বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:২৬ অপরাহ্ন
প্রলয় ডেস্ক
আগামী মাসে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন হবে। এ সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশের কথার ‘টোন’ আলাদা হবে।
সম্মেলন সামনে রেখে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সচিবালয়ে প্রস্তুতিমূলক আন্তমন্ত্রণালয় সভা হয়। এ সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
১৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লিতে ৫৫তম বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ সম্মেলনের মূল আলোচ্য বিষয়গুলো সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় নাগরিক, বিএসএফ ও অন্য যারা সীমান্তে হত্যা করছে, এটি যেভাবে হোক, তাদের বন্ধ করতে হবে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অনেক সময় দেখা গেছে, বিএসএফ কর্তৃক এবং তাদের দুষ্কৃতকারীরা সীমান্ত থেকে কৃষিকাজ করার সময় বাংলাদেশের নাগরিক ধরে নিয়ে যায়। এটি যেন তারা না করে, সে জন্য তাদের বলা হবে।
অনেক সময় সীমান্ত লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে পারাপারের চেষ্টা করা হয় বলে উল্লেখ করেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, এই বিষয়গুলো যেন না হয়, সে বিষয়ে আলোচনা হবে। ভারতীয়রা অনেক সময় সীমান্ত এলাকায় ফেনসিডিলসহ মাদকের কারখানা তৈরি করে। যদিও বলে, ফেনসিডিল ওষুধ হিসেবে বানায়। কিন্তু বানায় মাদকের জন্য। এটি বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যায়। এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। সীমান্তে ১৫০ গজের ভেতরে কতগুলো কাজ, যেগুলো করার নিয়ম নেই, এগুলো অনেক সময় তারা করতে চায়। আর কিছু কাজ আছে, যেগুলো করতে হলে দুই দেশের অনুমোদন লাগে। এই অনুমতি নিয়ে যেন তারা করে, এটা নিয়েও আলোচনা হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় গণমাধ্যম যে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে, এটি কীভাবে তারা বন্ধ করতে পারে, সে ব্যাপারেও আলোচনা হবে। এ ছাড়া নদীর পানির যেন সুষম বণ্টন হয়, পানি চুক্তির বাস্তবায়ন ও কীভাবে দুই দেশের সম্পর্ক আরও ভালো হয়, পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি পায়—এগুলোর ব্যাপারে আলোচনা হবে।
ভারতের সঙ্গে চারটি চুক্তি হওয়ার কথা উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ২০১০ সালে যে চুক্তিটি হয়েছে, সেটির ভেতরে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। চুক্তিটি কিছুটা অসম। এ জন্য আলোচনা হবে, এ চুক্তি এভাবে হয়নি, এভাবে হওয়া দরকার ছিল। এগুলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আগেও জানানো হয়েছে।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক সীমান্ত পর্যায়ে আগের বিভিন্ন বৈঠক কাভার করার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে প্রশ্ন করেন, ‘এখানে আলোচনার বিষয়গুলোতে নতুনত্ব কিছু দেখছি না। নতুনত্ব কী আছে?’
জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘নতুনত্ব কোনটা চাচ্ছেন? এখন নতুনত্ব হলো, ওইটা, আগে যেভাবে কথাটা বলত, এবারের কথার টোনটা আলাদা হবে।’
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে) মো. খোদা বখস চৌধুরী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।