বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৪১ অপরাহ্ন
আলি হায়দার, কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জ ভৈরবে স্বামীকে আইফোন কিনে দিতে বান্ধবীর বাসায় স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় স্বামী, বয়ফ্রেন্ডসহ আটক হয়েছেন এক নারী।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আদালতে মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানোর হয় ।
আটককৃতরা হলেন, ভৈরব পৌর শহরের জগন্নাথপুর আওয়াল কান্দা এলাকার ইব্রাহিম মিয়ার মেয়ে সুমাইয়া বেগম (১৮) ও তার স্বামী রুহান মিয়া (২০)। এছাড়া পৌর শহরের দক্ষিণপাড়া এলাকার ভাড়াটিয়া রাসেল মিয়ার ছেলে ও সুমাইয়ার বয়ফ্রেন্ড শহরের ঘোড়াকান্দা এলাকার মৃত আবেদ আলীর ছেলে আক্তার হোসেন (১৯)।
জানা যায়, সুমাইয়া গত শুক্রবার (২৫ জানুয়ারি) ভৈরব শহরের নিউ টাউন এলাকার বান্ধবী নিধীর বাড়িতে বেড়াতে যায়। পরে বান্ধবী নিধীর মামী বান্টি বেগমের ঘর থেকে স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে, তা দিয়ে স্বামীকে একটি আইফোন এবং নিজেও একটি স্মার্টফোন কিনেন । বয়ফ্রেন্ডকে চোরাই স্বর্ণের একটি চেইন উপহার দেন সুমাইয়া। অবশেষে এ চাঞ্চল্যকর চুরি ঘটনা ধরা পড়ে পুলিশের জালে।
২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকালে পৌর শহরের দক্ষিণপাড়া এলাকা ও ঘোড়াকান্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে বান্ধবী ও তার স্বামীসহ বয়ফ্রেন্ডকে আটক করে ভৈরব থানা পুলিশ।
ভৈরব থানা পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২৫ জানুয়ারি শনিবার নিধির মামী বান্টি বেগম ৬ ভরি ১১ আনা স্বর্ণালংকার চুরি হয়েছে মর্মে ভৈরব থানায় একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগ পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ তদন্ত পূর্বক ও ভৈরব নিউ টাউন এলাকার বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মঙ্গলবার ২৮ জানুয়ারি বিকালে নিধীর বান্ধবী সুমাইয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চুরির কথা স্বীকার করে সুমাইয়া। পরে সুমাইয়ার দেওয়া তথ্যমতে স্বামী রুহান ও তার বয়ফ্রেন্ড আক্তার হোসেনকে আটক করে থানায় আনা হয়।
বান্টি বেগম বলেন, আমাদের বাড়িতে এক সময় ভাড়া থাকতো সুমাইয়া ও তার পরিবার। ২৫ জানুয়ারি আমার বড় বোনের মেয়ে নিধীর বান্ধবী সুমাইয়া আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসে সঙ্গোপনে ঘরে প্রবেশ করে। সে সময় আমি ও আমার মা ঘরে ছিলাম না। তখন সুমাইয়া আমাদের ঘরে আলমারি থেকে ১৪ আনা ওজনের ১টি স্বর্ণের চেইন, ১ ভরি ওজনের ১টি স্বর্ণের ব্রেসলেট, ৩ আনা ওজনের ১টি স্বর্ণের আংটি, ৫ আনা ওজনের ১টি স্বর্ণের আংটি, ৩.৫ ভরি ওজনের ১টি স্বর্ণের হার, ২টি স্বর্ণের কানের দুলসহ সর্বমোট ৬ ভরি ১১ আনা স্বর্ণ নিয়ে যায়। আমার চুরি হওয়ার মালামাল পেতেই আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি।
ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, সুমাইয়া নিধির মামীর বাসায় একসময় ভাড়া থাকতেন। সেই সুবাদে তাদের পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয়। ২৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় সুমাইয়া বান্ধবী নিধীর বাড়িতে বেড়াতে যান। তখন নিধীর মামী ও নানু বাড়িতে না থাকার সুযোগে তাদের বাসার প্রায় ৭ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি করে। এরমধ্যে সুমাইয়ার বয়ফ্রেন্ডের কাছ থেকে ১৪ আনা ওজনের স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে এবং সুমাইয়ার কাছ থেকে কিছু টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। কিছু স্বর্ণালঙ্কার দিয়ে সুমাইয়া তার স্বামীর জন্য আইফোন ও নিজের জন্য একটি স্মার্টফোন কিনেন। এ ঘটনায় তাদের গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার রাতে আদালতের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।