ঢাকা ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভাঙ্গায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৫৯:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ১৩৬ বার পড়া হয়েছে

ওয়াহিদুজ জামান, ক্রাইম রিপোর্টার ফরিদপুর 

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন,সহকারী কমিশনার ভূমি মেশকাতুল জান্নাত রাবেয়া,থানা অফিসার ইনচার্জ মো. মোকসেদুর রহমানের,নির্বাচন অফিসার মো. হাচেন উদ্দিন,বিএনপির সভাপতি আলহাজ খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম,বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান পান্না,ভাঙ্গা উপজেলা বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুর রহমান মোতালেব মিয়া,জমির আলী সরকার,সাংবাদিক মজিবুর রহমান মুন্সী,দৈনিক প্রলয় পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা করেন । ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের শেষলগ্নে পুরো দেশের মানুষ যখন চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মেতে ওঠে বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞে। বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে বাঙালিকে মেধাশূন্য করার এ নৃশংস নিধনযজ্ঞ সেদিন গোটা জাতিসহ পুরো বিশ্বকেই হতবিহ্বল করে দিয়েছিল। এর ২ দিনের মাথায় ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানি বাহিনী। এর মধ্যদিয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে অভ্যুদয় ঘটে বাংলাদেশের।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে ঘাতকচক্র কেবল ঢাকা শহরেই প্রায় দেড়শ বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার কৃতী মানুষকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে। সান্ধ্য আইনের মধ্যে সেই রাতে তালিকা ধরে ধরে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী ও পদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় নিস্তব্ধ ভূতুড়ে অন্ধকারে।

পরদিন সকালে ঢাকার মিরপুরের ডোবা-নালা ও রায়েরবাজার ইটখোলাতে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায় অনেক নিথর দেহ। কারও শরীর বুলেটবিদ্ধ, কারও অমানুষিক নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত। হাত পেছনে বেঁধে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নাড়িভুঁড়িও বের করে ফেলা হয়েছে অনেকের। স্বাধীনতার ঊষালগ্নে উন্মুখ মানুষ স্বজন হারানোর সেই কালরাত্রির কথা জানতে পেরে শিউরে উঠেছিল। স্থবির হয়ে গিয়েছিল সবকিছু।

হত্যার পূর্বে যে তাদের নির্যাতন করা হয়েছিল, সে তথ্যও বের হয়ে আসে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সাময়িকী নিউজ উইকের সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের রচিত নিবন্ধ থেকে জানা যায় যে, নিহত শহিদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ভাঙ্গায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

আপডেট সময় : ০১:৫৯:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ওয়াহিদুজ জামান, ক্রাইম রিপোর্টার ফরিদপুর 

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন,সহকারী কমিশনার ভূমি মেশকাতুল জান্নাত রাবেয়া,থানা অফিসার ইনচার্জ মো. মোকসেদুর রহমানের,নির্বাচন অফিসার মো. হাচেন উদ্দিন,বিএনপির সভাপতি আলহাজ খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম,বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান পান্না,ভাঙ্গা উপজেলা বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুর রহমান মোতালেব মিয়া,জমির আলী সরকার,সাংবাদিক মজিবুর রহমান মুন্সী,দৈনিক প্রলয় পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা করেন । ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের শেষলগ্নে পুরো দেশের মানুষ যখন চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মেতে ওঠে বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞে। বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে বাঙালিকে মেধাশূন্য করার এ নৃশংস নিধনযজ্ঞ সেদিন গোটা জাতিসহ পুরো বিশ্বকেই হতবিহ্বল করে দিয়েছিল। এর ২ দিনের মাথায় ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানি বাহিনী। এর মধ্যদিয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে অভ্যুদয় ঘটে বাংলাদেশের।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে ঘাতকচক্র কেবল ঢাকা শহরেই প্রায় দেড়শ বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার কৃতী মানুষকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে। সান্ধ্য আইনের মধ্যে সেই রাতে তালিকা ধরে ধরে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী ও পদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় নিস্তব্ধ ভূতুড়ে অন্ধকারে।

পরদিন সকালে ঢাকার মিরপুরের ডোবা-নালা ও রায়েরবাজার ইটখোলাতে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায় অনেক নিথর দেহ। কারও শরীর বুলেটবিদ্ধ, কারও অমানুষিক নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত। হাত পেছনে বেঁধে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নাড়িভুঁড়িও বের করে ফেলা হয়েছে অনেকের। স্বাধীনতার ঊষালগ্নে উন্মুখ মানুষ স্বজন হারানোর সেই কালরাত্রির কথা জানতে পেরে শিউরে উঠেছিল। স্থবির হয়ে গিয়েছিল সবকিছু।

হত্যার পূর্বে যে তাদের নির্যাতন করা হয়েছিল, সে তথ্যও বের হয়ে আসে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সাময়িকী নিউজ উইকের সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের রচিত নিবন্ধ থেকে জানা যায় যে, নিহত শহিদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন।