দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে ইসলামাবাদে রাষ্ট্রদূত পাঠাচ্ছে আফগানিস্তান

- আপডেট সময় : ১০:০২:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
- / ২৫ বার পড়া হয়েছে
আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। পাকিস্তান তাদের কাবুল মিশনকে রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে উন্নীত করার একদিনের মাথায় আফগানিস্তানও ইসলামাবাদে তাদের কূটনৈতিক মিশনের মর্যাদা রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছে।
শনিবার এক বিবৃতিতে আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘ইসলামিক এমিরেট অব আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাকিস্তান সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে। পারস্পরিকতার ভিত্তিতে ইসলামাবাদে আফগান মিশনের মর্যাদা চার্জ দ্য’অ্যাফেয়ার্স থেকে রাষ্ট্রদূতে উন্নীত করা হবে।’
উল্লেখযোগ্য যে, দীর্ঘদিন ধরেই দুই দেশের রাজধানীতে দূতাবাস থাকলেও তা পূর্ণ রাষ্ট্রদূতের পরিবর্তে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিল। কূটনৈতিক স্তরে এই পরিবর্তনকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই উন্নয়ন চীন-আয়োজিত সাম্প্রতিক বৈঠকের ফলাফল হতে পারে, যেখানে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ইসলামাবাদ ও কাবুলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। বৈঠকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান ‘রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে সম্পর্ক উন্নীত করার ব্যাপারে স্পষ্ট আগ্রহ’ প্রকাশ করে বলে জানিয়েছিলেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে দীর্ঘ ২,৫০০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে, যেখানে একাধিক বাণিজ্য ও যোগাযোগের পথ বিদ্যমান। তবে সীমান্তঘেঁষা এলাকায় নিরাপত্তা ইস্যু, বিশেষ করে সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম নিয়ে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েন চলছিল।
সম্প্রতি পাকিস্তান অভিযোগ করে আসছে, আফগান ভূখণ্ড থেকে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে। তবে তালেবান প্রশাসনের এক কমান্ডার সাঈদুল্লাহ সাঈদ স্পষ্টভাবে এসব গোষ্ঠীকে সতর্ক করে বলেছেন, পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে জিহাদের নামে হামলা বরদাস্ত করা হবে না।
এদিকে ইসলামাবাদ ও বেইজিং যৌথভাবে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) আফগানিস্তানে সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে করে আঞ্চলিক বাণিজ্য, অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক সংযোগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হতে পারে।
এর আগে, গত মাসে কাবুলে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি ও পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের মধ্যে একটি বিরল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পাকিস্তান থেকে আফগান অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুত্তাকি। উভয় দেশ নিরাপত্তা, বাণিজ্য, ট্রানজিট এবং সামগ্রিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে গঠনমূলক পরিবেশে সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করে।
দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের এই নতুন ধাপ আগামী দিনে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রলয়/তাসনিম তুবা