ঢাকা ০৪:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

মুক্তিযুদ্ধের এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় আমতলী

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:৫২:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৮০ বার পড়া হয়েছে
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
১৪ ডিসেম্বর ৭১”এ দিনে বরগুনার আমতলী থানা হানাদার মুক্ত হয়েছিল। ১১ ডিসেম্বর বরগুনার বুকাবুনিয়া ক্যাস্প থেকে নৌকা যোগে হাবিলদার হাতেম আলী, আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস ও মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে দু’দল মুক্তিবাহিনী পঁচাকোড়ালিয়া হয়ে আড়পাঙ্গাশিয়া বাজারে আসে। ১২ ডিসেম্বর আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস ও নুরুল ইসলাম পাশা তালুকদারের নেতৃত্বে একদল মুক্তি বাহিনী কুকুয়া শহীদ সোহরাওয়ার্দী মাধ্যমিক বিদ্যালয় পৌছেন। ওইখানে নিজাম তালুকদারের নেতৃত্বে অস্থায়ী ক্যাস্প করা হয়। ১৩ ডিসেম্বর সকালে তারা ওসি রইস উদ্দিন ভূইয়ার ভাবে আমতলী থানা মুক্তি বাহিনীর হাতে ছেড়ে দিতে রাজি হয়ে ক্যাম্পে তাদের মাধ্যমে একটি চিঠি পাঠায়। এদিকে ওসি রইস উদ্দিন ভুইয়ার সমঝোতা চিঠিটি ছিল পাতাফাঁদ ।
মুক্তি বাহিনী থানায় আসলে গুলি করে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ওসি’র এ পরিকল্পনা মুক্তি বাহিনী জেনে যায়। রাত আনুমানিক ৮ টার দিকে মুক্তি ও মুজিব বাহিনী যৌথ ভাবে “জয় বাংলা” শ্লোগান দিয়ে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়লে জবাবে রইস উদ্দিন ও রাজাকার বাহিনী বর্ষার মত গুলি ছোঁড়ে। শুরু হয় যুদ্ধ।
রাতভর গুলি বিনিময়ে এক নৌকার মাঝি শহীদ হয় (তার নাম পাওয়া যায়নি)। মুক্তিকামী জনতা দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্ত থেকে বিজয় মিছিল নিয়ে থানার দিকে আসতে থাকে এবং মুক্তিবাহিনী নদী পাড় হয়ে উত্তর প্রাপ্ত থেকে থানার দিকে অগ্রসর হয়। অবস্থার বেগতিক দেখে ওসি রইস উদ্দিন, পুলিশ ও রাজাকার বাহিনী সাদা পতাকা উত্তোলন করে আত্মসমর্পনের আহবান জানান। ১৪ ডিসেম্বর সকাল ৮ টায় মুক্তি – মুজিব বাহিনী যৌথ ভাবে এবং জাগ্রতজনতা “ জয় বাংলা” শ্লোগান দিয়ে থানার প্রথম ফটকে প্রবেশ করে। এ সময় ওসি রইস উদ্দিন ভূইয়া ও তার বাহিনী অস্ত্র তুলে আত্মসমর্পন করে। পরে আওয়ামী লীগ নেতা আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস ও নুরুল ইসলাম পাশা তালুকদার ওসি রইস উদ্দিনসহ তার সহোযোগীদের আটক করে। মুক্তিযোদ্ধা আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং উপস্থিত জনতা জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আমতলী থানাকে মুক্তাঞ্চল ঘোষনা করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

মুক্তিযুদ্ধের এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় আমতলী

আপডেট সময় : ০৩:৫২:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
১৪ ডিসেম্বর ৭১”এ দিনে বরগুনার আমতলী থানা হানাদার মুক্ত হয়েছিল। ১১ ডিসেম্বর বরগুনার বুকাবুনিয়া ক্যাস্প থেকে নৌকা যোগে হাবিলদার হাতেম আলী, আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস ও মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে দু’দল মুক্তিবাহিনী পঁচাকোড়ালিয়া হয়ে আড়পাঙ্গাশিয়া বাজারে আসে। ১২ ডিসেম্বর আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস ও নুরুল ইসলাম পাশা তালুকদারের নেতৃত্বে একদল মুক্তি বাহিনী কুকুয়া শহীদ সোহরাওয়ার্দী মাধ্যমিক বিদ্যালয় পৌছেন। ওইখানে নিজাম তালুকদারের নেতৃত্বে অস্থায়ী ক্যাস্প করা হয়। ১৩ ডিসেম্বর সকালে তারা ওসি রইস উদ্দিন ভূইয়ার ভাবে আমতলী থানা মুক্তি বাহিনীর হাতে ছেড়ে দিতে রাজি হয়ে ক্যাম্পে তাদের মাধ্যমে একটি চিঠি পাঠায়। এদিকে ওসি রইস উদ্দিন ভুইয়ার সমঝোতা চিঠিটি ছিল পাতাফাঁদ ।
মুক্তি বাহিনী থানায় আসলে গুলি করে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ওসি’র এ পরিকল্পনা মুক্তি বাহিনী জেনে যায়। রাত আনুমানিক ৮ টার দিকে মুক্তি ও মুজিব বাহিনী যৌথ ভাবে “জয় বাংলা” শ্লোগান দিয়ে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়লে জবাবে রইস উদ্দিন ও রাজাকার বাহিনী বর্ষার মত গুলি ছোঁড়ে। শুরু হয় যুদ্ধ।
রাতভর গুলি বিনিময়ে এক নৌকার মাঝি শহীদ হয় (তার নাম পাওয়া যায়নি)। মুক্তিকামী জনতা দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্ত থেকে বিজয় মিছিল নিয়ে থানার দিকে আসতে থাকে এবং মুক্তিবাহিনী নদী পাড় হয়ে উত্তর প্রাপ্ত থেকে থানার দিকে অগ্রসর হয়। অবস্থার বেগতিক দেখে ওসি রইস উদ্দিন, পুলিশ ও রাজাকার বাহিনী সাদা পতাকা উত্তোলন করে আত্মসমর্পনের আহবান জানান। ১৪ ডিসেম্বর সকাল ৮ টায় মুক্তি – মুজিব বাহিনী যৌথ ভাবে এবং জাগ্রতজনতা “ জয় বাংলা” শ্লোগান দিয়ে থানার প্রথম ফটকে প্রবেশ করে। এ সময় ওসি রইস উদ্দিন ভূইয়া ও তার বাহিনী অস্ত্র তুলে আত্মসমর্পন করে। পরে আওয়ামী লীগ নেতা আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস ও নুরুল ইসলাম পাশা তালুকদার ওসি রইস উদ্দিনসহ তার সহোযোগীদের আটক করে। মুক্তিযোদ্ধা আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং উপস্থিত জনতা জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আমতলী থানাকে মুক্তাঞ্চল ঘোষনা করা হয়।