ঢাকা ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টঙ্গীতে খুনের মামলার বাদীর বাড়ীতে হামলা

প্রলয় ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:৫১:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৯৭ বার পড়া হয়েছে

আনোয়ার হোসেন, গাজীপুর

গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে খুনের মামলার বাদীর বাড়িতে আসামী পক্ষের লোকজন হামলা চালিয়ে মামলা প্রত্যাহারের করতে হুমকী প্রদান করে। গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারী) দুপুরে মহানগরীর টঙ্গী পশ্চিম থানার মাছিমপুর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ সংবাদ পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এছাড়াও তদন্তে পুলিশ গাফিলতি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মামলার তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অনাস্থা প্রকাশ করে তদন্তের দায়িত্ব সিআইডি বা পিবিআইতে স্থানান্তরের জন্য পুলিশের আইজিপি বরাবরে আবেদন করেছেন নিহতের স্বজনরা। গত ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারী ভোররাতে মিলগেট লাল মসজিদ বস্তির একটি গ্যারেজের সামনে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মাছিমপুর এলাকার লাল মসজিদ বস্তির মৃত শেরেকুল @ নুরুজ্জামান মিয়ার ছেলে শাহ আলী(৩০)কে মাথাসহ পুরো শরীর জখম হয়ে গুরুতর আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত শাহ আলীকে উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এঘটনায় নিহতের বোন মোসাঃ হালিমা বাদী হয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় ১৫(১)২৪ নং মামলাটি দায়ের করে। এছাড়াও ২০১৫ সালে ছাত্রলীগ নেতা ইব্রাহিম সানি ও তার লোকজন নিহতের চাচাত ভাই মঙ্গলকে হত্যা করেছিল।

নিহতের বোন মামলার বাদী বলেন, নিহত শাহ আলী ও তার স্ত্রী কাপড় বিক্রি করত। দীর্ঘ দিন যাবত অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবসা, গার্মেন্টসের পুরাতন মালামাল, বস্তির জায়গা জমি দখল নিয়ে নিহতের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। বাসা থেকে ডেকে নিয়ে শাহ আলীকে হত্যা করে হত্যাকারীরা নিজেরাই পুলিশকে সংবাদ দিয়েছে। মামলাটি ১ম পর্যায়ে এসআই খন্দকার ফরিদ মামলা তদন্ত কালে গাফিলতি করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলাটি পরবর্তীতে তদন্তের জন্য জিএমপি টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি (তদন্ত)জাকির হোসেনকে কর্তৃপক্ষ তদন্তের দায়িত্ব ভার প্রদান করেন। উনিও কিছুদিন আগে বদলী হয়েছেন। বর্তমানে মামলাটি এসআই শরীফ তদন্ত করছেন। কিন্তু প্রকৃত আসামী গ্রেফতার ও মামলার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের কোন চেষ্টা বা তৎপরতা নেই।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই পুলিশ নিষ্ক্রিয়। সেই সুযোগে আসামীরা বাদীর বাড়ীতে হামলা করে। এঘটনায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে নিহতের বোন থানায় সাধারণ ডায়েরী করে। কিন্তু পুলিশ নিহতের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা প্রদানে কোন ব্যবস্থা নেয় নি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খুনের মামলার আসামীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ও প্রভাবশালী। যার কারণে নিহতের পরিবার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচার না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আসামীদের বিরূদ্ধে মাছিমপুর নিশাত বস্তিসহ আশপাশে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ, পানি ও জায়গা দখলের অভিযোগ পুরানো। বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হলেও স্থানীয় প্রশাসনের অলৌখিক কারণে ব্যবস্থা নিতে অনীহা রয়েছে। এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শরীফ জানান, হত্যা মামলার বাদী আসামীদের বিরূদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

নিহতের পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের টঙ্গী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মেহেদী হাসান দ্বীপুর কাছে যোগাযোগ করলে উনি জানান, পুলিশকে এখন কেউ মানে না। পুলিশের যতটুকু সামর্থ্য ততটুকুই কাজ করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

টঙ্গীতে খুনের মামলার বাদীর বাড়ীতে হামলা

আপডেট সময় : ০৭:৫১:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫

আনোয়ার হোসেন, গাজীপুর

গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে খুনের মামলার বাদীর বাড়িতে আসামী পক্ষের লোকজন হামলা চালিয়ে মামলা প্রত্যাহারের করতে হুমকী প্রদান করে। গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারী) দুপুরে মহানগরীর টঙ্গী পশ্চিম থানার মাছিমপুর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ সংবাদ পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এছাড়াও তদন্তে পুলিশ গাফিলতি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মামলার তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অনাস্থা প্রকাশ করে তদন্তের দায়িত্ব সিআইডি বা পিবিআইতে স্থানান্তরের জন্য পুলিশের আইজিপি বরাবরে আবেদন করেছেন নিহতের স্বজনরা। গত ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারী ভোররাতে মিলগেট লাল মসজিদ বস্তির একটি গ্যারেজের সামনে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মাছিমপুর এলাকার লাল মসজিদ বস্তির মৃত শেরেকুল @ নুরুজ্জামান মিয়ার ছেলে শাহ আলী(৩০)কে মাথাসহ পুরো শরীর জখম হয়ে গুরুতর আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত শাহ আলীকে উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এঘটনায় নিহতের বোন মোসাঃ হালিমা বাদী হয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় ১৫(১)২৪ নং মামলাটি দায়ের করে। এছাড়াও ২০১৫ সালে ছাত্রলীগ নেতা ইব্রাহিম সানি ও তার লোকজন নিহতের চাচাত ভাই মঙ্গলকে হত্যা করেছিল।

নিহতের বোন মামলার বাদী বলেন, নিহত শাহ আলী ও তার স্ত্রী কাপড় বিক্রি করত। দীর্ঘ দিন যাবত অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবসা, গার্মেন্টসের পুরাতন মালামাল, বস্তির জায়গা জমি দখল নিয়ে নিহতের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। বাসা থেকে ডেকে নিয়ে শাহ আলীকে হত্যা করে হত্যাকারীরা নিজেরাই পুলিশকে সংবাদ দিয়েছে। মামলাটি ১ম পর্যায়ে এসআই খন্দকার ফরিদ মামলা তদন্ত কালে গাফিলতি করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলাটি পরবর্তীতে তদন্তের জন্য জিএমপি টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি (তদন্ত)জাকির হোসেনকে কর্তৃপক্ষ তদন্তের দায়িত্ব ভার প্রদান করেন। উনিও কিছুদিন আগে বদলী হয়েছেন। বর্তমানে মামলাটি এসআই শরীফ তদন্ত করছেন। কিন্তু প্রকৃত আসামী গ্রেফতার ও মামলার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের কোন চেষ্টা বা তৎপরতা নেই।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই পুলিশ নিষ্ক্রিয়। সেই সুযোগে আসামীরা বাদীর বাড়ীতে হামলা করে। এঘটনায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে নিহতের বোন থানায় সাধারণ ডায়েরী করে। কিন্তু পুলিশ নিহতের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা প্রদানে কোন ব্যবস্থা নেয় নি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খুনের মামলার আসামীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ও প্রভাবশালী। যার কারণে নিহতের পরিবার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচার না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আসামীদের বিরূদ্ধে মাছিমপুর নিশাত বস্তিসহ আশপাশে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ, পানি ও জায়গা দখলের অভিযোগ পুরানো। বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হলেও স্থানীয় প্রশাসনের অলৌখিক কারণে ব্যবস্থা নিতে অনীহা রয়েছে। এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শরীফ জানান, হত্যা মামলার বাদী আসামীদের বিরূদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

নিহতের পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের টঙ্গী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মেহেদী হাসান দ্বীপুর কাছে যোগাযোগ করলে উনি জানান, পুলিশকে এখন কেউ মানে না। পুলিশের যতটুকু সামর্থ্য ততটুকুই কাজ করবে।