিবেশ ধ্বংস ও ভূমি দখলের মতো গুরুতর ইস্যু।

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে এসে সাংবাদিকতায় যুক্ত হন তারিক লিটু। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব। এরপরে নিজ এলাকায় খুলনার উপকূলবর্তী কয়রা উপজেলায় তৈরি করেন ‘কয়রা সাংবাদিক ফোরাম’। ছাত্রজীবনে সাংবাদিকতার সূচনা হলেও পেশাগতভাবে নিজেকে তুলে ধরেছেন একাগ্রতা, নিষ্ঠা ও নিরবচ্ছিন্ন শ্রমের মাধ্যমে।

তারিক লিটুর সাংবাদিকতা কখনো ছিল না চেহারাভিত্তিক বা ইভেন্টনির্ভর। তিনি বরাবরই অনুসন্ধানকে গুরুত্ব দিয়েছেন। দুর্নীতিবাজ প্রভাবশালী, বনদস্যু, ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে তৈরি করেছেন আলোচনার ঝড়। কখনো খুলনার কয়রায় লুটের চিত্র, কখনো উপকূলবাসীর দুর্ভোগ—তার প্রতিবেদনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল সবসময় জনস্বার্থ।

এসব কারণে একাধিকবার তাকে হামলা ও হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে, মামলার আসামিও হতে হয়েছে। কিন্তু তিনি পিছু হঠেননি। বরং সত্য প্রকাশে আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়েছেন।

তারিক লিটু শুধুই সাংবাদিক নয়, তিনি সামাজিক দায়িত্বও কাঁধে নিয়েছেন। খুলনার উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু সচেতনতা, মানবিক ত্রাণ কার্যক্রম, দুর্যোগপূর্ব প্রস্তুতি ও শিক্ষা সহায়তার বিভিন্ন উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে যুক্ত আছেন তিনি। সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকায় মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্কট এবং রাষ্ট্রীয় সহায়তার সীমাবদ্ধতা নিয়ে তিনি প্রতিবেদন যেমন করেছেন, তেমনি মাঠেও থেকেছেন।

সম্মাননা গ্রহণের প্রতিক্রিয়ায় তারিক লিটু বলেন, এই পদক শুধু আমার একার নয়, দেশের হাজারো মফস্বল সাংবাদিকের; যারা প্রতিদিন প্রতিকূলতার মধ্যে থেকেও কলম ধরে রাখেন। আমি বিশ্বাস করি, সাংবাদিকতা হবে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে, যেকোনো মূল্যে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা যারা মাঠে কাজ করি, আমাদের সত্য বলার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া দরকার। তাহলে রাষ্ট্রও উপকৃত হবে, সমাজও লাভবান হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

রতন সরকার স্মৃতি পদক’ পেলেন উপকূলের সাংবাদিক তারিক লিটু

আপডেট সময় : ০৪:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ
সাংবাদিকতা শুধু খবরের পেছনে ছোটা নয় এটি দায়িত্ব, সাহস, সময়ের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার একটি লড়াই। সেই লড়াইয়ে নিরন্তর সংগ্রাম করে, প্রান্তিক জনপদের বাস্তবতা তুলে ধরে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে নির্ভীকভাবে কলম চালিয়ে ‘চারণ সাংবাদিক রতন সরকার স্মৃতি পদক–২০২৪’ অর্জন করেছেন তরুণ সাংবাদিক তারিক লিটু।

জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে বুধবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে তারিক লিটুর হাতে এ সম্মাননা তুলে দেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)-এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা বলেন, “তারিক লিটু শুধু একজন সাংবাদিক নন, তিনি মফস্বল সাংবাদিকতার এক উজ্জ্বল প্রতিচ্ছবির সাহস, সততা ও দায়বদ্ধতার নাম।”

বর্তমানে ইংরেজি দৈনিক লিবার্টি নিউজ-এর বার্তা সম্পাদক হিসেবে কর্মরত তারিক লিটু এর আগে দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যম সমকাল, জাগো নিউজ, যায়যায়দিনসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিকতা করেছেন। তার প্রতিবেদনের মূল বিষয়বস্তু ছিল দুর্নীতি, প্রশাসনিক অনিয়ম, পরিবেশ ধ্বংস ও ভূমি দখলের মতো গুরুতর ইস্যু।

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে এসে সাংবাদিকতায় যুক্ত হন তারিক লিটু। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব। এরপরে নিজ এলাকায় খুলনার উপকূলবর্তী কয়রা উপজেলায় তৈরি করেন ‘কয়রা সাংবাদিক ফোরাম’। ছাত্রজীবনে সাংবাদিকতার সূচনা হলেও পেশাগতভাবে নিজেকে তুলে ধরেছেন একাগ্রতা, নিষ্ঠা ও নিরবচ্ছিন্ন শ্রমের মাধ্যমে।

তারিক লিটুর সাংবাদিকতা কখনো ছিল না চেহারাভিত্তিক বা ইভেন্টনির্ভর। তিনি বরাবরই অনুসন্ধানকে গুরুত্ব দিয়েছেন। দুর্নীতিবাজ প্রভাবশালী, বনদস্যু, ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে তৈরি করেছেন আলোচনার ঝড়। কখনো খুলনার কয়রায় লুটের চিত্র, কখনো উপকূলবাসীর দুর্ভোগ—তার প্রতিবেদনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল সবসময় জনস্বার্থ।

এসব কারণে একাধিকবার তাকে হামলা ও হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে, মামলার আসামিও হতে হয়েছে। কিন্তু তিনি পিছু হঠেননি। বরং সত্য প্রকাশে আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়েছেন।

তারিক লিটু শুধুই সাংবাদিক নয়, তিনি সামাজিক দায়িত্বও কাঁধে নিয়েছেন। খুলনার উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু সচেতনতা, মানবিক ত্রাণ কার্যক্রম, দুর্যোগপূর্ব প্রস্তুতি ও শিক্ষা সহায়তার বিভিন্ন উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে যুক্ত আছেন তিনি। সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকায় মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্কট এবং রাষ্ট্রীয় সহায়তার সীমাবদ্ধতা নিয়ে তিনি প্রতিবেদন যেমন করেছেন, তেমনি মাঠেও থেকেছেন।

সম্মাননা গ্রহণের প্রতিক্রিয়ায় তারিক লিটু বলেন, এই পদক শুধু আমার একার নয়, দেশের হাজারো মফস্বল সাংবাদিকের; যারা প্রতিদিন প্রতিকূলতার মধ্যে থেকেও কলম ধরে রাখেন। আমি বিশ্বাস করি, সাংবাদিকতা হবে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে, যেকোনো মূল্যে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা যারা মাঠে কাজ করি, আমাদের সত্য বলার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া দরকার। তাহলে রাষ্ট্রও উপকৃত হবে, সমাজও লাভবান হবে।